Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Sandip Dutta

সন্দীপ দত্ত প্রয়াত, বাংলা লিটল ম্যাগাজ়িন হারাল এক পরম বন্ধুকে

সিটি স্কুলের শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সন্দীপ। তবে সমকাল এবং ভাবীকাল তাঁকে মনে রাখবে লিটল ম্যাগাজ়িন আন্দোলনের এক পরম হিতাকাঙ্ক্ষী হিসাবেই।

Sandip Dutta, famous for his work for Bengali little magazine passed away in Kolkata

প্রয়াত সন্দীপ দত্ত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ২১:২১
Share: Save:

মারা গেলেন সাহিত্যিক, গ্রন্থাগারিক তথা লিটল ম্যাগাজ়িন সংগ্রাহক সন্দীপ দত্ত। বয়স হয়েছিল ৭২। দীর্ঘদিন ধরেই মধুমেহর সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। মাস দুয়েক আগে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে বাইপাসের ধারে অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয় তাঁকে। সেখানেই বুধবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় তাঁর। বেশ কয়েক দিন ধরেই তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল। গ্যাংগ্রিন হওয়ার কারণে একটি পা বাদ দিতে হয় তাঁর।

কলেজ স্ট্রিট সংলগ্ন মির্জাপুরের সিটি স্কুলের শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সন্দীপ। তবে সমকাল এবং ভাবীকাল তাঁকে মনে রাখবে লিটল ম্যাগাজ়িন আন্দোলনের এক পরম হিতাকাঙ্ক্ষী হিসাবেই। সাধারণ গ্রন্থাগারের লিটল ম্যাগাজ়িনের প্রতি অশ্রদ্ধা এবং অবহেলা দেখে সন্দীপ নিজের বা়ড়িতেই তৈরি করেছিলেন গ্রন্থাগার। নাম দিয়েছিলেন ‘কলকাতা লিটল ম্যাগাজ়িন লাইব্রেরি অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’।

মাত্র ২১ বছর বয়সে স্কটিশ চার্চ কলেজে বাংলা নিয়ে স্নাতক স্তরের পাঠ নেওয়ার সুবাদে এক দিন আলিপুরের জাতীয় গ্রন্থাগারে গিয়ে সন্দীপ দেখেন, নিতান্ত অনাদরে ধুলোর মধ্যে পড়ে আছে বেশ কয়েকটি ছোট পত্রিকা। তখন থেকেই লিটল ম্যাগাজ়িন সংরক্ষণের পরিকল্পনা করেন তিনি। ১৯৭৮ সালে সেই স্বপ্ন পূরণ হয় তাঁর। কলকাতার টেমার লেনে নিজের বাড়িতেই দু’কামরার ঘরে শুরু হয় তাঁর স্বপ্নের গ্রন্থাগার। ১৯৭৯ সাল থেকে এই গ্রন্থাগারের সদস্যপদ দেওয়া শুরু হয়। বর্তমানে এই গ্রন্থাগারের প্রায় ১৫০ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছেন।

বাংলা সাহিত্য নিয়ে যাঁরা নীরবে কাজ করেন, তাঁদের কাছে সন্দীপ এক পরিচিত নাম। তাঁদের অনেকেই স্মৃতি হাতড়ে জানান, ১৯৭৬ সালের পর থেকে প্রায় প্রতিটি বইমেলায় লিটল ম্যাগাজ়িনের প্যাভেলিয়নে দেখা যেত তাঁকে। তাঁর গ্রন্থাগারে সেকালের ‘সবুজ পত্র’ থেকে ‘কৃত্তিবাস’ বা আজকের প্রায় সব রকমের লিটল ম্যাগাজিনই স্থান পেয়েছিল। সন্দীপের প্রয়াণের পর আনন্দবাদাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয় দীর্ঘ কাল ধরে প্রকাশিত হয়ে আসা ‘প্রতিবিম্ব’ পত্রিকার সম্পাদক প্রশান্ত মাজীর সঙ্গে। তিনি বলেন, “সন্দীপবাবুর মৃত্যু বাংলা লিটল ম্যাগাজ়িনের কাছে এক অপূরণীয় ক্ষতি। এমন অনেক দুষ্প্রাপ্য সংগ্রহ ওঁর কাছে ছিল, যা একেবারে অকল্পনীয়।” সন্দীপ নিজেও একাধিক গল্প, প্রবন্ধ এবং কবিতা সংকলনের স্রষ্টা। করে গিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যের পুনঃপ্রকাশনার কাজও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE