নয়াদিল্লি স্টেশনে কুম্ভমেলার যাত্রীদের হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর মতো ঘটনা এড়াতে এ বার সক্রিয় হলেন পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। প্রয়াগরাজগামী ট্রেনগুলিতে পুণ্যার্থীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য সোমবার ১১ দফার নির্দেশিকা জারি করেছেন শিয়ালদহ ডিভিশনের ডিআরএম। সেগুলি হল—
১. কুম্ভগামী প্রতিটি ট্রেনের জন্য পূর্বঘোষিত, সুনির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম বরাদ্দ থাকবে।
২. এক বার রেলের পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে প্রয়াগরাজগামী কোনও ট্রেনের প্ল্যাটফর্মের নম্বর ঘোষণার পর কোনও অবস্থাতেই তার বদল হবে না।
৩. ‘ন্যাশনাল ট্রেন এনকোয়ারি সিস্টেম’-এ মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনগুলির আগমন/ প্রস্থানের সময়, প্ল্যাটফর্ম নম্বর সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পরিবেশন করা হবে।
৪. কোন ট্রেন কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে সে বিষয়ে ‘ডিসপ্লে বোর্ডে’ সঠিক তথ্য দেওয়া হবে। তাতে কোনও পরিবর্তন হবে না।
৫. অনিয়ন্ত্রিত ভাবে অসংরক্ষিত শ্রেণির টিকিট বিক্রি করা যাবে না। হঠাৎ করে কোনও ট্রেনের অসংরক্ষিত টিকিট বিক্রি অত্যন্ত বেড়ে গেলে, তা বন্ধ করতে হবে।
৬. আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি (কুম্ভমেলার শেষ দিন) পর্যন্ত প্রয়াগরাজ, বারাণসী, পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় (মোগলসরাই)-গামী বিভিন্ন ট্রেনের (শিয়ালদহ - অজমের, শিয়ালদহ-আনন্দবিহার সম্পর্ক ক্রান্তি, শিয়ালদহ-বিকানের দুরন্ত, শিয়ালদহ রাজধানী, শিয়ালদহ-জম্মু তাওয়াই হামসফর এক্সপ্রেস ইত্যাদি) স্লিপার ক্লাসের টিকিট বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
৭. বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত আরপিএফ বাহিনীকে সিসিটিভির মাধ্যমে শিয়ালদহ স্টেশনের প্রতিটি অংশে সর্বক্ষণ নজরদারি চালিয়ে যাওয়া হবে।
৮. প্রয়াগরাজ ও আশপাশের স্টেশনগুলিতে যে সব ট্রেন যাবে, তার প্রতিটি ছাড়ার আগে যথেষ্ট পরিমাণ আরপিএফ অফিসার ও জওয়ান মোতায়েন থাকবেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা দেখাবেন তাঁরা।
৯. জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহার করার জন্য শিয়ালদহ এবং কলকাতা স্টেশনে আরও ব্যাটারিচালিত গাড়ি, হুইলচেয়ার এবং স্ট্রেচার মজুত রাখা হবে।
১০. পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক এবং প্যারামেডিক্যাল কর্মীর পাশাপাশি শিয়ালদহ স্টেশনে ২৪ ঘণ্টা রাখা থাকবে অ্যাম্বুল্যান্স।
১১. প্ল্যাটফর্ম-সহ গোটা স্টেশন চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় কর্মীর সংস্থানের দায়িত্বে থাকবেন স্টেশন ম্যানেজার।
প্রসঙ্গত, নয়াদিল্লি স্টেশনে শনিবার রাতে মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের ভিড় অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গিয়েছিল। রাত ১০টা নাগাদ সেখানে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ১৮ জন। অভিযোগ, পর পর দু’টি ট্রেন ‘লেট’ করেছিল। ফলে স্টেশনে ভিড় বেড়ে গিয়েছিল। তৃতীয় ট্রেন আসার ঘোষণা হতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। অভিযোগ, ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ট্রেন ১৬ নম্বরে আসবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। ট্রেন ধরার হুড়োহুড়িতে অনেকে পড়ে যান। বিপুল ভিড় সামলাতে ব্যর্থ হন কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার পর রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার পরেই পরিষেবা উন্নত করতে সক্রিয় হলেন শিয়ালদহ কর্তৃপক্ষ।