Advertisement
E-Paper

‘আত্মঘাতী’ ছাত্রী, স্কুলের নামে নালিশ

আর পাঁচটা দিনের মতো শনিবারও পরীক্ষা দিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছিল সে। অন্য দিনের মতো সন্ধ্যায় ঠাকুরঘরেও গিয়েছিল। পরে ওই ঠাকুরঘরেই মেলে দশম শ্রেণির ছাত্রীটির ঝুলন্ত দেহ। মৃতার নাম প্রিয়া রায় (১৫)। পানিহাটির শহিদ কলোনিতে তার বাড়ি। পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যা। তবে মেয়ে কেন আত্মঘাতী হল, তা বুঝতে পারছিলেন না তার বাবা-মা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০

আর পাঁচটা দিনের মতো শনিবারও পরীক্ষা দিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছিল সে। অন্য দিনের মতো সন্ধ্যায় ঠাকুরঘরেও গিয়েছিল। পরে ওই ঠাকুরঘরেই মেলে দশম শ্রেণির ছাত্রীটির ঝুলন্ত দেহ। মৃতার নাম প্রিয়া রায় (১৫)। পানিহাটির শহিদ কলোনিতে তার বাড়ি। পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যা। তবে মেয়ে কেন আত্মঘাতী হল, তা বুঝতে পারছিলেন না তার বাবা-মা।

প্রিয়ার তিন সহপাঠী সোমবার জানায়, ওই ছাত্রী পরীক্ষায় টুকতে গিয়ে ধরা পড়ায় স্কুলে গোলমাল হয়েছিল। তার পরেই এ দিন দুপুরে খড়দহ থানায় স্কুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রিয়ার বাবা নারায়ণ রায়। তাঁর অভিযোগ, স্কুলে মেয়ের উপরে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে আর পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

নারায়ণবাবুর কেব্‌লের ব্যবসা। তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে প্রিয়া ছোট। সে পানিহাটি বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ত। মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা চলছে স্কুলে। শনিবার ছিল জীবনবিজ্ঞানের পরীক্ষা। সে দিন সাড়ে তিনটে নাগাদ সে স্কুল থেকে ফিরেছিল। অন্য দিনের তুলনায় চুপচাপও ছিল।

নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, পরীক্ষা চলছে। পড়াশোনার চাপের কারণে চুপচাপ রয়েছে। যদি জানতাম, স্কুলে ওই ঘটনা ঘটেছে, তা হলে ওকে একা ছাড়তাম না।’’ বাড়ির লোকেরা জানান, বিকেল ৫টা নাগাদ প্রিয়া ঠাকুরঘরে যায়। অনেক ক্ষণ পরে তার ঠাকুরমা প্রিয়াকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘মেয়েটা ক্যারাটে-পাগল ছিল। ওর আত্মসম্মানবোধ ছিল প্রবল। আমরা বুঝতে পারছিলাম না, কেন ও আত্মহত্যার পথ বেছে নিল।’’ তিনি জানান, সোমবার প্রিয়ার তিন সহপাঠী তাঁদের বাড়িতে এসে পরীক্ষায় নকলের বিষয়টি জানায়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রিয়ার তিন সহপাঠী জানিয়েছে, পরীক্ষা চলাকালীন তার থেকে উত্তর লেখা একটি কাগজ পাওয়া যায়। তাই শিক্ষিকা তাকে আর পরীক্ষা দিতে দেননি। অভিযোগ, প্রিয়া তাঁকে বারবার উত্তরপত্র পরীক্ষা করে দেখতে বলে। জানায়, উত্তর লেখা থাকলেও সে নকল করেনি। তার পরে প্রিয়াকে প্রধান শিক্ষিকার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই তিন সহপাঠী পরীক্ষা শেষে প্রিয়াকে বসে কাঁদতে দেখে। তাদের প্রিয়া জানিয়েছিল, প্রধান শিক্ষিকা তাকে বলেছেন, অভিভাবককে স্কুলে নিয়ে না এলে তাকে আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না।

নারায়ণবাবুর অভিযোগ, তাঁর মেয়ের উপরে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেই সে আত্মহত্যা করেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কুহু দাস বলেন, ‘‘পরীক্ষার একেবারে শেষ সময়ে ওই ঘটনাটি ঘটে। কেউ প্রিয়ার উপরে মানসিক অত্যাচার করেনি। তবে এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছিল বলে তাকে বলা হয়, অভিভাবককে স্কুলে নিয়ে আসতে। তার পরীক্ষা বাতিল করা হয়নি। আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না— এমনও বলা হয়নি। এটা আমাদের এক্তিয়ারেও নেই।’’

Death Suicide Girl Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy