E-Paper

বায়োমেট্রিক লকের কী হল, স্টেটাস রিপোর্ট চাইল স্বাস্থ্য ভবন

মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ‘বায়োমেট্রিক অ্যাকসেস কন্ট্রোল সিস্টেম’ বসানোর কথা বলা হয়েছিল। দশ মাস পরে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ থেকে ওই ব্যবস্থার অগ্রগতির বিষয়ে স্টেটাস রিপোর্ট চাইল স্বাস্থ্য ভবন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ০৯:১০
কিছু হাসপাতালে যন্ত্রই বসানো হয়নি।

কিছু হাসপাতালে যন্ত্রই বসানো হয়নি। —প্রতীকী চিত্র।

আর জি করের ঘটনার পরে মহিলাদের সুরক্ষায় ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প চালুর কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। সেই প্রকল্পে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ‘বায়োমেট্রিক অ্যাকসেস কন্ট্রোল সিস্টেম’ বসানোর কথা বলা হয়েছিল। দশ মাস পরে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ থেকে ওই ব্যবস্থার অগ্রগতির বিষয়ে স্টেটাস রিপোর্ট চাইল স্বাস্থ্য ভবন।

যদিও স্বাস্থ্য শিবিরের অভিযোগ, আর জি করের ঘটনার তিন মাসের মধ্যে তড়িঘড়ি প্রায় সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি এই ‘বায়োমেট্রিক অ্যাকসেস কন্ট্রোল সিস্টেম’ যন্ত্র বসানো হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশই এখন আর চালু নেই। কোথাও আবার প্রথম দিন থেকেই সেগুলি কার্যকর ছিল না। কোনও মেডিক্যাল কলেজে আবার যন্ত্র বসানোই হয়নি।

আর জি করের ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছিল, হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সদের ডিউটি কক্ষ, বিশ্রামকক্ষ, অপারেশন থিয়েটার অথবা সেমিনার কক্ষে কী ভাবে যে কেউ বিনা বাধায় ঢুকে পড়তে পারে? যদি তা-ই হয়, তা হলে সুরক্ষা বা নিরাপত্তা কোথায়? এর পরেই রাতে মহিলাদের সুরক্ষা জোরদার করতে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। তাতে জানানো হয়, মেডিক্যাল কলেজগুলির বিভিন্ন বিভাগের ডিউটি কক্ষ, বিশ্রামকক্ষ, ও টি কমপ্লেক্স ও সেমিনার কক্ষে বায়োমেট্রিক লক থাকবে। ডিউটিতে থাকা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সদের আঙুলের ছাপ মিললে তবেই দরজা খুলবে।

স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতরের বিশেষ সচিব প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানতে চেয়েছেন, কতগুলি যন্ত্র বসেছে, কতগুলি চালু আছে বা নেই। কিন্তু গত বছরের ৯ অগস্টের পরে তিন মাসের মধ্যে কোটি টাকা খরচ করে রাজ্যের প্রায় সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে যন্ত্র বসানোর পরে আদৌ সেগুলি কাজ করছে কিনা, তা দেখা হয়নি। অনেক মেডিক্যাল কলেজে শতাধিক যন্ত্র বসলেও তা কোনও দিন চালুই হয়নি। খোদ চিকিৎসকেরাই বলছেন, ‘‘যন্ত্র চালু করার জন্য আঙুলের ছাপই রেকর্ড করা হয়নি। এক বছর ধরে শুধু নামেই বায়োমেট্রিক লক আছে। কোনও দিন কাজ করেনি।’’

কোথাও আবার নতুন যাঁরা কাজে যোগ দিচ্ছেন, তাঁদের বায়োমেট্রিক নেওয়াই হয়নি। কিছু হাসপাতালে যন্ত্রই বসানো হয়নি। যেমন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। সূত্রের খবর,স্বাস্থ্য দফতরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির কাছে পড়ুয়ারা দাবি করেছিলেন, বায়োমেট্রিক লক সিস্টেম করতে হবে এমসের মতো। সেখানে প্রত্যেকের বায়োমেট্রিক কেন্দ্রীয় সার্ভারে থাকে। ফলে, কে কোথায় যাচ্ছেন, তা সহজেই বোঝা যায়। রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে অবশ্য বিভাগ অনুযায়ী করার কথা হয়। কিন্তু স্নাতকোত্তরের পড়ুয়া-চিকিৎসকদের তো বিভিন্ন বিভাগে ডিউটি পড়ে। এই সমস্ত যুক্তি পড়ুয়ারা তুলে ধরার পরে বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানোর কথা বলেন নিরাপত্তা কমিটির আধিকারিকেরা। কিন্তু তার পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে বায়োমেট্রিক লক সংক্রান্ত কোনও কাজ হয়নি।

‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘কয়েক কোটি টাকা খরচ হলেও সুরক্ষা এক ইঞ্চিও বাড়েনি। কারণ, যন্ত্র বসানোর পরের কাজ আর হয়নি। কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে কার্যত প্রতারণা করা হয়েছে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Swasthya Bhavan Medical College and Hospital

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy