ঠেলাঠেলি: সারাদিন মেট্রোয় ছিল এমনই ভিড়। নিজস্ব চিত্র
পুজোর বাকি আর তিন দিন। কিন্তু কলকাতার গর্ব মেট্রোর অসুখ আর সারছে না। কখনও দরজা বন্ধ না হওয়া, কখনও ব্রেক শ্যু আটকে যাওয়া, আবার কখনও সিগন্যাল-বিভ্রাট। নিত্য দিন গোলমালে ভুগছেন যাত্রীরা। এর পরে পুজোর ভিড় উপচে পড়লে অবস্থা কী দাঁড়াবে, তা ভেবেই আশঙ্কিত তাঁরা।
শুক্রবার সকালেও কবি সুভাষ স্টেশনের ওয়াই সাইডিংয়ে সিগন্যাল-বিভ্রাটে নাকাল হন যাত্রীরা। অফিসের ব্যস্ত সময়ে এই ঘটনায় অনেকেরই অফিস পৌঁছতে দেরি হয়েছে। শুধু সময় বেশি লাগাই নয়, দেরি করে চলায় পিছনের ১০-১২টি ট্রেন ছিল ভিড়ে ঠাসা। উপায়ান্তর না দেখে ওই ভিড়ের চাপ সহ্য করেই গন্তব্যে পৌঁছেছেন যাত্রীরা।
গত বছরও পুজোর অনেক আগে থেকে মেট্রোকে ঘষে-মেজে ঠিকঠাক করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু এ বার আর সেই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে না।
পুজোর তিন দিন আগেও ঠিক মতো চলছে না মেট্রো।
কেন এই অবস্থা? মেট্রো কর্তাদের একাংশই বলছেন, মেট্রোর কর্মসংস্কৃতি এবং রেক না পাল্টালে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। দিল্লি মেট্রো কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের পথের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ৩৩০ কিলোমিটার করে ফেলেছে। ওই দূরত্বে ট্রেন চলছে কোনও অভিযোগ ছাড়াই। অথচ, কলকাতা মেট্রো মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরত্ব চালাতে গিয়েই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। রেলপথ থেকে সিগন্যাল, রেক সব কিছুরই যেন ভেঙে পড়া অবস্থা। শুরু থেকে দীর্ঘ দিন কর্তা ও কর্মীদের একটা বড় অংশের গা-ছাড়া ভাবই এই অবস্থার পিছনে অনেকটা দায়ী। এই দায়সারা হাবভাবের জন্যই মেট্রোর পরিকাঠামো পরিবর্তন নিয়েও কেউ কখনও ভাবেননি। আসেনি নতুন রেক, বাড়েনি যাত্রাপথ। খুঁড়িয়ে চলতে গিয়ে বাড়েনি আয়ও। আর আয় না বাড়ায় রেল বোর্ড থেকে মন্ত্রক, সবারই নজর থেকে সরে গিয়েছে কলকাতার গর্বের মেট্রো। ফলে শেষ অবস্থায় এখন তার ‘আইসিইউ’ তে ঢোকার অপেক্ষা।
কী হয়েছিল শুক্রবার? মেট্রোর জনসংযোগ দফতর সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ কবি সুভাষ স্টেশনের ওয়াই সাইডিংয়ে একটি সিগন্যালে বিপত্তি হয়।
ফলে ট্রেনগুলিকে আগের ক্রস ওভার (ক্রসিং) দিয়ে আপ থেকে ডাউন লাইনে আনতে হয়। এর ফলে যে সময়ে ১৩টি ট্রেনকে ঘোরানো সম্ভব, সেখানে ওই বিপত্তির জেরে ১০টি ট্রেন ঘোরানো গিয়েছে। ফলে কয়েকটি ট্রেনের ২-৩ মিনিট করে দেরি হয়েছে। দুপুর সওয়া ১২টা নাগাদ অবশ্য অবস্থা স্বাভাবিক হয়। যদিও যাত্রীরা বলেছেন, সকালের ঘটনার জেরে দুপুরের পরেও মেট্রো চলাচল কিছুটা অনিয়মিত ছিল। মাঝেমধ্যেই একটি করে ট্রেন বাতিল হওয়া এবং স্টেশনে কয়েক মিনিট করে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকার সমস্যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এর জেরে উপচে পড়ে ভিড়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy