রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং দেবিকা মুখোপাধ্যায়
সংগঠন এখনও পোক্ত হয়নি। তবু বিধানসভা ভোটের এক বছর আগে কলকাতার পুরভোটকেই মহড়া হিসেবে দেখতে চায় বিজেপি। তাই স্রোতসঙ্কুল নদীতে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে টলিউডের মুখেই ভরসা তাঁদের! সেই লক্ষ্যেই যেমন তড়িঘড়ি অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা হয়েছে, তেমনই অন্য এক ওয়ার্ডে প্রার্থী বদলে অভিনেত্রী দেবিকা মুখোপাধ্যায়কে দাঁড় করাল বিজেপি।
রূপার অবশ্য আগাম প্রস্তুতি ছিল না পুরভোটের জন্য। তিনি ব্যস্ত ছিলেন তাঁর পূর্বনির্ধারিত শু্যটিং কর্মসূচি নিয়েই। ভেবেছিলেন, নতুন যোগ দেওয়া দলের ‘মুখ’ হিসেবে প্রচারে অংশ নেবেন। কিন্তু দলের ভাবনা ছিল অন্য। তাঁরা ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে রূপার নাম ঠিক করে ফেলেছেন, তা ঘোষণাও হয়েছে দিল্লির সদর দফতর থেকে। পরিস্থিতির এমন গেরো যে, নাম ঘোষণার পরে এখনও দলের দফতরে হাজির হতে পারেননি ‘দ্রৌপদী’!
এই মুহূর্তে রূপার শু্যটিং চলছে বসিরহাটে। ‘প্যাকআপে’র পরে বৃহস্পতিবার রাতে রূপার মন্তব্য, “দল যা দায়িত্ব দিয়েছে, পালন করবই। হারা-জেতা নিয়ে এখন ভাবছি না!” তাঁর ওয়ার্ড যে শক্ত ময়দান এবং তৃণমূলের বর্তমান কাউন্সিলর দেবব্রত (মলয়) মজুমদার (যিনি বিজেপি থেকেই তৃণমূলে এসেছিলেন) যে ‘জাঁদরেল’ প্রতিদ্বন্দ্বী, তা অজানা নয় রূপার। তিনি বলছেন, “প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে জানি। যা বিশ্বাস করি, যে কাজ করতে চাই, সবই মানুষের কাছে গিয়ে বলব।”
পুর-ময়দানে নেমে ‘বলা’র প্রস্তুতি অবশ্য হঠাত্ করেই নিতে হচ্ছে রূপাকে। বিজেপি সূত্রে খবর, ঠাসা শু্যটিং-এর দিন ঠিক করা ছিল তাঁর। বসিরহাট থেকে ফিরেই অপর্ণা সেনের একটি ছবির কাজ শুরু করার কথা দেওয়া ছিল। এখন রাজনৈতিক কেরিয়ারের চাপে সে সব পিছনে ঠেলতে হবে রূপাকে! এক বিজেপি নেতার কথায়, “কাজটা একটু কঠিন। কিন্তু দল মনে করেছে, পুরভোটে রূপাকে কাজে লাগানো দরকার। তাই প্রার্থী করা হয়েছে। ফল যা-ই হোক, ভবিষ্যতে তাঁর আরও দায়িত্ব থাকবে।”
সে দায়িত্ব রূপা কেমন ভাবে সামলাবেন, তা ভবিষ্যতই বলবে। আপাতত, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী, অভিনেত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোকাবিলা করতে এক অভিনেত্রীকে সামনে আনতে হচ্ছে বিজেপি-কে। প্রকাশিত প্রার্থী তালিকায় ওই ওয়ার্ডে সনিয়া বসুর নাম ছিল। সেখানে প্রার্থী হিসেবে এ দিনই অভিনেত্রী দেবিকার নাম জানানো হয়েছে।
বস্তুত, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই শিবিরেরই মর্যাদা রক্ষার লড়াই। অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হন। তাঁর স্ত্রী অনন্যা অবশ্য তৃণমূল ছাড়েননি। সেই অনন্যাকে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করে তৃণমূল আসলে বিজেপি-র ‘ঘরে’ হানা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনন্যার বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভাবে সনিয়াকে প্রার্থী করলেও পরে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝেছেন, অনন্যার বিরুদ্ধে আর এক অভিনেত্রীই বেশি জুতসই হবেন। কলকাতার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পিঙ্কি রায়কেও বদলে তৃণমূল থেকে আসা স্বপন চক্রবর্তীকে দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। দলীয় সূত্রের খবর, ওই ওয়ার্ডের কর্মীদের প্রার্থী হিসাবে পিঙ্কিকে পছন্দ হয়নি। তা জেনে পিঙ্কিই সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy