Advertisement
E-Paper

মা-কে সাহস জোগাত দুই বোন

এক জনের বয়স ষোলো। অন্য জনের পনেরো। এত ঝড়ঝাপ্টার মধ্যেও তাদের ভরসা ছিল, মা। আবার প্রতিবাদী মায়ের শক্তি ছিল এই দুই কিশোরী। শুক্রবার ভোরের পর অবশ্য ছবিটা বদলে গিয়েছে। মা চলে গিয়েছেন বহু দূরে। মেয়েরাও মায়ের বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে দিদার বাড়িতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০৩:৫৪

এক জনের বয়স ষোলো। অন্য জনের পনেরো। এত ঝড়ঝাপ্টার মধ্যেও তাদের ভরসা ছিল, মা। আবার প্রতিবাদী মায়ের শক্তি ছিল এই দুই কিশোরী।

শুক্রবার ভোরের পর অবশ্য ছবিটা বদলে গিয়েছে। মা চলে গিয়েছেন বহু দূরে। মেয়েরাও মায়ের বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে দিদার বাড়িতে। দুই বোনের এক জন পড়ে একাদশ শ্রেণিতে। অন্য জন দশম শ্রেণির ছাত্রী। পরীক্ষা চলছে দু’জনেরই। মা মারা যাওয়ায় এ দিন পরীক্ষা দিতে পারেনি তারা।

মা, বিয়াল্লিশ বছরের সুজেট জর্ডন। পার্ক স্ট্রিটে চলন্ত গাড়িতে যাঁকে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। সুজেটের পরিবারের লোকেরা বলছেন, এত কিছুর মধ্যেও মেয়েদের দেখভাল নজর এড়াত না মায়ের। রীতিমতো চিন্তায় থাকতেন মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়েও। ধর্ষণের ঘটনার পরে মেয়েদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বারবার ছুটে যেতেন পর্ণশ্রী থানায়।

সুজেটের পরিবার সূত্রের বক্তব্য, দিন সাতেক আগে মা অসুস্থ হতেই দুই মেয়ে কার্যত ভেঙে পড়েছিল। নিত্যদিন দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে হাজিরা দিত দু’জনে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুজেটকে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিল দু’বোন।

অবশেষে কঠিন খবরটা দিলেন পরিজনেরাই। ভোর চারটে নাগাদ সুজেটের এক আত্মীয়ই দু’বোনকে মৃত্যুসংবাদ জানান। “খবরটা শুনেই হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করে দু’জনে। সারা দিনে মুখে কিছুই তোলেনি প্রায়,” বলছেন পরিবারের এক সদস্য। পুলিশ সূত্রের খবর, পর্ণশ্রীর একটি আবাসনে মা ও দু’মেয়েকে নিয়ে থাকতেন সুজেট। এ দিন সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ফ্ল্যাট তালাবন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দারাই জানালেন, মাস কয়েক আগে এই ফ্ল্যাটে তালা ঝুলিয়ে বেহালার অন্য এক আবাসনে চলে গিয়েছেন সুজেট।

পিস হেভ্নে দাঁড়িয়ে সুজেটের এক বাল্যবন্ধু বলছিলেন, “সুজেটের প্রতিবাদের শক্তি ছিল ওরাই। বাচ্চা মেয়ে দু’টোও সমাজের কটূক্তি থেকে রেহাই পায়নি। তবুও মায়ের পাশে প্রতিবাদে অটুট থেকেছে ওরা।”

মা তো নেই। এখন কে দেখবে দু’টি নাবালিকা মেয়েকে?

সদুত্তর মেলেনি। এ দিন যাওয়া হয়েছিল সুজেটের প্রাক্তন স্বামী টনি মার্টিনের ওয়েলেসলি সেকেন্ড লেনের বাড়িতেও। সেখানে অবশ্য টনিকে পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে ফের বিয়েও করেছেন তিনি। তাঁর মা বারবারা বলেন, “টনি ফিরে এসে মেয়েদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।”

suzette jordan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy