Advertisement
E-Paper

অষ্টমীতে শুরু পরের বছরের শিল্পী বাছাই

ওঁরা কলকাতার পুজোর থিম শিল্পী। কারও ঝুলিতে একাধিক পুরস্কার জমা পড়েছে। আবার কেউ লাগাতার পুরস্কার জেতার পরে এ বার শূন্য ঝুলিতে। কেউ ১০ মাস, কেউ বা ৮ মাস ব্যস্ত ছিলেন বরাত পাওয়া পুজোর রূপায়ণে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০০
শান্তি: অষ্টমীর সকালে পুষ্পাঞ্জলি। বৃহস্পতিবার, লেক টাউনের একটি মণ্ডপে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

শান্তি: অষ্টমীর সকালে পুষ্পাঞ্জলি। বৃহস্পতিবার, লেক টাউনের একটি মণ্ডপে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

মাঝখানে দুটো দিন বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ওঁরা। কারও ফোন ধরেননি। কারও ফোন ছিল ‘সুইচড অফ’। কারও আবার সাইলেন্ট। অষ্টমীর সকাল থেকে অবশ্য খুলে গিয়েছে অনেক ফোনই। সারা দিন ধরে ব্যস্ত থেকেছেন তাঁরা।

ওঁরা কলকাতার পুজোর থিম শিল্পী। কারও ঝুলিতে একাধিক পুরস্কার জমা পড়েছে। আবার কেউ লাগাতার পুরস্কার জেতার পরে এ বার শূন্য ঝুলিতে। কেউ ১০ মাস, কেউ বা ৮ মাস ব্যস্ত ছিলেন বরাত পাওয়া পুজোর রূপায়ণে। পঞ্চমী থেকে বিভিন্ন পুরস্কার ঘোষণার পর থেকে কারও বাড়িতে এসেছে মিষ্টি। কেউ আবার হতাশায় দরজায় খিল দিয়েছেন।

অষ্টমীর সকালে এক অপেক্ষাকৃত তরুণ শিল্পীর ফোন ব্যস্ত। পরিবার নিয়ে তিনি গিয়েছেন দক্ষিণ ভারতের এক শহরে। এ বার একাধিক পুজোর পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে। তাই শহরের অনেক পুজোর উদ্যোক্তাই তাঁকে আগামী বছরের জন্য চান। ওই শিল্পী কাউকেই এ দিন কথা দিতে চাননি। এক অভিজ্ঞ শিল্পী মাঝখানে পুরস্কারের বাজার থেকে প্রায় হারিয়েই গিয়েছিলেন। গত বছরের পরে এ বারও তাঁর একটি মণ্ডপ ও প্রতিমা বেশ কিছু প্রথম সারির পুরস্কার জিতে নিয়েছে। ওই শিল্পীর কপাল ফিরেছে ফের। অষ্টমীর সকাল থেকে তাঁর কাছে অন্তত ১০টি ফোন গিয়েছে বিভিন্ন পুজো কমিটির তরফে। অমায়িক ওই শিল্পী কাউকেই নিরাশ করেননি।

উত্তর কলকাতার এক তরুণ শিল্পী আদতে প্রতিমা গড়েন। প্রতিমা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাত পাকিয়েছেন থিমের মণ্ডপ গড়ার কাজেও। প্রতিমার জন্য বহু পুরস্কার পেলেও মণ্ডপের জন্য স্বীকৃতি মিলছিল না এত দিন। এ বার তিনি সফল। বাড়ির কাছেই একটি পুজোয় তাঁর প্রতিমা এবং মণ্ডপ, দুটোই সুপার হিট। মুখচোরা ওই শিল্পীর বাড়িতে ইতিমধ্যেই মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন একাধিক উদ্যোক্তা।

কলকাতার পুজোয় যে সব শিল্পী সব থেকে বেশি পুরস্কার জিতেছেন, তাঁদের এক জন সামনের পুজোয় কোনও কাজ করবেন না বলে ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন। তবে তাঁকে দিয়ে যাঁরা পুজো করাবেন বলে ঠিকই করে নিয়েছিলেন, তাঁরা হাল ছাড়েননি। এক পুজো উদ্যোক্তার কথায়, ‘‘অনেক শিল্পীই তো এ রকম ভাবে অবসর নেওয়ার কথা বলেও পরের বছর আবার ফিরে এসে পুরস্কার জিতেছেন।’’

এ রকমই আর এক শিল্পী গত দু’বছর কোনও পুজোয় ছিলেন না। তাঁকে দিয়ে সামনের বছর কাজ করানোর জন্য অষ্টমীর সকাল থেকেই উদ্যোগী হয়েছে একটি পুজো কমিটি। কমিটির সম্পাদকের দাবি, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ওঁর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। ওঁকে সামনের বছর হয়তো ফের দেখা যাবে কলকাতার পুজোয়।’’ শিল্পী অবশ্য কোনও মন্তব্যে নারাজ।

এ বছরই কলকাতার পুজোয় আবির্ভাব তরুণ প্রতিমা শিল্পীটির। আর প্রথম বছরেই তাঁর গড়া দু’টি প্রতিমা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। একটি পুজো কমিটি তাঁর নাম ফলাও করে প্রচার করেছে। অন্যটিতে তাঁর নাম চাপা পড়ে গিয়েছে এক স্বনামধন্য শিল্পীর নামের নীচে। কিন্তু পুজোর বাজারে কিছুই চাপা থাকে না। তাই আগামী বছর ওই প্রতিমা শিল্পীর কপাল খুলতে চলেছে বলেই মনে করছেন অনেকে।

কোনও কোনও শিল্পী এক একটি পুজোয় টানা তিন-চার বছর ধরে কাজ করছেন। এ বার তাঁরা নতুন জায়গায় পুজোর কাজ করতে চাইছেন। আর বাজারে এটা রটে যেতেই তাঁদের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। তেমনই এক শিল্পীর ফোন গত দু’দিন ধরে বন্ধ। বৃহস্পতিবার তা খুলতেই অনুরোধ আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন ক্লাবের পক্ষ থেকে। ওই শিল্পী জানিয়েছেন, তিনি পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছেন। কালীপুজোর আগে ফিরে এসেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

Durga Puja Theme Artists Astami অষ্টমী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy