Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩

শিয়রে প্রতিযোগিতা, ডাঙাতেই তাই ‘সাঁতার’

ওদের কেউ পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে, চতুর্থ শ্রেণিতে, কেউ বা পঞ্চম শ্রেণিতে। কিন্তু এর মধ্যেই এরা সবাই হয়ে গিয়েছে অ্যাডভান্স সুইমার। খুদে সাঁতারুরা জানিয়ে দিচ্ছে, গরমকালে জলে নেমে সাঁতার প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে গোটা শীতকালে এই ভাবে ডাঙাতেও সাঁতার প্রশিক্ষণ নিয়ে যাচ্ছে তারা। মাঝেমধ্যে জলে নেমে সাঁতার কাটে ওরা।

প্রশিক্ষণ: সুইমিং পুলের সামনে চলছে খুদে সাঁতারুদের কসরত। কলেজ স্কোয়ারে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

প্রশিক্ষণ: সুইমিং পুলের সামনে চলছে খুদে সাঁতারুদের কসরত। কলেজ স্কোয়ারে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৭
Share: Save:

জলে নামেনি ওরা। সুইমিং পুলের সামনে ডাঙায় দাঁড়িয়েই চলছে ফ্রিস্টাইল সাঁতার কাটার প্রশিক্ষণ। ফ্রিস্টাইলে সাঁতার কাটার মতো করেই ডাঙায় দাঁড়িয়ে হাত পা নেড়ে চলেছে খুদে সাঁতারুরা।

Advertisement

ওদের কেউ পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে, চতুর্থ শ্রেণিতে, কেউ বা পঞ্চম শ্রেণিতে। কিন্তু এর মধ্যেই এরা সবাই হয়ে গিয়েছে অ্যাডভান্স সুইমার। খুদে সাঁতারুরা জানিয়ে দিচ্ছে, গরমকালে জলে নেমে সাঁতার প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে গোটা শীতকালে এই ভাবে ডাঙাতেও সাঁতার প্রশিক্ষণ নিয়ে যাচ্ছে তারা। মাঝেমধ্যে জলে নেমে সাঁতার কাটে ওরা। সামনেই গরম কাল। শুরু হবে একের পর এক সাঁতার প্রতিযোগিতা। জাতীয় স্তরে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গেলে শীতকালে প্রশিক্ষণ থামিয়ে দিলে কোনওভাবেই চলবে না।

দমদম থেকে মায়ের সঙ্গে কলেজ স্কোয়ারে সাঁতার প্রশিক্ষণে এসেছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র অর্ক মুখোপাধ্যায়। সে জানায়, প্রথমে কলেজ স্কোয়ারে কয়েক পাক দৌড়োতে হয়। তার পরে ফ্রিহ্যান্ড ব্যায়াম। তার পরে ডাঙাতে দাঁড়িয়েই চলে ফ্রিহ্যান্ডের প্রশিক্ষণ। তার পরে কোনও কোনও দিন জলে নেমে সাঁতার কাটা। অর্ক বলে, ‘‘অ্যাডভান্স সুইমার হওয়ার পরে মনে হল প্রতিযোগিতাতেও নামতে হবে। ভাল ফল করতে হবে। তাই শীতকালেও কোনও কামাই করিনি। ডাঙায় দাঁড়িয়েও রোজ সাঁতার কাটার সব ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়ে গিয়েছি।’’

কুণ্ডু বাগান থেকে কলেজ স্কোয়ারে এসেছে সাঁতার প্রশিক্ষণে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র অম্লান নন্দী। সে বলে, ‘‘এত ঠাণ্ডায় রোজ জলে কী ভাবে সাঁতার কাটব? ডাঙাতেও তো কত রকম ভাবে অনুশীলন করা যায়। সে সব মন দিয়ে করি। ডিসেম্বরের শীতেও কোনও দিন কামাই করিনি।’’

Advertisement

কলেজ স্কোয়ার সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষকেরা জানান, এই সব খুদে প্রশিক্ষকদের সপ্তাহে দু’ থেকে তিন দিন জলেও নামিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এক প্রশিক্ষক শুকদেব দত্ত জানান, এপ্রিল থেকে অক্টোবর— সাঁতারের মরশুমে যারা ভাল সাঁতার কাটে তাদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে নির্বাচন করে প্রতিযোগিতার জন্য সারা বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শুকদেববাবু বলেন, ‘‘শীতকালে এই প্রশিক্ষণ ভাল সাঁতারু হওয়ার জন্য খুব কাজে লাগে। নিরবিচ্ছিন্ন এই প্রশিক্ষণ ভাল সাঁতারু হওয়ার জন্য খুব জরুরি। অনেকেই এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় স্তরে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ

করে ভাল ফল করেছে। রেলের মতো বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় চাকরিও পেয়েছে অনেকে।’’

কয়েক দিনের মধ্যে পুলের সম্পূর্ণ জল ফেলে দিয়ে নতুন করে জল ভরার কাজ শুরু হবে। এপ্রিল মাস থেকে শুরু হবে সাঁতারের নতুন মরশুম। কলেজ স্কোয়ার সুইমিং পুলের সম্পাদক গৌতম মল্লিক বলেন, ‘‘জলের মতোই ডাঙায় সাঁতার শেখানোর প্রশিক্ষণও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওরা সারা বছর ধরে সাঁতারের প্রশিক্ষণের মধ্যে থাকায় ওদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.