রাতের অন্ধকারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর হস্টেলের ঘরে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ। ছাত্রীর অভিযোগ, যুবক তাঁর জিনিসপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করেন। তাঁর মোবাইলও চুরি গিয়েছে। তিনি অভিযুক্তকে ধরতে গেলে তাঁকে ধাক্কা দেন বলেও অভিযোগ। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সায়ন্তনী চক্রবর্তীর অভিযোগ, এই বিষয়ে হস্টেল সুপারকে জানানো হলেও তাঁরা পদক্ষেপ করেননি। কেন তিনি জানলা খুলে রেখেছিলেন, সেই নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন রক্ষী। এই নিয়ে হস্টেলের বাইরে রবিবার বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরা। হস্টেলে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। হস্টেলের সুপার ছায়ারানী মুর্মু জানিয়েছেন, ঘটনার কথা যখন জানতে পারেন, তখন তাঁর কাছে পুলিশের ফোন নম্বর ছিল না। রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছিল শনিবার রাতে? সায়ন্তনী আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়েছেন, তাঁদের হস্টেল হল মহাত্মা গান্ধী রোডে। সেখানে তৃতীয় তলায় নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। গরম থাকার কারণে বারান্দার দরজা খুলে রেখেছিলেন। সায়ন্তনী জানিয়েছেন, ঘরে একটি ট্রলিব্যাগ পড়ে যাওয়ার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। দেখেন এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক ঘরের মধ্যে জিনিসপত্র হাতড়াচ্ছেন। তাঁর মোবাইলের হেডফোন, ব্যাগ থেকে জিনিসপত্র বার করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছেন। সায়ন্তনীর অভিযোগ, তিনি ওই যুবককে ধরতে গেলে তাঁকে ধাক্কা দেন। এর পরে ঘর থেকে পালিয়ে যান। বারান্দার পাইপ বেয়ে নীচে নেমে পালিয়ে যান তিনি। এর পরে ছাত্রী দেখেন, ঘর থেকে তাঁর মোবাইল উধাও। টাকা চুরি গিয়েছে কি না, এখনও দেখেননি।
আরও পড়ুন:
ছাত্রী জানিয়েছেন, এই ঘটনার পরেই তিনি হস্টেলের সুপারকে বিষয়টি জানান। ছাত্রীর কথায়, ‘‘হস্টেলের সুপার বলেন, এখন অভিযুক্ত চলে গিয়েছেন। কিছু করার নেই। কাল (রবিবার) সেক্রেটারিকে জানাচ্ছি।’’ এর পরে ছাত্রী নিজের ঘরে ফিরে বাকি ছাত্রীদের বিষয়টি জানান। সায়ন্তনীর অভিযোগ, সে সময়ে সুপার এসে তাঁকে জানান, তিনি এ ধরনের কিছু বলেননি। তিনি রক্ষীকে ডেকে পাঠান। রক্ষী এসে প্রশ্ন করেন, কেন বারান্দার দরজা খোলা রাখা হয়েছিল। রবিবার সকালে তিনি বিষয়টি রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের সম্পাদক অমিত রায়কে জানান। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রীর কথায়, ‘‘সম্পাদক বলেন, তুমি থানায় অভিযোগ করো। আমরা দেখছি।’’
হস্টেলের সুপার চান্দ্রেয়ী বলেন, ‘‘সব ছাত্রীকে জানলা-দরজা খুলে শুতে বারণ করেছি। অভিযুক্ত পিছনের দিক দিয়ে ঢুকেছেন। দু’টো সিসি ক্যামেরা রয়েছে।’’ এর পরে তিনি বলেন, ‘‘ওই ছাত্রী যখন রাতে আমায় বিষয়টি জানান, তখন আমার কাছে পুলিশের ফোন নম্বর ছিল না। সেক্রেটারির সঙ্গে কথা বলেছি। উনি উত্তর দেননি বলে অভিযোগ করতে দেরি হয়েছে।’’ রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। যদিও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি। হস্টেলের সামনে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।