Advertisement
০২ মে ২০২৪
21st July TMC Rally

একুশের সভার পরেই প্রকাশ্যে নিগ্রহ, হুমকির একাধিক নালিশ 

ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা, আক্রান্ত মহিলা এ দিন জানান, তিনি মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষক। কিছু দিন আগেই ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফোন করে বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদ করেছিলেন।

An image of TMC meeting

একুশে জুলাইয়ের সভা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৩ ০৭:১৩
Share: Save:

তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের সভার পরের দিনই একাধিক গন্ডগোলের অভিযোগ সামনে এসেছে কলকাতায়। কোথাও সভা থেকে ফিরে দলবল নিয়ে এক মহিলার বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর এবং নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। থানায় অভিযোগ জানিয়ে ফেরার সময়েও ঘিরে ধরে মারধর করে ‘মণিপুরের মতো পরিণতি হবে’ বলে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। কোথাও আবার একুশে জুলাইয়ের সভায় যেতে রাজি না হওয়ায় হাজরা-টালিগঞ্জ রুটের এক অটোচালককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে অটো ইউনিয়নেরই লোকজনের বিরুদ্ধে। আহত ব্যক্তি এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি। তবে কোনও ঘটনাতেই পুলিশ শনিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি। লেক থানা এলাকার ঘটনায় অভিযুক্তেরাও থানায় পাল্টা অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম এ দিন বলেন, ‘‘এই সব ঘটনায় যে দলেরই লোক জড়িত থাক, আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশকে বলব, কড়া হাতে ব্যবস্থা নিন।’’

ঢাকুরিয়ার আশুতোষ চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা, আক্রান্ত মহিলা এ দিন জানান, তিনি মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষক। কিছু দিন আগেই ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফোন করে বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদ করেছিলেন। যে বাড়িতে তাঁরা থাকেন, তার উপরেই ওই নির্মাণকাজ চলছিল। কাজটি করছিলেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। মেয়রকে জানানোয় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, ২১ তারিখ তৃণমূলের সভা সেরে ফিরে ওই নেতাই দলবল নিয়ে তাঁর বাড়িতে চড়াও হন। লেক থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান তাঁরা। কিন্তু সেখান থেকে ফেরার পরেও ঘিরে ধরে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পরে পুলিশ বিষয়টি মিটমাট করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এ দিন বিষয়টি জানাজানি হতে ফের তাঁদের বাড়িতে লোকজন চড়াও হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। মহিলা অবশ্য বলেন, ‘‘এঁরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। আমরা ভয়ে আছি।’’

অন্য ঘটনায় আহত অটোচালকের নাম রাজু হালদার। বছর সাতাশের রাজুর বাড়ি চারু মার্কেট থানা এলাকার বস্তিতে। টালিগঞ্জে তাঁদের একটি পানের দোকান রয়েছে। সেখানে দু’বেলা বসেন রাজুর বাবা ভানু ও মা ঝর্না। রাজুর দাদা বাবু হালদার পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর ভাই সক্রিয় বিজেপি কর্মী। বেশ কয়েক দিন ধরেই ২১ জুলাইয়ের সভায়যাওয়ার জন্য রাজুকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল অটো ইউনিয়নের তরফে। শুক্রবারও তাঁকে সভায় যেতে জোর করা হয়। রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয়। কিন্তু রাজুর মা ঝর্না এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘ছেলে বিজেপি করে জানি। তবে, সেই কারণেই মারামারি হয়েছে কি না, জানি না।’’ টালিগঞ্জ-হাজরা রুটের অটো ইউনিয়নের নেতা রবীন বিজলীর যদিও দাবি, ‘‘অকারণ রাজনীতিররং লাগানো হচ্ছে। কাউকেইকোথাও যেতে চাপ দেওয়া হয়নি। আমরাই তো একুশের মিছিলে যাইনি।’’ রবীনের দাবি, শুক্রবার দুপুরে ২১ জুলাই উপলক্ষেই অটো স্ট্যান্ডে খাওয়াদাওয়া ছিল। সেই জন্য রুট কয়েক ঘণ্টা বন্ধও ছিল। সেখানে খান রাজুও। পরে দলবল নিয়ে রাজু মদ্যপান করছিলেন। রুটের একসদস্য মদ্যপান করতে নিষেধ করেন। তা নিয়েই গন্ডগোল। শুক্রবার রাতেই এ নিয়ে রিজেন্ট পার্ক থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি-র একদল কর্মী-সমর্থক। রিজেন্ট পার্ক থানার তদন্তকারী আধিকারিক যদিও জানান, দু’পক্ষের বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর পরে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

21st July TMC Rally Ekushe July TMC Complaints
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE