Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Surgery

surgery: দুই হাসপাতাল ঘুরে গলা থেকে বেরোল কৌটো, সঙ্কটে শিশু

এন আর এসের মতো মেডিক্যাল কলেজে ল্যারিঙ্গোস্কোপির সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কেন তা না করেই শিশুটিকে রেফার করা হল?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২২ ০৬:১৩
Share: Save:

আট মাসের শিশুর গলায় আটকে রয়েছে গোলাকৃতি ছোট একটি কৌটো। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে এসেছে ৫০ শতাংশে। অভিযোগ, পরিকাঠামো থাকলেও সেই কৌটো বার করার চেষ্টা না করে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে রেফার করে দেওয়া হয় এসএসকেএমে। সেখানে নীল হয়ে নেতিয়ে পড়া শিশুটির তড়িঘড়ি ল্যারিঙ্গোস্কোপি করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বার করা হয় ওই কৌটো। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ শরীরে অক্সিজেন সরবরাহে মারাত্মক রকমের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় আপাতত তাকে পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিকু) ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।

প্রশ্ন হল, এন আর এসের মতো মেডিক্যাল কলেজে ল্যারিঙ্গোস্কোপির সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কেন তা না করেই শিশুটিকে রেফার করা হল? এ ছাড়াও আরও কিছু প্রশ্ন উঠেছে ওই হাসপাতালের ভূমিকায়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘক্ষণ শিশুটির শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় বড় বিপদ ঘটতে পারত। কৌটো বার করার পরে শিশুটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তাকে এখনই বিপন্মুক্ত বলছেন না চিকিৎসকেরা।

নিউ টাউনের বাসিন্দা মেঘনাথ বারুইয়ের ছেলে রীতেশ এ দিন সকালে খেলার ছলে কাজলের কৌটো খেয়ে ফেলে। পরক্ষণেই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় পরিজনেরা স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় এন আর এসে। মেঘনাথ জানান, সকাল ৯টা নাগাদ ওই হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে জরুরি বিভাগ থেকে তাঁদের পাঠানো হয় শিশু শল্য বিভাগে। সেখান থেকে ফের জরুরি বিভাগে। মেঘনাথ বলেন, ‘‘এক বিভাগ থেকে আর এক বিভাগে ঘোরার পরে পাঠানো হল নাক-কান-গলা বিভাগে। সেখানকার চিকিৎসকেরা বললেন যন্ত্র নেই, পিজিতে নিয়ে যাও। কেউ একটা অ্যাম্বুল্যান্সেরও ব্যবস্থা করে দিলেন না। শেষে হাসপাতালের এক কর্মী ব্যবস্থা করে দেন।’’ প্রশ্ন হল, যে শিশুর গলায় কৌটো আটকে রয়েছে, তাকে শিশু-শল্য বিভাগে পাঠানো হল কেন?

সূত্রের খবর, এন আর এসে যখন রীতেশকে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে গিয়েছিল ৫০ শতাংশে। প্রায় এক ঘণ্টা পরে যখন তাকে পিজি-তে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা পাওয়া যাচ্ছিল না। নীল হয়ে শিশুটি নেতিয়ে পড়েছিল। পিজির নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসকেরা শিশুটির গলার শব্দ শুনে বুঝতে পারেন, তৎক্ষণাৎ ল্যারিঙ্গোস্কোপি করতে হবে। ওই বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘শ্বাসনালীর উপরে কৌটোটি আটকে ছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা শিশুটির শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না যাওয়ায় সে নেতিয়ে পড়েছিল। কোলে করেই ওকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে ভেন্টিলেশনের নল পরানো হয়। পাম্প করা হয়। এর পরে পিকু-তে পাঠানো হয়েছে পর্যবেক্ষণের জন্য।’’

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রীতেশের ফুসফুস ও মস্তিষ্কে দীর্ঘক্ষণ পর্যাপ্ত অক্সিজেন যায়নি। তাই কৌটো বার করা গেলেও অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে অন্য সমস্যা হয়েছে কি না, সেটাই এখন দেখতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এন আর এসের মতো হাসপাতালেই কি কৌটোটি বার করা যেত না? বিষয়টি জেনে এন আর এস কর্তৃপক্ষ নাক-কান-গলা বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কাছে জানতে চান, কেন তাঁরা ল্যারিঙ্গোস্কোপি করলেন না। সুপার ইন্দিরা দে বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইএনটি বিভাগের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Surgery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE