আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে চলছে অনশন। নিজস্ব চিত্র
বারো দিন কেটে গেলেও কাটল না জট। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ টাউন ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাসপেন্ড ও বহিষ্কৃত হওয়া ছাত্রদের অনশন চলছে। এর মধ্যে চার জন ছাত্র অসুস্থও হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন অনশনকারী ছাত্রেরা। তাঁদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল নামে এক ছাত্র অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছাত্রদের দাবি, দুই বছরের জন্য সাসপেন্ড হওয়া ন’জন ছাত্র ও বরাবরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হওয়া পাঁচ জন ছাত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শনিবার জানিয়ে দিয়েছেন, আগে ছাত্রদের অনশন তুলতে হবে। তার পরে সদর্থক আলোচনা করা হবে। অনশনকারীরা এই দাবি মানতে রাজি নন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন কারা চালাবে, সেই নিয়ে ছাত্রদের দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট হয়। ওই ঘটনায় কয়েক জন ছাত্র জখমও হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলি বলেন, ‘‘কারা গোলমাল পাকিয়েছে, তা ফুটেজ দেখে আমরা জানতে পারি। এর পরে বিশ্ববিদ্যালয় একটি কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পাঁচ জনকে বহিষ্কার ও ন’জনকে দু’বছরের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’ অনীশ খান নামে এক অনশনকারী এ দিন বলেন, ‘‘আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাঁচ জন ছাত্রকে চিরতরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন। আমাদের সকলেরই শিক্ষার অধিকার আছে’’ যদিও উপাচার্যের দাবি, যাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁরা এর আগেও একাধিক বার নানা কারণে গোলমাল পাকিয়েছেন। বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি বিঘ্নিত করেছেন। পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হয়েচে। তাই সর্বসম্মতিক্রমেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গড়া কমিটি।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনেই সামিয়ানা টাঙিয়ে অনশন করছেন জনা পনেরো ছাত্র। অনশন মঞ্চেই রাখা রয়েছে একটি স্যালাইনের বোতল। অনশনকারীরা জানাচ্ছেন, এক দিকে রাতে মশার দাপট, অন্য দিকে কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টিতে তাঁরা কার্যত অসহায়। পানীয় জল পর্যন্ত ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ অনশনকারীদের। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে আমাদের প্রতিনিধিদল রোজ অনশনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে অনশন মঞ্চে যাচ্ছেন। কিন্তু ওঁরা আলোচনায় বসতেই রাজি নয়। এক জন চিকিৎসক অনশনকারী ছাত্রদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন রোজ। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ির ব্যবস্থাও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy