আতঙ্ক: যদি ঘাড়ে এসে প়ড়ে...। এই বিপজ্জনক বাড়ির ঠিক উল্টো দিকেই থাকেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী
রোগীর অবস্থা এখন-তখন, ডাক্তার আসতে ছ’মাস।
শহরের বেশ কিছু বাড়ির হাল এতই বিপজ্জনক যে, অঘটন ঘটতে পারে যে কোনও দিন। অথচ, সমস্যার সমাধানে পুরসভার গড়িমসি চলছেই। রাজ্যের এক মন্ত্রীর অভিজ্ঞতা তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। পাথুরিয়াঘাটায় এক বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে দু’জনের মৃত্যুর পরদিনই মুখ্যমন্ত্রী পুর-প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। ছ’মাস পেরোলেও শহরের বিপজ্জনক বাড়ি এখনও মাথা উঁচিয়েই আছে। তার স্থায়ী সমাধানে বিল্ডিং আইনে সংযোজন আনতে নতুন বিল পেশ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যেরই বিদ্যুৎমন্ত্রী, ভবানীপুরের বাসিন্দা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তাঁর বাড়ির সামনে থাকা বিপজ্জনক বাড়ির হাল দেখে। বলছেন, ‘‘মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়, এই বুঝি ভেঙে পড়বে বাড়িটা।’’
ভবানীপুরে হরিশ মুখার্জি স্ট্রিট ছাড়িয়ে রূপনারায়ণ নন্দন লেন। মিটার দশেক চওড়া। সেখানেই ওই দোতলা বাড়ি। উল্টো দিকে সপরিবার থাকেন শোভনদেববাবু। বাড়ি ভেঙে পড়ার আতঙ্ক এতটাই যে, নাতনির স্কুল যাওয়ার পথটাই পাল্টে দিয়েছেন মন্ত্রী দাদু। শুক্রবার বিধানসভায় সে কথা তুলে শোভনদেববাবু জানান, বাড়িটার হাল এতই খারাপ যে, ভয় লাগে। স্থানীয়দের তরফে পুর-প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। বিপজ্জনক নোটিসও লটকানো হয়েছে। সমাধান হয়নি।
শহর জুড়ে বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে জেরবার পুর প্রশাসন। বিল্ডিং দফতরের এক ডিজি জানান, হাজার পাঁচেক বিপজ্জনক বাড়ির মধ্যে তিন হাজারেরও বেশি বাড়ির হাল খুবই খারাপ। পাথুরিয়াঘাটা-কাণ্ডের পর শোভনদেববাবুর আতঙ্ক আরও বেড়েছে। বেশি ভয় ছোট্ট নাতনির জন্য। বললেন, ‘‘সকালে উঠে ওই বাড়ির দিকে চোখ পড়লেই হাড় হিম হয়ে যায়। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে ছেলেদেরও বলি, দেখে শুনে যাস। পারলে ওই পথ এড়াতে বলি।’’
পাথুরিয়াঘাটার দুর্ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুর-প্রশাসনকে বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করতে বলেছেন। পুরসভা বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে নতুন আইন করতে সরকারকে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, চলতি অধিবেশনে পুরসভার বিল্ডিং আইনে একটি নতুন ধারা সংযোজন করার বিল আনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy