Advertisement
০২ মে ২০২৪
Amal Kumar Mukhopadhyay

ছাত্র, শিক্ষক, অধ্যক্ষ অমলময় প্রেসিডেন্সি

প্রেসিডেন্সি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসাবে অমলেরই আসনে বসেন প্রশান্ত। অগ্রজের প্রতি অনুজের অকুণ্ঠ সম্ভ্রমই স্মরণসভার মূল সুরটা বেঁধে দিল।

An Image Of Death

অমল মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:১৬
Share: Save:

মহান শিক্ষকদের মৃত্যু হয় না। তাঁদের কথা স্মরণেই তাঁরা সজীব হয়ে ওঠেন। এই ক’টি কথাতেই সদ্য প্রয়াত অমল মুখোপাধ্যায়ের জীবন ও কাজের নির্যাস মেলে ধরেছিলেন
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক প্রশান্ত রায়। প্রেসিডেন্সি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসাবে অমলেরই আসনে বসেন প্রশান্ত। অগ্রজের প্রতি অনুজের অকুণ্ঠ সম্ভ্রমই স্মরণসভার মূল সুরটা বেঁধে দিল।

ঠিক চার বছর আগে প্রেসিডেন্সিতেই নবনীতা দেবসেনের স্মরণসভায় সরস এবং
অকপট ভঙ্গিতে কলেজবান্ধবী নবনীতার প্রতি তাঁর অনুচ্চারিত প্রেমের কথা স্বীকার করে সবার মন জয় করে নেন অমল। তৎকালীন প্রেসিডেন্সিতে তখনও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগটি শুরু হয়নি। কলেজের অর্থনীতির ছাত্র অমল নবনীতার উদ্দেশে নামহীন কবিতায় লেখেন, ‘বিদায় তমস্বিনী, ভুলে যেয়ো এ ধ্রুবতারায়’! কে এই কবি, কে তাঁর প্রেরণাদাত্রী— কলেজ জল্পনায় ভরে উঠেছিল। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি প্রাক্তনী সংসদ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে অমলের স্মরণসভা সেই স্মৃতিও উস্কে দিল। সকলের আক্ষেপ, গত মাসেও দেশ পত্রিকায় ‘অশান্ত মধ্যপ্রাচ্য’ নিয়ে অমলের লেখা প্রকাশিত হয়েছে। ৮৬ বছরেও সজীব, বিদগ্ধ শিক্ষাবিদ যেন স্বমহিমায় থেকেই চলে গেলেন।

প্রাক্তনী সংসদের অনিমেষ সেন, দীপঙ্কর চৌধুরীদের চোখে অমল মুখোপাধ্যায় মানে প্রেসিডেন্সির চিরকালীন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। একাধারে ছাত্র, অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষ— এমন চরিত্র বিরল। অমলের পরে কলেজের অধ্যক্ষ অমিতাভ চট্টোপাধ্যায় শোনালেন, ঠিক কী ভাবে প্রশাসক তথা অধ্যক্ষ অমল উচ্চশিক্ষা দফতরের মাথা থেকে মন্ত্রীদের অনভিপ্রেত ছায়াটুকুও সামলে রাখতেন। অধ্যাপক কৃত্যপ্রিয় ঘোষ শুনিয়েছেন, নবীন অনুজদের হঠাৎ চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলে পরীক্ষা নিতে ভালবাসতেন অমল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান আব্দুল সামাদ গায়েনের কথায়, “এই সে দিনও আমরা ঘুমোনোর আগে পরের দিনের পড়ার প্রস্তুতি নিই শুনে স্যর (অমল) আঁতকে উঠে সাবধান করেছেন, ‘না, না শোয়ার আগে গান শুনবে, গল্পের বই পড়বে’!’’ সভায় ছিলেন সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক অভিজিৎ মিত্র, বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। অমলের স্নেহভাজন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বা জহর সরকারও ভার্চুয়াল মাধ্যমে ‘স্যরের’ গল্প শুনিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE