Advertisement
২৩ মার্চ ২০২৩

শহরে এখনও ব্রাত্য নয় ডিম

চৈত্রের রোদকে থোড়াই কেয়ার। শিয়ালদহ উড়ালপুলের ধারে গরম ডিমসেদ্ধ পর পর দু’টো মুখে পুরলেন দেবাশিস সাহা। রবিবার দুপুরের সস্তায় পুষ্টিকর আহার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার তালিমকেন্দ্রের শিক্ষকের ক্লাস থাকে ছুটির দিনেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৭
Share: Save:

চৈত্রের রোদকে থোড়াই কেয়ার। শিয়ালদহ উড়ালপুলের ধারে গরম ডিমসেদ্ধ পর পর দু’টো মুখে পুরলেন দেবাশিস সাহা। রবিবার দুপুরের সস্তায় পুষ্টিকর আহার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার তালিমকেন্দ্রের শিক্ষকের ক্লাস থাকে ছুটির দিনেও। টিফিনে বাঁধা ডিমের ডায়েট। গুজবেও ছন্দপতন নেই। হেসে বললেন, ‘‘এখনও বলছি ডিম খান, সুস্থ থাকুন!’’

Advertisement

এখনও প্রমাণসাপেক্ষ প্লাস্টিক ডিম-জুজুর ছায়া ছাপ ফেলতে পারেনি, তা বলা যাচ্ছে না। অভিযোগের জেরে পার্ক সার্কাসের পরে হালিশহরেও দুই ডিম-কারবারিকে পুলিশ ধরেছে। তবে গুজবের ভয়ে কলকাতা ডিম ছাড়তে নারাজ। বিতর্কের নিষ্পত্তি ঘটাতে নমুনা সংগ্রহ করেছে যে সরকারি ল্যাবরেটরি, তার কাছে বেলগাছিয়া বাজারে তুমুল ডিম-আবেগ বহমান। অশোক ষষ্ঠীতে নিরামিষ হলেও হাঁসের ডিম দেখে লোভ সামলাতে পারলেন না কাশীনাথ পাল। ‘‘ডিমের ডালনা খেয়ে টেনে ঘুমোব!’’— বলে আধ ডজন ভরে দিতে বললেন কাশীবাবু। চার দশকের কারবারি উত্তম দত্তের থেকে ডিম নিলেন তসলিমা বিবি। ‘‘কীসের গুজব, রুটির সঙ্গে ডিম ভাজা না-পেলে ছোট ছেলে বাড়ি মাথায় করবে!’’

নিউ গড়িয়া স্টেশন লাগোয়া বাজার বা বিজয়গড় শ্রী কলোনিতেও ছবিটা আলাদা নয়। ‘‘বিরিয়ানি-এগরোলের দোকান এখনও ডিম নিচ্ছে।’’— বললেন পঙ্কজ সাহা। বিজয়গড়ের রাজীব তালুকদারের হিসেব, ‘‘বড়জোর পাঁচ পার্সেন্ট বিক্রি ডাউন! গরমে লোকে ডিম কমই খায়।’’ দামও মোটামুটি থিতু। তবে ডিমবিমুখ না-হলেও প্লাস্টিক ডিমের একবারটি দর্শন লাভের কৌতূহল কম যাচ্ছে না।

‘‘এ তো দুনিয়ার নবম আশ্চর্য রে, পেলে একটা দেখাস্‌ ভাই!’’— হাতিবাগান বাজারের নুর ইসলামের ঠেকে আবদার পাড়ার দেবাশিস নানের। গিন্নি শ্বেতা কাঞ্জিলাল হাসছেন, ‘‘সব গালগল্প! এই সে দিন প্লাস্টিক বাঁধাকপির কথা শুনলুম, এখন প্লাস্টিক ডিমের কিস্‌সা!’’ বেলগাছিয়ার পরীক্ষাগারের প্রাক্তন কর্তাও বলছেন, ‘‘দেখা যাক, পরীক্ষায় কী হয়! চাকরি জীবনে এমন শুনিনি!’’

Advertisement

ডিমের খোলা পুড়লে কী হয়, তাও দেখেছে অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী হাতিবাগান বাজার। চোরা আশঙ্কা খানিক রয়েছে। ‘‘যা দিনকাল, ডিম খেয়ে পেট গড়বড় হলেও এখন রোগী বিখ্যাত’’— ফিচেল হাসিও ছড়িয়ে পড়ছে রবিবাসরীয় বাজারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.