Advertisement
E-Paper

স্কুলেই জলে ডুবে মারা গেল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতাল চত্বরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের একটি স্কুলে জলে ডুবে যায় সম্বুদ্ধ ঘোষ (৪) নামে ওই শিশুটি। স্কুলের শিক্ষিকারাই তাকে কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫০
সম্বুদ্ধ ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।

সম্বুদ্ধ ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।

দুপুরে স্কুলের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দৌড়ে দ্বিতীয় হয়েছিল সে। তার কিছু ক্ষণ পরেই স্কুলের বাসে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু ফেরা হয়নি। সন্ধ্যায় সে বাড়ি ফিরল বটে, কিন্তু নিথর হয়ে!

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতাল চত্বরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের একটি স্কুলে জলে ডুবে যায় সম্বুদ্ধ ঘোষ (৪) নামে ওই শিশুটি। স্কুলের শিক্ষিকারাই তাকে কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ দিনই এসএসকেএম হাসপাতালে ওই শিশুটির দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছে। তার বাবা-মায়ের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব এবং গাফিলতিতেই সম্বুদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির মায়ের এ দিন জন্মদিন ছিল।

আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ওই স্কুল। একশোরও বেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছে সেখানে। স্কুলটি চালায় সেনা অফিসারদের স্ত্রীদের একটি সংগঠন। সেনাকর্মীদের সন্তানের পাশাপাশি বাইরের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরাও ওই স্কুলে পড়তে পারে। বেহালার দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা শুভজিৎ ঘোষ ও সুচেতনা ঘোষের একমাত্র সন্তান সম্বুদ্ধ বছরখানেক আগে সেখানে ভর্তি হয়েছিল। সম্বুদ্ধ ভাল ভাবে কথা বলতে পারত না বলে তার পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে।

এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শিশুটির পরিবারের লোকজন। সম্বুদ্ধের বাবা শুভজিৎ বলেন, ‘‘বুধবার স্কুলের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল। তাই সম্বুদ্ধকে নিয়ে বেলা ১১টা নাগাদ আমি স্কুলে যাই। প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা ছিল মোমিনপুরের অর্ডন্যান্স ডিপোর মাঠে। তাই গাড়িতে বসিয়ে ওকে সেখানে নিয়ে যাই। সম্বুদ্ধ দৌড়ে দ্বিতীয় হয়। ফোন করে স্ত্রীকে সে খবর জানাই। তার পরে গাড়িতেই আবার মোমিনপুর থেকে সম্বুদ্ধকে স্কুলে নিয়ে আসি।’’ সম্বুদ্ধদের এক আত্মীয় রাজীব ভট্টাচার্য জানান, ওই শিশুটি স্কুলের বাসে বাড়ি ফিরত। তাই ক্লাসটিচার তাকে বাসে তুলে দেবেন জানানোয় অফিসের জন্য বেরিয়ে যান শুভজিৎ।

পুলিশ জানায়, কিছু দূর যাওয়ার পরেই স্কুল থেকে ফোন পান শুভজিৎ। তাঁকে দ্রুত স্কুলে ফিরতে বলা হয়। সেখানে ফিরে তিনি জানতে পারেন, সম্বুদ্ধকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শেষমেশ ‘হাইড্রোথেরাপি’ নামে বিশেষ এক ধরনের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত জলাধারের জল থেকে তার দেহ উদ্ধার করা হয়। কী ভাবে সবার নজর এড়িয়ে ওই শিশুটি সেখানে পৌঁছল, তা জানাতে চাননি স্কুল কর্তৃপক্ষ।

শিশুটির মৃত্যু নিয়ে স্কুলের প্রিন্সিপ্যালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, যা বলার সেনা কর্তৃপক্ষ বলবেন। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই স্কুলটি ১৯৯১ সাল থেকে চলছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা রয়েছেন। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Child Drowning Death Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy