সিবিআইয়ের করা প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিনের আবেদন করলেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিচারভবনে জামিনের আবেদন করেন শান্তনু। আদালতে তাঁর আইনজীবী সওয়াল করেন, ইডি-র মামলায় প্রথম গ্রেফতার হন শান্তনু। ওই মামলায় জামিনের আবেদন করার পরে তড়িঘড়ি সিবিআই শান্তনুকে জেরা করতে শুরু করে এবং তাঁকে গ্রেফতার করে। কিন্তু গুণধর খাঁড়া নামে যে ব্যক্তি শান্তনুকে অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে টাকা তুলে দিয়েছেন, তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করেনি। শান্তনুর আইনজীবী বলেন, ‘‘সিবিআই ‘পিক অ্যান্ড চুজ়’ করছে।’’
পাল্টা সিবিআই শান্তনুর জামিনের বিরোধিতা করে বলে, অভিযুক্ত শাসকদলের সদস্য ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক সংযোগ রয়েছে। তিনি প্রভাবশালী। জামিন পেলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। যদিও শান্তনুর আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেলকে ‘প্রভাবশালী’ বলা চলে না। বস্তুত, টেট দুর্নীতির তদন্তে নেমে তৃতীয় চার্জশিটের সঙ্গে একটি অডিয়ো রেকর্ডিং আদালতে দিয়েছে সিবিআই। তার প্রতিলিপি আনন্দবাজার ডট কম পেয়েছে। সেখানে ‘কালীঘাটের কাকু’, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গে শান্তনুও ছিলেন বলে দাবি করা হয়।
শান্তনু অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ কোটি টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। সিবিআইয়ের দাবি, হুগলি ডিপিএসসি-তে প্রভাব ছিল তাঁর। সেই প্রভাব খাটিয়ে অনেককে বেআইনি ভাবে সুযোগ পাইয়ে দিয়েছেন। সিবিআইয়ের আরও দাবি, শান্তনু সুজয়কৃষ্ণকে টাকা দিতেন। সুজয়কৃষ্ণ শান্তনুর থেকে টাকা পেয়েছেন। সেই সুজয়কে শুধুমাত্র শারীরিক কারণে জামিন দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মামলার সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন।
আরও পড়ুন:
দুই পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর বিচারক বলেন, ‘‘অনেকরই সুজয়কৃষ্ণের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। আপনাদের চার্জশিটেই সেটা দেখা যাচ্ছে।’’ সিবিআই জানায়, মামলার অভিযুক্তেরা একই সুতোয় বাঁধা। এজেন্ট থেকে সাব-এজেন্ট, সেখান থেকে সরকারি কর্মী, অনেকে জড়িত। শান্তনুকে এখন জামিন দিলে তদন্তের ক্ষতি হবে।
সব পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পরে নির্দেশ মুলতুবি রাখেন বিচারক। আগামী ২০ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি।