Advertisement
E-Paper

প্রতারণার ফাঁদে সাংসদের গাড়িচালক থেকে পুলিশ

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, উত্তর নিমতা পাইকপাড়ার বাসিন্দা বিষ্ণু ধর নিজের এক বছরের পুরনো স্কুটারটি বিক্রি করার জন্য অনলাইন সাইটে বিজ্ঞাপন দেন গত মার্চে, লকডাউনের শুরুতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০২:২১
স্কুটার বিক্রির বিজ্ঞাপন (বাঁ দিকে) দেওয়া হয়েছিল এমনই ভুয়ো পরিচয়পত্র (ডান দিকে) দিয়ে। নিজস্ব চিত্র

স্কুটার বিক্রির বিজ্ঞাপন (বাঁ দিকে) দেওয়া হয়েছিল এমনই ভুয়ো পরিচয়পত্র (ডান দিকে) দিয়ে। নিজস্ব চিত্র

গত মার্চে জিনিসপত্র বিক্রির এক অনলাইন সাইটে স্কুটার বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। স্কুটারটি বিক্রি হয়ে যাওয়ার পরে সেই বিজ্ঞাপন মুছেও দেন তিনি। কিন্তু মাসখানেক বাদে গত শুক্রবার রাতে ওই ব্যক্তির বাড়িতে হানা দিল পুলিশ। অভিযোগ, ওই বিজ্ঞাপন দেখিয়ে স্কুটার বিক্রির নামে এখনও টাকা তোলা হচ্ছে। রাজ্যের অভিনেত্রী সাংসদের গাড়িচালক থেকে পুলিশকর্মী মিলিয়ে সাত-আট জন এই অভিযোগ দায়ের করেছেন পুলিশের কাছে! ওই ব্যক্তি রবিবার বললেন, “এ ভাবে ফাঁসতে হবে ভাবিনি। পুলিশকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলেছি। গোটাটাই প্রতারণাচক্রের কাজ। আমায় অকারণ হেনস্থা করা হচ্ছে।”

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, উত্তর নিমতা পাইকপাড়ার বাসিন্দা বিষ্ণু ধর নিজের এক বছরের পুরনো স্কুটারটি বিক্রি করার জন্য অনলাইন সাইটে বিজ্ঞাপন দেন গত মার্চে, লকডাউনের শুরুতে। সেই সূত্রে বেলঘরিয়ার বাসিন্দা সুশান্ত দে নামে এক ব্যক্তিকে গত মে মাসের ২৯ তারিখ ৪৪ হাজার টাকায় তিনি স্কুটারটি বিক্রি করে দেন। ওই অনলাইন সাইট থেকে বিজ্ঞাপনটিও এর পরে মুছে দেন তিনি।

এর কয়েক দিন পর থেকেই বিষ্ণুবাবুর ফোনে স্কুটারটি কিনতে চেয়ে নতুন করে ফোন আসা শুরু হয় বলে তাঁর দাবি। ফোনে অনেকেই গেঞ্জির কারখানার মালিক বিষ্ণুবাবুকে সিআইএসএফ কর্মীও সম্বোধন করেন। বিষ্ণুবাবু বলেন, “কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। কেউ ফোন করে বলতেন স্কুটারটা নিতে চান, কেউ বলতেন আট হাজার টাকা তিনি পাঠিয়ে দেওয়ার পরেও কেন গাড়ি দিচ্ছি না! এ রকমই এক জন তাঁর দেওয়া অগ্রিম পাঁচ হাজার টাকার রশিদের পাশাপাশি একটি বিজ্ঞাপনের কিছু স্ক্রিনশট পাঠান। হুবহু আমার দেওয়া বিজ্ঞাপন। আমি বিজ্ঞাপনে আমার আধার কার্ড, স্কুটারের ব্লুবুক, গাড়ির কিছু ছবি দিয়েছিলাম। সে সব তো ছিলই, সঙ্গে দেখি আমার নামেই অন্য কার একটা ছবি দিয়ে সিআইএসএফ কর্মীর ভুয়ো আইডেন্টিটি কার্ড বানিয়ে তারও ছবি দেওয়া হয়েছে।”

তাঁর দাবি, ভুয়ো ব্যক্তি প্রথমে কথা চালাতেন। টাকা নেওয়ার পরে যেই তিনি আর ফোন ধরতেন না তখন যাঁদের হুঁশ ফিরত তাঁরা আমার আধার কার্ডে দেওয়া মোবাইল নম্বর দেখে তাতে ফোন করতেন। এর পরেই গত ২৬ জুন নিমতা থানায় বিষয়টি জানিয়ে একটি জেনারেল ডায়েরি করেন বিষ্ণুবাবু। বিষ্ণুবাবুর অভিযোগ, “আমি অভিযোগ করার পরে পুলিশ সে ভাবে গুরুত্ব দেয়নি। হঠাৎ সাংসদ অভিনেত্রীর গাড়ির চালক অভিযোগ করার পরে আমায় ডেকে পাঠানো হয়। ওই গাড়িচালক নাকি স্কুটারটির জন্য ২১০০ টাকা দিয়েছেন। পুলিশ আমায় সেই টাকা মিটিয়ে দিতে বলে প্রথমে। আমি রাজি না হওয়ায় যিনি গাড়িটি কিনেছেন তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়।”

নিমতা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক এ দিন বলেন, “আমাদের অনুমান, এর পিছনে বড় প্রতারণাচক্র কাজ করছে। প্রথমে বিজ্ঞাপনের ছবি ডাউনলোড করে রাখে এই প্রতারকেরা। এর পরে যিনি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন, তিনি সেটি মুছে দেওয়ার পরে সক্রিয় হয় ওই চক্র। এর পরে সেই সামগ্রী বিক্রির নামে শুরু হয় টাকা তোলা। এ ক্ষেত্রে সেই সামগ্রী স্কুটারটি!” পুলিশের দাবি, রাজ্য পুলিশের সাইবার শাখাগুলিকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। নিমতা থানার ওই আধিকারিক আরও বলেন, “সাংসদ নিজে ফোন করে বিষয়টি দেখতে বলেছেন। আমরা চেষ্টা করছি।”

Crime Crime Cases
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy