Advertisement
E-Paper

খুনি সন্দেহে গ্রেফতার তরুণীর সঙ্গী

গলা টিপে সঙ্গিনীকে খুন করে হোটেলের ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে শাড়ির ফাঁস গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছিল খুনি। দরজা বাইরে থেকে টেনে দাবি করেছিল, ভিতর থেকে তা বন্ধ। চাবি পকেটে থাকলেও বলেছিল, তাআছে ঘরের ভিতরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ০০:০০

গলা টিপে সঙ্গিনীকে খুন করে হোটেলের ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে শাড়ির ফাঁস গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছিল খুনি। দরজা বাইরে থেকে টেনে দাবি করেছিল, ভিতর থেকে তা বন্ধ। চাবি পকেটে থাকলেও বলেছিল, তাআছে ঘরের ভিতরে। যাতে মনে হয়, ওই তরুণী ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করেছেন।

ম্যানেজারের সামনে অভিনয় করে লক ভাঙার মিস্ত্রি ডাকতে বলে সেই যুবক। মিস্ত্রি এসে দরজার একটি অংশ কাটে। ঝুলন্ত দেহ দেখে হোটেলের ম্যানেজার পুলিশে খবর দিতে হবে বলে জানালে খুনি হোটেলের বিভিন্ন গণ্ডগোল ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখায়। পুলিশ তদন্তে নেমে এমনটা জেনেছে। শনিবার সকালে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ও রিপন স্ট্রিটের মোড়ে, একটি হোটেলের সামনে থেকে কাঁথায় মোড়া মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের দাবি, সোমা দাস নামে ওই তরুণীকে খুন করেছে সৈয়দ রিজওয়ান। সোমা বিয়ের জন্য তাকে চাপ দিচ্ছিলেন ও তা-ই খুনের কারণ। বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা ওই যুবককে সোমবার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, শনিবার রিজওয়ান বিমানে আন্দামান চলে যায়। তাকে ফাঁদে ফেলে ধরে পুলিশ। রিজওয়ান আগেও ডাকাতিতে গ্রেফতার হয়েছিল, পরে সে ছাড়া পায়।

গ্রেফতার হয়েছে ওই হোটেলের ম্যানেজার ও এক মহিলা-সহ দুই কর্মীকে। ওই তিন জন খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তদন্তে জানা গিয়েছে, সোমা শ্রীরামপুরে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন বছর খানেক আগে। রিজওয়ানের সঙ্গে সোমার পরিচয়ের পরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দু’জনের ওই হোটেলে যাতায়াত ছিল। বৃহস্পতিবার সোমাকে নিয়ে রিজওয়ান হোটেলে ঢোকে। রেজিস্টারে রিজওয়ানের নাম লেখা হলেও সোমার নাম ছিল না। পুলিশ জেনেছে, শুক্রবার বেলায় দু’জনের ঝগড়া শুরু হয়। তা শুনতে পান হোটেলের লোকজন। কিছু পর থেমে যায়। বারোটায় হোটেল থেকে বেরিয়ে যায় রিজওয়ান। দীর্ঘক্ষণ না ফেরায় হোটেলের ম্যানেজার সৌমেন মিত্র তাকে ফোন করেন। পুলিশের কাছে সৌমেনের দাবি, রিজওয়ান তাকে বলে, সোমা হোটেলে আছে। একটু পরে হোটেলে ফেরে রিজওয়ান। ডেকে সাড়া না মেলায় রিজওয়ান সৌমেনকে বলে, সোমাকে ফোন করতে। ঘরের ভিতরে মোবাইলের শব্দ মেলে। এর পরে হোটেলের কর্মী শেখ রাজুকে লক ভাঙতে ডাকা হয়।

ঘরে ঢুকে দেখা যায়, সোমার দেহ ফ্যান থেকে ঝুলছে। পুলিশ জানায়, রিজওয়ানের দাবি, সোমা আত্মহত্যা করেছে। চিকিৎসক আনার নাম করে সে হোটেল থেকে বেরোলেও একাই ফিরে আসে। ম্যানেজার পুলিশ ডাকার কথা বললে রিজওয়ান তাকে ভয় দেখায়। পুলিশের বক্তব্য, বিকেলে হোটেল থেকে সে ফের বেরোনোর কিছু পরে রিজওয়ানের ফোন বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ১২ ঘণ্টা ঘরেই সোমার দেহ পড়ে থাকে। সৌমেনের দাবি, হোটেলের বদনাম হওয়ার ভয়ে সে পুলিশে খবর দেয়নি। তার পর শনিবার ভোরের আগেই রাজু ও কদবানু বিবিকে সঙ্গে নিয়ে সৌমেন সোমার দেহ কাঁথায় মুড়ে ফেলে দেয়। রিজওয়ান, সৌমেন ও কদবানুর ২৯ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়েছে।

Suspicion Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy