পার্থকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই। —ফাইল চিত্র।
এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতিতে ‘মূল কাণ্ডারি’ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতির সময় তিনিই ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। শুক্রবার আদালতে ঠিক এই দাবি করে তদন্তের স্বার্থে পার্থকে নিজেদের হেফাজতে নিল সিবিআই।
বৃহস্পতিবার আলিপুর জাজেস কোর্টে সিবিআইয়ের আবেদনের পর শুক্রবার পার্থকে সশরীরে হাজির করানো হয় আদালতে। এজলাসে পার্থের ঠিক পাশেই বসেছিলেন সিবিআইয়ের গ্রেফতার হওয়া মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁদের নিজের মধ্যে কথাও বলতে দেখা যায়।
শুনানিতে পার্থের আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেল জেল হেফাজতেই রয়েছেন। তাই আলাদা করে তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করতে চাইছে কেন? এর পর সিবিআই জানায়, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় যে পাঁচ জনের নামে এফআইআর হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে তিন জনই গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের দাবি, পুরো কাণ্ডে পার্থের ভূমিকাই বড়। কারণ, ওই সময়ে তিনি ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।
পার্থের আইনজীবী দাবি করেন, সিবিআই একাধিক বার হাজিরার জন্য ডেকেছে। কিন্তু এই মামলায় এক বারও ডাকেনি। তিনি জানান, পার্থ এখন জেল হেফাজতেই রয়েছেন। তাই আলাদা করে কেন তাকে গ্রেফতার করতে চাইছে সিবিআই! প্রাক্তন মন্ত্রীকে জেলে গিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়। এর পর দেখা যায়, পার্থ উঠে এসে তাঁর আইনজীবীকে কিছু একটা বলছেন। পরে পার্থের আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলকে জামিন দিলেও সিবিআই নিজেদের কাজ করতে পারে। কারণ, ইতিমধ্যে এই একই মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে। এখন তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।
দু’পক্ষের সওয়াল জবাবের মধ্যে বিচারক প্রশ্ন করেন, পুরো দুর্নীতির ঘটনায় কি পার্থের কোনও হাত নেই বলে বলতে চান তাঁর আইনজীবী। এর প্রেক্ষিতে আইনজীবীর জবাব, ‘‘ওঁর পিছনে কিছু হলে, উনি কী করবেন? সমাজের প্রতি পার্থের দায়বদ্ধতা প্রমাণিত। সমাজের প্রতি তাঁর অবদান রয়েছে। অভিযোগও এখনও প্রমাণিত নয়। তা ছাড়া উনি কোথাও পালিয়েও যাচ্ছেন না। তা হলে গ্রেফতারের কী প্রয়োজন?’’
অন্য দিকে, আইনজীবীর মাধ্যমে কল্যাণময় বলেন, ‘‘২০১৮ সাল থেকে কোনও নিয়োগপত্রে আমি সই করিনি। আমার সই নকল করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘স্ক্যান সিগনেচার’ থাকত পর্ষদের অফিসে। সেখান থেকে তা ব্যবহার করা হয়েছে। কল্যাণময় এ-ও বলেন, ‘‘আমি কখনও কোনও নিয়োগের পরীক্ষা নিইনি। ইন্টারভিউও নিতাম না। এসএসসি মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে রেকমেন্ডেশন পাঠাত।’’ দুই পক্ষের সওয়াল জবাবের শেষে পার্থ নিজে উঠে দাঁড়িয়ে আবার জামিন চান। যদিও শেষ পর্যন্ত পার্থের জামিন খারিজ হয়ে যায়। তাঁকে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি কল্যাণময়কেও পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy