রোহিত দাস
এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট’ (আইএসআই)-এ।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ আইএসআই-এর লাইব্রেরি ভবনের নীচ থেকে রোহিত দাস (২৩) নামে সেখানকার এক পড়ুয়াকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আইএসআই সূত্রে জানা গিয়েছে, রোহিত এম-স্ট্যাটস কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাড়ি উত্তরপাড়ার শখেরবাজার এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই বহুতলের ন’তলার ছাদ থেকে পড়েই মারাত্মক চোট পান রোহিত। তাঁদের ধারণা, ওই পড়ুয়া নিজেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তবে, মেধাবী রোহিত কেন হঠাৎ এমন কাণ্ড ঘটাতে যাবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না।
আইএসআই-এ রোহিতের বন্ধু ও সহপাঠীদের একাংশ এ দিন জানান, ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ বিকট শব্দ পেয়ে তাঁরা ছুটে বেরিয়ে যান। তার পরে ওই বহুতলের নীচে রোহিতের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। তাঁরা জানান, চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন রোহিত। মে মাসে হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি সংস্থায় ইন্টার্নশিপের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। গত ১৩ জুলাই সেই ইন্টার্নশিপ শেষ হয়। ১৪ জুলাই কলকাতায় ফিরে আসেন রোহিত। হায়দরাবাদ থেকে ফিরে এ দিনই প্রথম ইনস্টিটিউটে এসেছিলেন তিনি।
রোহিতের শিক্ষকদের একাংশ আবার এই মানসিক অবসাদ ও চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি জেনে বেশ অবাকই হয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, রোহিতের কোর্স শেষ হতে আর এক বছর মাত্র বাকি ছিল। অত্যন্ত মেধাবী বলে পরিচিত রোহিত চাকরি নিয়ে কেন অনিশ্চয়তায় ভুগবেন, সেটাই তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না।
তবে, তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার জানান, রোহিত এ দিন আইএসআই-এ আসার পরে ক্যাম্পাসের মনোবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। আইএসআই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, লাইব্রেরি ভবনের ছাদের দরজা সাধারণত বন্ধই থাকে। তাই রোহিত এ দিন কী ভাবে ওই ছাদে উঠে পড়লেন, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোহিতের মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া তাঁর পাড়ায়। ভেঙে পড়েছে পরিবার। রোহিতের বাবা বিজয় দাস বালি জুটমিলের কর্মী। মা, দিদি এবং বাবার সঙ্গে উত্তরপাড়ার একটি আবাসনে তিনি থাকতেন। এ দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ আইএসআই কর্তৃপক্ষ রোহিতের পরিবারকে খবর পাঠান। তাঁর মামা সুস্মিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এত মেধাবী একটা ছেলে কেন এমন করল, বুঝতে পারছি না।’’ রোহিতের প্রতিবেশী অতনু সরকার বলেন, ‘‘রবিবারই তো ছেলেটাকে দেখেছিলাম আবাসনের মাঠে খেলতে। পুজো কিংবা খেলা, সব কিছুতেই এগিয়ে আসত রোহিত। ও এতটা মানসিক অবসাদে ভুগছিল! কিছুতেই মানতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy