Advertisement
E-Paper

নজর নেই প্রশাসনের, দেখাল স্কুলবাস দুর্ঘটনা

সোমবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাগুইআটি পূর্ত দফতরের কার্যালয়ের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ সূত্রের খবর, একটি অটো জোড়ামন্দির মোড়ের আগে আচমকা গতি কমিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৩
হাসপাতালে স্কুলবাস দুর্ঘটনায় আহত দুই ছাত্রী। সোমবার, বাগুইআটিতে। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে স্কুলবাস দুর্ঘটনায় আহত দুই ছাত্রী। সোমবার, বাগুইআটিতে। নিজস্ব চিত্র

ছাত্রীদের স্কুলবাসে ঠাসাঠাসি ভিড়। সকলের বসার সুযোগ নেই। অনেকে দাঁড়িয়ে। বাগুইআটি সংলগ্ন ভিআইপি রোডে আয়তনে ছোট বাস ৪৬ জন ছাত্রীকে নিয়ে বিমানবন্দরের দিকে যাওয়ার সময়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়ল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছাত্রীদের চোট গুরুতর না হলেও এই ধরনের বাসে এত জন ছাত্রীর যাতায়াত কতটা নিরাপদ, ফের সেই প্রশ্ন উঠে গেল।

সোমবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাগুইআটি পূর্ত দফতরের কার্যালয়ের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ সূত্রের খবর, একটি অটো জোড়ামন্দির মোড়ের আগে আচমকা গতি কমিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। পিছনেই ছিল তারাতলা-মধ্যমগ্রাম রুটের একটি বাস। দুর্ঘটনা এড়াতে চালক আচমকা ব্রেক কষে বাস দাঁড় করিয়ে দেন। তার পিছনেই ছিল লেকটাউন গার্লস স্কুলের ছাত্রীদের বাসটি। এ ক্ষেত্রে চালক গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সামনে থাকা বেসরকারি বাসের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারেন। যার জেরে একে অপরের উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বাসের ভিতরে থাকা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীরা। চিনার পার্কের বাসিন্দা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী অগ্নিমিত্রা বিশ্বাসের মাথা ফেটে রক্ত বেরোতে থাকে। আরও অনেকের মাথা, বুকে, মুখে চোট লাগে। ভয় পেয়ে কাঁদতে থাকে ছাত্রীরা। ঘটনাস্থলের কাছেই বাগুইআটি ট্র্যাফিক গার্ড। সিভিক ভলান্টিয়ার এবং পুলিশকর্মীরা দ্রুত পৌঁছে ছাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ জানিয়েছে, ৪৬ জন ছাত্রীর মধ্যে দু’জনের চোট লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও হাসপাতাল সূত্রের খবর, মোট ৭ জন ছাত্রীকে নিয়ে আসা হয়েছিল। সকলকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

অগ্নিমিত্রা বলে, ‘‘বাসে সকলে বসতে পারে না। রোজই অনেকে দাঁড়িয়ে যায়।’’ এখানেই নিরাপত্তার বিষয়টি বড় হয়ে উঠেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শ্রবণা চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের কোনও বাস নেই। অভিভাবকেরা উদ্যোগী হয়ে বাসটি ভাড়া করেছিলেন।’’ বেসরকারি সংস্থার কাছে চুক্তির ভিত্তিতে বাসটি যে ওই ছাত্রীদের নিয়ে যাতায়াত করে তা স্বীকার করেছেন অভিভাবকদের একাংশ। কিন্তু স্কুলবাসে ছাত্রীরা এ ভাবে যাতায়াত করবে কেন? এ দিন অন্তত এই প্রশ্নের সদুত্তর পাওয়া যায়নি। আজ, মঙ্গলবার অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের বৈঠক রয়েছে বলে খবর। প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবে রোজ ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীরা যাতায়াত করলেও কেন সুরক্ষার দিকে কারও নজর ছিল না? এক অভিভাবকের কথায়, উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এই ধরনের ছোট বাস ব্যবহার করতে হচ্ছে।

পুলিশের দাবি, একাধিক বার বাস মালিক ও চালকদের সতর্ক করা হলেও, একাংশের হুঁশ ফিরছে না। ভবিষ্যতে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হবে। বাস এবং বাসচালক বিমল রাউতকে আটক করে পুলিশ। যদিও বিমলবাবুর দাবি, ‘‘সামনের বাস আচমকা দাঁড়িয়ে পড়ে। আমি জোরে চালাচ্ছিলাম না।’’ স্থানীয়দের দাবি, স্কুলবাসের সামনের অংশ দুমড়ে গিয়েছে। গতি বেশি না থাকলে বাসটি এ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হত না। চালকের বাঁ দিকের আসনে চার জন ছাত্রী বসেছিল বলে জানিয়েছেন চালক।

শহরের একটি স্কুলগাড়ি সংগঠনের কর্মকর্তা অঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলগাড়িতে অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী নেওয়ার সুযোগ থাকে না। কিন্তু স্কুলবাসে সেই সুযোগ থাকে। তাই বহু ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা দাঁড়িয়েই যাতায়াত করছে। স্কুলগাড়িগুলির ক্ষেত্রে যেমন ভাবে সরকারি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে স্কুলবাসের ক্ষেত্রেও প্রশাসনের তেমনই কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।’’

যদিও স্কুলবাস অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তাকে ফোন করা হলেও তাঁকে যোগাযোগ করা যায়নি।

injured Baguihati bus crash school bus accident bus accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy