Advertisement
২৫ মার্চ ২০২৩

পুজোর ভিড় সামলাতে দ্রুত বিকল্প পথের কাজ

ভাঙা মাঝেরহাট সেতুর গা ঘেঁষে লেভেল ক্রসিং তৈরির ছাড়পত্র দেয়নি রেল। তবু রাজা সন্তোষ রায় রোড এবং হুমায়ুন কবীর সরণিকে জুড়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার।

জোরকদমে: চলছে খালে কালভার্ট তৈরির কাজ। সোমবার, মাঝেরহাটে। নিজস্ব চিত্র

জোরকদমে: চলছে খালে কালভার্ট তৈরির কাজ। সোমবার, মাঝেরহাটে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০৪
Share: Save:

ভাঙা মাঝেরহাট সেতুর গা ঘেঁষে লেভেল ক্রসিং তৈরির ছাড়পত্র দেয়নি রেল। তবু রাজা সন্তোষ রায় রোড এবং হুমায়ুন কবীর সরণিকে জুড়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেখানে ‘বেইলি ব্রিজ’ নয়, চেতলা খালের উপরে হিউম পাইপ বসিয়ে কালভার্ট তৈরি করা হবে। খালে সেই কালভার্টের ভিত গড়ার কাজও চলছে। হেঁটে যাতায়াতের কথা ভেবে আপাতত কালভার্ট তৈরি হচ্ছে। পারাপারকারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে রেললাইনের আগে ‘ড্রপ গেট’ বসানো হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ড্রপ গেটের পাশাপাশি পথচারীদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশকর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার বিভিন্ন মোড়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার রুখতে ওই ধরনের ড্রপ গেট বসানো হয়েছে। ট্র্যাফিক বুথ থেকে সুইচ টিপে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তেমনই কিছু ভাবা হচ্ছে। তবে প্রশাসনের একাংশের আশা, রাজ্যের শীর্ষ কর্তাদের দৌত্যের ফলে রেল শেষমেশ অনুমতি দিতেও পারে। সে ক্ষেত্রে ওই কালভার্ট দিয়ে ছোট গাড়িও যাতায়াত করতে পারবে। তা ছাড়া, ওই কালভার্ট টপকে একটি মাত্র লাইন (চক্র রেলের লাইন) পেরোলেই মাঝেরহাট স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে যাওয়া যাবে। যার ফলে নিত্যযাত্রীদের ট্রেন ধরতে সুবিধা হবে বলেই পুলিশের

একাংশের অনুমান।

সোমবার দেখা গেল, অনেকেই ভাঙা সেতুর কাছে নেমে মেট্রোর নির্মাণস্থলের ভিতর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লাইন পেরোচ্ছেন। তাঁদেরই এক জন, বজবজের বাসিন্দা সৌমেন দাস বললেন, ‘‘লেভেল ক্রসিং ও কালভার্ট হলে তো আমাদের সুবিধাই হবে।’’ রাস্তা তৈরির জন্য ভাঙা মাঝেরহাট সেতুর পাশে নতুন রাস্তার এক দিকে একটি পাঁচিল গড়ে তোলা হয়েছে। সে দিকে খাল রয়েছে। মাটি যাতে ধসে না যায়, তাই এমন ব্যবস্থা। হিউম পাইপ দিয়ে সেতু তৈরির জন্য খালের জল ছেঁচে ফেলার ব্যবস্থা হচ্ছে। নিউ আলিপুরের দিকে দৃষ্টিহীনদের একটি স্কুল রয়েছে। তার গা ঘেঁষে রাস্তার কাজ চলছে। ওই কাজের জন্য রাস্তার পাশের একটি পাঁচিলও ভাঙা হয়েছে।

Advertisement

কাজ চলছে আলিপুর অ্যাভিনিউ ও নিউ আলিপুর জে ব্লক হয়ে হুমায়ুন কবীর সরণির সংযোগকারী নতুন পথেরও। সেখানে ‘টু ওয়ে’ বা উভমুখী গাড়ি চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স-এর কাছ থেকে কেনা দু’টি বেইলি ব্রিজ সেখানে বসবে। সেখানে অবশ্য লেভেল ক্রসিংও তৈরি করছে পূর্ব রেল। এ দিন সেখানে গিয়ে জানা গেল, আগামী ১৪ অক্টোবর নতুন ওই পথের উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে প্রশাসনের। তাই পূর্ত দফতরের নজরদারিতে ঠিকাদার সংস্থার অধীনে প্রায় ৩৫০ জন শ্রমিককে নিয়োগ করা হয়েছে। এক-একটি বেইলি ব্রিজ ৪.২ মিটার করে চওড়া হবে। আলিপুর অ্যাভিনিউয়ের দিকে ফুটপাত কেটে রাস্তা প্রায় আট মিটার চওড়া করা হয়েছে। নিউ আলিপুর জে ব্লকের দিকে ফুটপাত কেটে রাস্তা সাত মিটার চওড়া করা হয়েছে। বেইলি ব্রিজ বসানোর জন্য ভিতে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। কিছু কিছু ঢালাইও হয়েছে। বেইলি ব্রিজের নির্মাতা গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স জানিয়েছে, তারা দিন দশেকের মধ্যেই সেতু বেঁধে দিতে পারবে।

মাঝেরহাট সেতু ভেঙে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এই নতুন রাস্তা তৈরির কথা ভেবেছে প্রশাসন। তবে এ দিনও কিন্তু নিউ আলিপুর-চেতলা এলাকায় যানজট হয়েছে। পুলিশের একাংশ বলছে, পুজো যত এগোবে, যানজটও তত বাড়বে। তা এড়িয়ে বেহালামুখী গাড়ি চলাচল কী ভাবে স্বাভাবিক রাখা যায়, সে কথা ভাবা হচ্ছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বেশ কিছু বড় পুজোর জন্য চেতলা-নিউ আলিপুরে এমনিতেই ভিড় থাকে। ফলে পুজোর দিনগুলিতে ওই এলাকার চাপ কমাতে গাড়িগুলিকে আলিপুর অ্যাভিনিউ দিয়ে বেইলি ব্রিজ পেরিয়ে সরাসরি হুমায়ুন কবীর সরণি দিয়ে বেহালার দিকে পাঠানো হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.