Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভাড়াটের ছুরির কোপে আহত দম্পতি

পুলিশ সূত্রের খবর, বালিগঞ্জ থানা এলাকার দেওদার স্ট্রিটে ভোলা সাউয়ের বাড়ি। তিনি সস্ত্রীক দোতলায় থাকেন। অভিযোগ, তিনতলায় তাঁর একটি ফ্ল্যাট সতীশ সাউ নামে এক ভাড়াটে দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন।

অভিযুক্ত সতীশ সাউ।

অভিযুক্ত সতীশ সাউ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৭
Share: Save:

বাড়িওয়ালার অভিযোগ, ভা়ড়াটের ঘরে নিয়মিত মদের আসর বসত। চলত নানা অসামাজিক কাজকর্ম। এ নিয়ে আগে তিনি একাধিক বার আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, তাঁর কথায় কর্ণপাত করেননি ভাড়াটে। বুধবার সকালে সেই ভাড়াটে অশালীন ভাষায় পরিচারিকাকে অপমান করায় রুখে দাঁড়ান বাড়িওয়ালা ও তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ, প্রতিবাদ করতেই ওই দম্পতিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেন ওই ভাড়াটে। মারেন একের পর এক কোপ। এ দিন সকালে বালিগঞ্জের এই ঘটনায় বাড়িওয়ালা ও তাঁর স্ত্রী গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত ভাড়াটেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, বালিগঞ্জ থানা এলাকার দেওদার স্ট্রিটে ভোলা সাউয়ের বাড়ি। তিনি সস্ত্রীক দোতলায় থাকেন। অভিযোগ, তিনতলায় তাঁর একটি ফ্ল্যাট সতীশ সাউ নামে এক ভাড়াটে দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, তিনতলার ওই ফ্ল্যাটে মদের আসর বসত নিয়মিত। এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সতীশকে একাধিক বার বাড়ি ছেড়ে যেতে বললেও উল্টে তিনি ভোলাবাবুকে অপমান ও মারধর করেছেন বলে অভিযোগ। কয়েক মাস আগে সতীশের বিরুদ্ধে বালিগঞ্জ থানায় মারধরের অভিযোগও দায়ের করেছিলেন ভোলাবাবু। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সতীশকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছিল। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে বাড়ির পরিচারিকা তিনতলায় সাফাই করতে গেলে সতীশ তাঁকে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে কাজ করতে বারণ করেন তিনি। সেই সময়ে ভোলাবাবু ও তাঁর স্ত্রী শীলা এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। ভোলাবাবুর পুত্রবধূ পূজা সাউয়ের কথায়, ‘‘পরিচারিকাকে খারাপ ভাষায় কথা বলায় আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি প্রতিবাদ করেন। তা শুনে সতীশ তাঁদের সঙ্গে তর্কাতর্কি জুড়ে দেয়। এর পরে সতীশকে বাড়ি ছেড়ে যেতে বলা হলে সে ঘর থেকে ধারালো ছুরি নিয়ে এসে ওঁদের দু’জনকে একের পর এক কোপ মারে।’’ ভোলাবাবু ও তাঁর স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে।

এই জায়গাতেই ছুরি নিয়ে ওই দম্পতিকে আক্রমণ করেন তিনি।

এই ঘটনার সময়ে ভোলাবাবুর ছেলে ও বৌমা তিনতলা বাড়ির নীচের তলায় ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ছুরিকাহত অবস্থাতেই শীলাদেবী দোতলা থেকে হেঁটে নীচে ছেলের ফ্ল্যাটের দরজার সামনে আসেন। মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে ছুটে আসেন ছেলে আশিস। সব শুনে দোতলায় ছুটে যান বাবাকে উদ্ধার করতে। জখম বাবা-মাকে ই এম বাইপাসের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। এ দিকে, এই কাণ্ডের পরেই বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে চম্পট দেন সতীশ। পরে বিকেলে পার্ক সার্কাসে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।

পূজা জানান, ওই বাড়ির দোতলা ও তিনতলার ফ্ল্যাট দু’টির মালিক তাঁর শ্বশুর। কিন্তু তাঁদের এক আত্মীয় সেটি দখল করে রেখেছিলেন। পরে তিনিই সতীশকে ওই ফ্ল্যাটে থাকতে দেন। সতীশ একাই ওই ফ্ল্যাটে থাকেন। তাঁর অভিযোগ, প্রায়ই লোকজন জুটিয়ে সেখানে মদের আসর বসান সতীশ। তা ছা়ড়া, অপরিচিত মহিলাদেরও মাঝেমধ্যে নিয়ে আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার শ্বশুর এ সব নিয়ে বারবার আপত্তি জানিয়েছেন। আগেও এক বার ফ্ল্যাট ছে়ড়ে দিতে বলায় সতীশ আমার শ্বশুরকে মারধর করেছিল। আজ যে ভাবে হামলা চালাল, তাতে হয়তো প্রাণেই মেরে ফেলত।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE