পরিদর্শনে মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। শনিবার। — বিশ্বনাথ বণিক
কোথাও নর্দমার জল উপচে পড়চে। কোথাও বা পরিত্যক্ত থার্মোকলের পাত্রে বহু দিনের জমা জল। কিছু কিছু জায়গায় আবাসনের কার্নিসও জলে টইটম্বুর। আর এই জমা জলেই থিকথিক করছে ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু বহনকারী মশার লার্ভা। কোথাও কোথাও রয়ে গিয়েছে আবর্জনাও। এই দৃশ্য কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চত্বরের। খোদ হাসপাতালই ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়ার আঁতুড়ঘর। এর পরেই, পুর-কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জমা জল অপসারণ করা ছাড়াও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘এনআরএসে অভিযান চালিয়ে আমরা ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গি রোগের জীবাণু বহনকারী মশার লার্ভা পেয়েছি। সেগুলি নষ্টও করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এই ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানানো হয়েছে।’’
বর্ষায় শহরে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি বাড়ে। সেই কারণেই কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে শহরের সবকটি সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল এবং অন্য প্রতিষ্ঠানেও পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর মশার লার্ভা নিধন সংক্রান্ত বিশেষ অভিযান চালায়। এ বছর বর্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুরসভার পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়েছে। এই মরসুমে অতীনবাবুর নেতৃত্বে এ দিনই ছিল প্রথম অভিযান। এতে পুরসভা ছাড়াও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পূর্ত দফতরের বাস্তুকারেরাও ছিলেন।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন এনআরএসে অভিযান চালিয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা হাসপাতাল চত্বর এবং আবাসনের মধ্যে মোট ছ’টি জায়গায় ‘এডিস ইজিপ্টাই’ এবং ‘অ্যানোফিলিস স্টিফেনসাই’ মশার লার্ভা পেয়ছেন। এই মশা থেকেই ছড়ায় যথাক্রমে ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া রোগ। হাসপাতাল চত্বরে যে সমস্ত জায়গায় মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে সেগুলি হল— লেডি ইলিয়ট হস্টেল, নার্সিং হস্টেল এবং হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আবাসনের মধ্যে কিছু কিছু জায়গা, চিকিৎসকদের জন্য নির্মিত নতুন বাড়ির পেছন দিকের একাংশ এবং ফরেন্সিক দফতরের সামনের জায়গা। এছাড়াও লিনেন স্টোর-এর ভেতরেও রয়েছে স্তূপীকৃত জঞ্জাল ও মশার লার্ভা।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুরসভা সারা বছরেই শহরের সব হাসপাতালে অভিযান চালায়। লার্ভা নিধনও করে। এই হাসপাতালে নিকাশির কিছু সমস্যা থাকায় জল দ্রুত বেরোতে পারে না। এতেই তৈরি হচ্ছে সমস্যা। ফলে, বর্ষার সময়ে এখানে বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন।
হাসপাতালের সুপার মনিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতালের নিকাশির কিছু সমস্যা থাকায় জল জমে থাকে। জমা জলে পুরসভা মশার লার্ভা পেয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমরা ইতিমধ্যেই নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতিতে সংস্কার শুরু করেছি। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার সহায়তায় ফের হাসপাতালে মশার লার্ভা মারার অভিযান চালাব।’’
অতীনবাবু জানান, আগামী ৩১ জুলাই এনআরএস চত্বরে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর ছাড়াও, নিকাশি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতলের কর্মীরা ফের মশার লার্ভা নিধনের বিশেষ অভিযান শুরু করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy