Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

যাদবপুর ক্যাম্পাসে ফের ডেঙ্গি, সতর্ক কলকাতাও

প্রসঙ্গত, অগস্ট মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-আবাসন এবং ছাত্রাবাসে ডেঙ্গি ছড়ায়। ১১ জন শিক্ষক এবং ৬ জন ছাত্রের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। কয়েক জনকে হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়। শিক্ষক সংগঠন অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (আবুটা)-এর নেতা গৌতম মাইতির অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনে এমন পরিস্থিতি নতুন নয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৩৬
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডেঙ্গির আতঙ্ক আর কমছেই না। কয়েক জন শিক্ষক এবং ছাত্রের পরে এ বার ওই রোগে আক্রান্ত হলেন পরীক্ষা নিয়ামক সাত্যকি ভট্টাচার্যের স্ত্রী। বুধবার সাত্যকিবাবু বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে আতঙ্কে আছি।’’ অথচ, এ দিনই কলকাতায় ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ে অন্য কথা বলেছেন মেয়র শোভন

চট্টোপাধ্যায়। ডেঙ্গি বাড়ছে কি না, জিজ্ঞাসা করা হলে মেয়রের বক্তব্য, ‘‘কলকাতায় ডেঙ্গি নিয়ে আতঙ্কের কারণ নেই। ৭-৮ বছর আগে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া নিয়ে আতঙ্ক ছিল। এখন পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর তা প্রতিরোধে অনেকটাই সফল।’’ শোভনবাবুর দাবি, পুরসভার র‌্যাপিড অ্যাকশন টিম মশাবাহিত রোগ নিবারণে দিনরাত কাজ করায় আতঙ্ক দূর হয়েছে।

প্রসঙ্গত, অগস্ট মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-আবাসন এবং ছাত্রাবাসে ডেঙ্গি ছড়ায়। ১১ জন শিক্ষক এবং ৬ জন ছাত্রের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। কয়েক জনকে হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়। শিক্ষক সংগঠন অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (আবুটা)-এর নেতা গৌতম মাইতির অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনে এমন পরিস্থিতি নতুন নয়। অভিযোগ পেয়ে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের সব ঝোপ কেটে ফেলার ব্যবস্থা করেন। ছড়ানো হয় ব্লিচিং পাউডার। যোগাযোগ করা হয় পুরসভার সঙ্গে।

এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মশা দমন অভিযানে যান মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। তিনি দেখেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ডাঁই হয়ে রয়েছে জঞ্জাল, জমে রয়েছে জল। বহু জায়গায় ফেলে রাখা পাত্রে এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভাও মিলেছিল। এর পরে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। কিন্তু ডেঙ্গির মশা যে পুরো নির্মূল হয়নি, তার প্রমাণ সাত্যকিবাবুর স্ত্রীর এই রোগে আক্রান্ত হওয়া।

যদিও পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসের ভিতরে জমা জল এবং আর্বজনা সাফের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। ওঁদের ডাকে এক বার পুরসভা তা পরিষ্কার করেছে। তখনই জানানো হয়েছিল, ক্যাম্পাসে যাতে জল না জমে দেখতে। পুরসভা ইতিমধ্যেই
সেখানে মশার লার্ভা মেরেছে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা শুনে আগেভাগেই সতর্ক হয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি ক্যাম্পাসে যাতে মশার লার্ভা না জমে, তার জন্য পুর প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বছরভর ওই কাজ পুরসভাকে দিয়ে করানোর পরিকল্পনাও নিয়েছেন।

তবে মেয়র যা-ই বলুন, যাদবপুর ক্যাম্পাসে ডেঙ্গি আতঙ্ক রয়েই গিয়েছে।
বুধবার পরীক্ষা নিয়ামক জানান, তিনি ক্যাম্পাসের আবাসনে দোতলায় থাকেন। মঙ্গলবার পুর কর্মীরা তাঁর বাড়ি এসে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করে দিয়ে গিয়েছেন। সাত্যকিবাবুর কথায়, ‘‘স্ত্রী এখন অনেকটাই সুস্থ। কিন্তু আমার শরীরও খুব ম্যাজম্যাজ করছে। অফিস থেকে বাড়ি যেতেও ভয় করে। ওখানেই তো মশার আতঙ্ক!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE