Advertisement
E-Paper

জ্বরে মৃত্যু ছাত্রীর, ভাঙচুর

বুধবার রাতে কলকাতা পুরসভার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুষ্টিয়ার বাসিন্দা পূজা দাস (১৭) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৯
পূজা দাস

পূজা দাস

ফের শহরে জ্বরে মৃত্যু এবং পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটল।

বুধবার রাতে কলকাতা পুরসভার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুষ্টিয়ার বাসিন্দা পূজা দাস (১৭) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। মৃতার পরিবার জানিয়েছে, রবিবার থেকে জ্বরে ভুগছিল একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। সোমবার জ্বর কমলেও বুধবার থেকে ফের খিঁচুনি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয় পূজার। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে বুধবার পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তার রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্টে ডেঙ্গি সংক্রমণের উল্লেখ ছিল না। পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক পরিবারকে জানিয়েছিলেন প্লেটলেট ঠিক আছে, চিন্তার কারণ নেই। কিন্তু সেই রাতেই পুজা মারা যায়। ডেথ সার্টিফিকেটে যদিও মৃত্যুর কারণ হিসাবে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:সত্যিই গোপন হচ্ছে তথ্য? তদন্তে নামছে কেন্দ্র

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক কর্মী জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে পূজা দাসের পরিবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চড়াও হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জানলার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। কর্তব্যরত কর্মীরাও হেনস্থার শিকার হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাতে চোট পান এক পুলিশকর্মী। যদিও এই ঘটনায় কেউ এখনও গ্রেফতার হননি।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুরের কথা স্বীকার করেনি মৃতার পরিবার। এ দিন পূজার জেঠু কার্তিক দাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভাঙচুরের কথা শুনেছি। তবে, সেটা পুজার মৃত্যুর জন্য হয়নি। রিপোর্টে ভুল থাকায় কোনও একটি বাচ্চা মারা গিয়েছে, তাই ভাঙচুর হয়েছে। এ দিন আমাদের পরিবারের কেউ ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যায়নি।’’

ভাঙচুরের পর পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বৃহস্পতিবার, কুষ্টিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় একাধিক ব্যক্তি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। পুরসভার কাছে আক্রান্তের তথ্য থাকলেও পুরকর্তারা এলাকা পরিষ্কারের ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছেন না। আক্রান্তের বাড়ি যাওয়া বা চারপাশের পরিবেশ পর্যবেক্ষণের কাজও হয় না বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের ক্ষোভ, বৃষ্টি হলেই এলাকায় জল জমে থাকে। বারবার নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির দাবি জানানো হলেও কাউন্সিলর ব্যবস্থা নেননি। এলাকায় আতঙ্ক বাড়ছে।

যদিও এই অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর ফৈয়াজ আহমেদ খান জানান, রাজনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই এমন প্রচার চালানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘মৃতার ডেঙ্গি হয়নি। কিন্তু সিপিএম নেতারা এলাকায় গুজব ছড়াচ্ছেন। সেই গুজবের জেরেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুর করা হয়েছে। পুজোর সময়ে কয়েক দিন পুরসভার ধারাবাহিক কাজ বন্ধ ছিল। তবে কাজে খামতির অভিযোগ ঠিক নয়।’’

এলাকা পরিদর্শনে খামতি থাকার অভিযোগ জানিয়েছেন চেতলার বাসিন্দারাও। বুধবার চেতলার বাসিন্দা বছর এগারোর প্রীতম হালদার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এর পরেই পুর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দাদের একাংশ। এ দিন ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকা পরিদর্শনে ও মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। স্থানীয়েরা তাঁকে জানান, এলাকার বহু জায়গায় খোলা নর্দমা এবং জল জমে থাকার জন্য ডেঙ্গি সংক্রমণ বাড়ছে। প্রীতমের বাবা মিঠুন হালদার বলেন, ‘‘পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা প়ড়ল। ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে গেলাম। কিন্তু ভর্তি নিল না। ঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে হয়তো এমন হতো না।’’ এ দিন লকেট বলেন, ‘‘পরিবার বলছে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ডেঙ্গি হয়নি। চিকিৎসক, প্যাথোলজিস্টেরা নবান্নের দিকে তাকিয়ে আছেন। কী রিপোর্ট লিখবেন বুঝতে পারছেন না। আর কী হবে!’’

Student Hospital Fever Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy