বাস দুর্ঘটনায় আহত যশ আগরওয়াল। বুধবার, মানিকতলায়। —নিজস্ব চিত্র
একটি স্কুলবাস ও সরকারি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হল পাঁচ স্কুলপড়ুয়া। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকুড়গাছি আন্ডারপাসের কাছে, মানিকতলা মেন রোডে। এই ঘটনায় পুলিশ ওই সরকারি বাসের চালক শিবু শীলকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর বাড়ি গাইঘাটায়। দু’টি বাসই আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। উল্টোডাঙা এসবিএসটিসি ডিপো থেকে ছেড়ে সরকারি বাসটি বাবুঘাট যাচ্ছিল। সেটিতে তখন কোনও যাত্রী ছিল না। বাবুঘাট পৌঁছে সেখান থেকে তীর্থযাত্রীদের গঙ্গাসাগরে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বাসটির। পুলিশ জানিয়েছে, ২৩ জন পড়ুয়া নিয়ে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বাস ই এম বাইপাসের দিকে যাচ্ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, বেপরোয়া গতিতে চলা সরকারি বাসটি একটি গাড়িকে ওভারটেক করে স্কুলবাসটিতে মুখোমুখি ধাক্কা মারে। এই ঘটনায় দু’টি বাসের সামনের কাচ ভেঙে যায়। রাস্তার উপরে কাচের টুকরো পড়ে থাকায় বেশ কিছু ক্ষণ যানজট হয় ওই এলাকায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার পরে স্কুলবাসে থাকা পড়ুয়ারা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। সকলেই অল্পবিস্তর আঘাত পায়। তবে তাদের মধ্যে পাঁচ জনের আঘাত তুলনায় বেশি হওয়ায় অন্য গাড়িতে করে তাদের নিকটবর্তী মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে চার জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আহত ছাত্রদের মূলত কপালে ও ঠোঁটে আঘাত লেগেছে। আয়ুষ পন্ডিত নামে পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রের একটি দাঁত ভেঙে যাওয়ায় বাড়ির লোকেরা তাকে ই এম বাইপাসের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসার পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন ঘটনার পরে কিছু ছাত্রকে অন্য বাসে স্কুলে পাঠানো হয়। তবে আহতেরা-সহ বেশ কিছু পড়ুয়া আর স্কুলে যায়নি।
এই স্কুলবাসটিকেই ধাক্কা মারে একটি সরকারি বাস। —নিজস্ব চিত্র
দুর্ঘটনায় আহত, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র যশ আগরওয়াল জানায়, ‘‘বাসের পিছনের দিকে বসেছিলাম। হঠাৎ করে একটা বিকট আওয়াজ হল। আমাদের বাসটি জোরে ব্রেক কষায় হুড়মুড়িয়ে সামনে ছিটকে পড়ি। ঠোঁট কেটে গিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। মিনিট দশেক পরে পুলিশ এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’ যশের বাবা অমরেন্দ্র আগরওয়াল বলেন, ‘‘স্কুলের প্রি-বোর্ড পরীক্ষা এ দিন অনেক ছাত্র স্কুলে যায়নি। না হলে বড়সড় দুর্ঘটনা হতে পারত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি বাসের চালকদের তো আরও সাবধানে গাড়ি চালানো উচিত।’’ অমরেন্দ্রবাবু জানান, দুর্ঘটনার জেরে তাঁর ছেলে এখনও আতঙ্কে রয়েছে। ঠিক মতো কথা বলতে পারছে না সে। আয়ুষের বাবা অভিজিৎ পন্ডিতের অভিযোগ, ‘‘বেপরোয়া বাসচালকদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’ পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘গাড়ি চালানোয় নিয়মভঙ্গের জন্য সরকারি বাস চালকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy