কলকাতায় অস্ত্র পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল দুই কারবারি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এ বারঝাড়খণ্ডের ধানবাদের মাহুদায় বেআইনি অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। লালবাজার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ড পুলিশের সাহায্য নিয়ে একটি বাড়ির আড়ালে থাকা ওই কারখানায় হানা দেন এসটিএফেরগোয়েন্দারা। তল্লাশিতে উদ্ধার হয় চারটি ৭.৬৫ এমএম পিস্তল, দশটি অর্ধসমাপ্ত ৭.৬৫ এমএম পিস্তল, সাতটি ম্যাগাজ়িন এবং ২২টি অর্ধসমাপ্ত ম্যাগাজ়িন। এছাড়া, ড্রিল মেশিন-সহ অস্ত্র তৈরিতে কাজে লাগে, এমন একাধিকযন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মোট পাঁচ জনকে।ধৃতদের নাম মুরশেদ আনসারি, মহম্মদ সাব্বির, মহম্মদ মোস্তাফা ওরফে মুশা, মহম্মদ মিস্তের এবং মহম্মদ পারভেজ। এদের মধ্যে আনসারিবাড়ির মালিক। পাশাপাশি, অস্ত্র কারখানাটির মালিকানার কিছু অংশও তার নামে আছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে মাহুদা থানায় অস্ত্র আইনেরএকাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বেআইনি ভাবে তৈরি হওয়া দেশি অস্ত্র সীমান্তপেরিয়ে কলকাতায় নিয়ে আসা নতুন নয়। এর আগেও কলকাতা পুলিশের এসটিএফ একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক জন পাচারকারীকে। পুলিশের দাবি, তাদের জেরা করে জানা যায়, ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় রীতিমতো কারখানা খুলে বেআইনি অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। যা বিনা বাধায় চলে আসছে কলকাতায়।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, গত ফেব্রুয়ারিতে রাঁচীতে হানা দিয়ে বেআইনি অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেয়েছিলেন কলকাতাপুলিশের গোয়েন্দারা। ওই ঘটনায় এক অস্ত্র কারবারি গ্রেফতার হতেই সামনে আসে মাহুদার অস্ত্র কারখানার কথা। এর পরেই এ দিনসেখানে যৌথ অভিযান চালায় ধানবাদ পুলিশের এসটিএফেরবাহিনী এবং কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে ঝোপের আড়ালে ওই অস্ত্র তৈরি করাহচ্ছিল। লালবাজারের দাবি, এই নিয়ে গত তিন বছরে বিহার ও ঝাড়খণ্ডে ১৬টি অস্ত্র কারখানার হদিস পেলেন কলকাতা পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)