শরীরের অবাঞ্ছিত লোম তুলতে অধিকাংশ মহিলাই ওয়্যাক্সিং করেন। সালোঁয় গেলেই শুনতে পাওয়া যায় ওয়্যাক্সিং করার সময় কোনও কোনও মহিলার চিৎকারের শব্দ। কোনও কোনও মহিলা আবার খানিকটা সাহস সঞ্চয় করে হাত-পায়ের পাশাপাশি মুখের অবাঞ্ছিত লোম তুলতেও ফেশিয়াল ওয়্যাক্সিং-ও করিয়ে থাকেন। তবে শরীরের অন্যান্য জায়গার তুলনায় মুখের ওয়্যাক্সিংয়ের এ দিক-ও দিক হলেই বিপত্তি। মুখে ওয়্যাক্সিং করানো যথেষ্ট বেদনাদায়ক ও ক্ষতিকারকও বটে।
চর্মরোগ চিকিৎসকদের মতে, মুখে কেন, শরীরের কোনও অংশেই ওয়্যাক্সিং করানো মোটেই উচিত নয়। যাঁরা নিয়মিত ওয়্যাক্সিং করান, তাঁরা অজান্তেই ত্বকের বড় ক্ষতি করে ফেলছেন। এর ফলে ত্বকে র্যাশ, জ্বালাভাব, রুক্ষতা ইত্যাদি সমস্যার পাশাপাশি অকালেই ত্বকে বার্ধ্যকের ছাপও পড়তে শুরু করে।
ওয়্যাক্সিং করালে ঠিক কী কী ক্ষতি হয়?
১) ত্বক ঠিক ইলাস্টিকের মতো, অর্থাৎ, তা টানলে প্রসারিত হয়, ছেড়ে দিলে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। ওয়্যাক্সিংয়ের সময়ে ত্বকে টান পড়ে। দীর্ঘ দিন ধরে ক্রমাগত ত্বকে টান পড়তে পড়তে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে ত্বক কুঁচকে যায়, বলিরেখা দেখা দেয়।
২) ওয়্যাক্সিংয়ের ফলে আপনার মুখে ইনগ্রোন হেয়ারের উপদ্রব বাড়তে পারে। হাত-পায়ের নানা অংশে কিছু রোম কালো হয়ে ভিতর দিকে ঢুকে থাকে, এগুলিই ইনগ্রোন হেয়ার। ইনগ্রোন হেয়ার বেশি থাকলে ত্বক অমসৃণ খসখসে দেখায়। মুখের ত্বকের কোমল ভাব বজায় রাখতে ওয়্যাক্সিং এড়িয়ে চলা উচিত।
৩) ওয়্যাক্সিং করালে মুখে র্যাশ হয়, লালচে ভাব আসে। শুধু তা-ই নয়, ওয়্যাক্সিং করার পর পর অন্য কোনও প্রসাধনী ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক পুড়েও যেতে পারে।
কারা একেবারেই ওয়্যাক্সিং করাবেন না?
চিকিৎসকদের মতে, এগজ়িমা, সোরিয়াসিসের মতো রোগ থাকলে ওয়্যাক্সিং কখনওই করানো উচিত নয়। অত্যধিক ব্রণর সমস্যা থাকলে ফেশিয়াল ওয়্যাক্সিং করানো ঠিক নয়। যাঁরা শক্তিশালী রেটিনয়েড ক্রিম বা জেল ব্যবহার করেন, তাঁদের ওয়্যাক্সিং না করাই ভাল?
তবে কী উপায়?
অবাঞ্ছিত লোম তুলতে রেজ়ারের ব্যবহার করতে পারেন। রেজ়ার দিয়ে রোম তুললে চুলের মাত্রা বেড়ে য়ায়, এই ধারণা ভুল। এ ছাড়া, লেজ়ার হেয়ার রিমুভ্যাল পদ্ধতির সাহায্যও নিতে পারেন। লেজ়ার রশ্মির সাহায্যে এ ক্ষেত্রে রোমকুপের গোড়া নষ্ট করে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিকে স্থায়ী বলেই দাবি করেন চিকিৎসকেরা। আধুনিক লেজ়ার পদ্ধতি যন্ত্রণাহীন। তবে এক বার এই ট্রিটমেন্ট করালেই সমস্যার সমাধান হয় না। বেশ কয়েকটি সিটিং করাতে হয়। কয়েক মাস ধরে এই থেরাপি চলে। এবং এই পদ্ধতি বেশ খরচসাপেক্ষও বটে।