নতুন কেউ যখন সাঁতার শেখা শুরু করে, তখন প্রথম দিন পনেরো তাঁদের কম জলে শেখানো হয়। সে সময়ে ওই সব সাঁতারুরা সহজেই পায়ের তলায় মাটি পেয়ে যায়।
প্রথম ধাপে এই ভাবে বেশ কিছু দিন ধরে শেখার পরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষানবিশকে বেশি জলে পাঠানো হয়। কত দিনে ওই সাঁতারুকে বেশি জলে নিয়ে যাওয়া হবে, তা নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষকের উপরে।
কিন্তু বেশি জলে যাওয়ার পরে আগের অভ্যেস সহজে ছাড়তে পারে না আনাড়ি সাঁতারু। সে ভাবে, দম না পেলেই দাঁড়িয়ে যাবে এবং মাটিতে পা পেয়ে যাবে। এই ভাবনার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এখানেই একজন প্রশিক্ষকের সতর্ক দৃষ্টি থাকা জরুরি। সাঁতারু বেদম হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে বা পা নেড়ে নেড়ে প্যাডেল করা থামিয়ে দিচ্ছে দেখলেই প্রশিক্ষকের কাজ তাকে ভোকাল টনিকে চাঙ্গা করে তোলা। সাঁতারুর পাশে বা সামনে থেকে তাকে বারবার বলা, ‘‘এখন কিন্তু মাটি নেই। প্যাডেল চালিয়ে যাও। প্যাডেল থামানো যাবে না।’’ এর পরেও কেউ দাঁড়িয়ে পড়লে প্রশিক্ষকের কাজ হল, তাকে টিউব এগিয়ে দেওয়া বা চট করে ধরে ফেলে পাড়ের দিকে নিয়ে যাওয়া।
কোথাও একজন কি দু’জন প্রশিক্ষকের কাছে অনেক জন সাঁতার শিক্ষার্থীকে তালিম নিলে, বিপদের সম্ভাবনা থাকে। সবাইকে এক সঙ্গে দেখা সম্ভব হয় না। তখনই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সে-ক্ষেত্রে সুইমিং পুলে একাধিক নজরদার রাখার প্রয়োজন। যাঁদের সাঁতারের পরিভাষায় ‘ওয়াচার’ বলে। পাশাপাশি, থাকা দরকার ‘লাইফ সেভার’দেরও। কোনও সাঁতারু ডুবে যাচ্ছে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে এঁদের কাজ হল, তাকে উদ্ধার করা।
প্রাণসংশয় যাতে কোনও সাঁতারুরই না হয়, তা নিশ্চিত করতে সুইমিং পুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে টিউব ছড়িয়ে রাখা উচিত। তাতে সাঁতারুরা বিপদে পড়লেই ওই টিউব আঁকড়ে ধরতে পারে। সাঁতারুদের জলে তলিয়ে যাওয়া ঠেকাতে কোমরে ‘লাইফ বেল্ট’ বেঁধে রাখাও যায়। যদিও ‘লাইফ বেল্ট’ কেনা খরচসাপেক্ষ বলে তা অনেক সুইমিং পুলেই থাকে না।
কোনও সাঁতারুর খুব জ্বর হলে বা কোনও অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হলে, বা শরীরে কোনও দুর্বলতা থাকলেও এর পরে অন্তত দিন পনেরো সাঁতার কাটা উচিত নয়। অভিভাবকরা কোনও কোনও সময় সে সবের তোয়াক্কা না করেই সাঁতার শেখাতে পাঠিয়ে দেন। সে ক্ষেত্রে প্রশিক্ষকেরই কাজ হল, সংশ্লিষ্ট সাঁতারু পুরোপুরি সুস্থ কি না, তা ভাল ভাবে যাচাই করে তবে তাকে জলে নামানো। সেটা যাচাই করার সবচেয়ে ভাল রাস্তা হল, জলে নামার আগে সাঁতারুদের খানিক ক্ষণ শরীরচর্চা করিয়ে নেওয়া। কারও শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, পেট ব্যথা বা অন্য কোনও সমস্যা থাকলে, তা তখনই ধরা পড়ে যাওয়া উচিত। তখন ওই সাঁতারুকে জলে নামতেই দেওয়া হয় না। আবার অভিভাবকদের দিক থেকেও অনেক সময়ে খামতি থেকে যায়। কোনও সাঁতারুর অযথা ভয় পেয়ে যাওয়া (ফোবিয়া) বা সন্ন্যাস রোগ আছে কি না, সেটা প্রশিক্ষককে আগে জানানো উচিত।
আরও খেলা
হেদুয়ায় সাঁতার শিখতে গিয়ে মৃত তরুণী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy