পুরনো দুষ্কৃতীরা সল্টলেকের পিছু ছাড়ছে না। উপরন্তু সল্টলেকের নতুন বিপদ ভবঘুরের দল। না আছে তাদের কোনও ঠিকানা, না আছে মোবাইল। ফলে তাদের সম্পর্কে তথ্য যোগাড়ে হিমসিম খাওয়ার মতো অবস্থা।
পর পর চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই ৬ জন ভবঘুরেকে গ্রেফতার করেছে সল্টলেক পুলিশ। সঙ্গে পুরনো দুই দুষ্কৃতীকেও চুরির ঘটনায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মোট ৭টি চুরির কিনারা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। তদন্তে নেমে পুলিশ উদ্ধার করেছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ২০টি মোবাইল, ২টি ল্যাপটপ ও ১টি ট্যাব, গয়না ও পুরনো মুদ্রা।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে সল্টলেক পুলিশ এই তথ্য জানায়। পাশাপাশি বাসিন্দাদের কাছে পুলিশের আবেদন, ভবঘুরে দেখে সতর্ক হন। সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলে পুলিশকে খবর দিন। প্রশ্ন উঠেছে, কেন ভবঘুরেদের উপর নজর রাখা যাচ্ছে না। কেনই বা অপরাধের আগে পুলিশের কাছে আগাম তথ্য থাকছে না।
বিধাননগরের এডিসিপি দেবাশিস ধরের দাবি, এই ধরণের ভবঘুরেদের কোনও স্থায়ী বাসস্থান নেই, মোবাইল নেই। গ্রেফতার হলেও জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বেরোনোর পরেও তাদের নজরদারি করা মুশকিলজনক। পুলিশের দাবি, সল্টলেকের বিভিন্ন চুরির ঘটনায় ধৃতেরা জেরায় স্বীকার করেছে, সল্টলেকের বিভিন্ন এলাকার ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে যে সব বাড়ি ফাঁকা নজরে পড়ে, সেখানেই তারা চুরি করেছে। এবং যে সব সামগ্রী সহজে পকেটে পুরে ফেলা যায়, তেমন সামগ্রীই তারা চুরি করে।
পুলিশের দাবি, চুরি যাওয়া সামগ্রী কোনও নির্দিষ্ট জায়গাতে বিক্রি করেনি ধৃতেরা। যখন যেমন জায়গায় পেয়েছে বিক্রি করেছে। পুলিশের দাবি, তাঁরা নজরদারি চালাচ্ছেন, কিন্তু বাসিন্দাদেরও সহযোগিতার প্রয়োজন। সেখানেই সেই পুরনো সমস্যা ফিরে ফিরে আসছে। তা হল পুলিশ ও বাসিন্দাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব।
পুলিশ কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, সল্টলেকের পরিকাঠামো বিবেচনায় রেখে সিসি টিভির নজরদারির প্রস্তাব রেখেছিল কমিশনারেট। বিভিন্ন আবাসন, ব্লক থেকে শুরু করে সরকারি অফিসগুলিতেও। কিন্তু প্রস্তাবে সম্মত হলেও কাজের কাজ হয়নি। তবু আরও একবার পুলিশ প্রশাসন সিসি টিভির বসানোর প্রস্তাব দিতে চলেছে ব্লক কমিটি থেকে সরকারি অফিসগুলতেও।
পুলিশের দাবি, সিসি টিভি নজরদারিতে ইতিমধ্যে সাফল্য এসেছে। পুলিশের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছিল ৯ নম্বর ওয়ার্ড। কিন্তু ওই টুকুই। বাকি সল্টলেক সেই তিমিরেই। বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের কর্মকর্তা কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘নজদারির কাজ পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সুরক্ষার প্রশ্নে বাসিন্দাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।’’
বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুলিশের প্রস্তাব ভাল। কিন্তু কেন তাতে সাড়া মিলছে না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ব্লক বা আবাসন কমিটিরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। তবুও পুলিশের তরফে প্রস্তাব নিয়ে স্থানীয় ব্লক বা আবাসন কমিটি কিংবা ওয়ার্ড কমিটিকে একযোগে কাজ করার প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy