নাগেরবাজার এলাকায় বাসের তলায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর পরে বুধবার দুর্ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হল ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী। গলি থেকে রাস্তায় গাড়ির যাতায়াত, পথচারীদের নিরাপদে রাস্তা পার করানো, পথচারীদের সতর্ক করা—পথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবই হল নিয়ম মেনে। তবে নাগেরবাজার মোড় বাদ দিয়ে দমদমের বাকি অংশে চোখে পড়ল বিশৃঙ্খল যান চলাচলের সেই চেনা ছবি।
মঙ্গলবার সকালে নাগেরবাজারের ক্লাইভ হাউসের মোড়ে বাস থেকে নেমে স্কুলে ঢোকার মুখে বাসের তলায় পিষ্ট হয় দমদম ক্রাইস্টচার্চ স্কুলের ছাত্রী অনুষ্কা কর (৫)। অনুষ্কার মা সুস্মিতা করের চোখের সামনেই ঘটে পুরো ঘটনাটি। ওই বাসচালক বিশ্বনাথ মালি ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন। বুধবার সুস্মিতাদেবী বলেন, ‘‘মেয়েকে নিয়ে নামার পরে বাস চলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু একের পর এক যাত্রী নামতে থাকায় দেরি হচ্ছিল দেখে রাস্তা পার হতে যাই। এক হাতে স্কুলব্যাগ, আর এক হাতে অনুষ্কাকে ধরে রেখেছিলাম। চালকের আসনের কাছে যখন মেয়েকে নিয়ে পার হচ্ছি, তখনই আচমকা বাসের ধাক্কায় ছিটকে পড়ি। চোখের সামনে মেয়েটা শেষ হয়ে গেল।’’ এ দিন সন্তান হারানো মায়ের আক্ষেপ, ‘‘শুনলাম, স্কুলের ওখানে ট্র্যাফিক পুলিশ দিয়েছে। আগে হলে আমার মেয়েটা এ ভাবে চলে যেত না।’’ এ দিন অনুষ্কার স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার সন্ধ্যায় মোমবাতি মিছিল করেন অভিভাবকেরা এবং দমদম থানায় স্মারকলিপিও জমা দেন। তবে এ দিন সকালে দমদম রোডে যানশাসনের যা ছবি দেখা গেল, তাতে সেই দাবি অমূলকও নয়। দমদম রোডে মতিঝিল গার্লস, কিশোর ভারতী, শিক্ষা নিকেতন, কে কে হিন্দু অ্যাকাডেমির পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। এ দিন সকালে মতিঝিল গার্লস স্কুলের সামনে গিয়ে দেখা গেল, বিপদ মাথায় করেই সন্তানদের স্কুলে পৌঁছতে ছুটছেন অভিভাবকেরা। মতিঝিলের ভিতরের রাস্তা থেকে স্কুটিতে দুই মেয়েকে চাপিয়ে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। দমদম রোডে আচমকা তাঁর স্কুটির সামনে চলে এল একটি ট্যাক্সি! নাতনির হাত ধরে রাস্তা পারাপারের সময়ে মালবাহী গাড়ির সামনে চলে এলেন এক প্রবীণ মহিলা। হাত দেখিয়ে কোনও মতে বিপদ এড়ালেন।