Advertisement
E-Paper

তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ বিরোধীদের

পুরভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে বিরোধীরা। কোথাও অভিযোগকারী সিপিএম, কোথাও কংগ্রেস বা বিজেপি। শনিবার দমদমে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানো এক বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০২

পুরভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে বিরোধীরা। কোথাও অভিযোগকারী সিপিএম, কোথাও কংগ্রেস বা বিজেপি। শনিবার দমদমে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানো এক বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মী।

কলকাতার পুরসভার ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে বাম প্রার্থীরা প্রচার করতে পারছেন না বলে আগেই অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে চিৎপুর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের হয়েছে। শনিবার কলকাতার সিপিএম নেতা অনাদি সাহু অভিযোগ করেন, ‘‘৩ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী কনীনিকা ঘোষের প্রচারের ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, এই সন্ত্রাস নিয়ে এক সপ্তাহ আগে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু ও অন্য নেতারা পদযাত্রা করলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

বামেদের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী শান্তনু সেনের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিতে জুতোর কালি লেপা হচ্ছে, ফ্লেক্সে আমার মুখ ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ এ নিয়ে তিনি চিৎপুর থানায় চার বার অভিযোগ দায়ের করেন।

শনিবার দুপুরেই রাজাবাজারে, পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী শাহিনা জাভেদের ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে তৃণমূল প্রার্থী ইকবাল আহমেদের পোস্টার লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। এ দিন ওই ওয়ার্ডে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সভা ছিল। সভামঞ্চে ইকবাল নিজের ছবি, পোস্টার লাগানোর চেষ্টা করছেন বলে পুলিশে অভিযোগ জানান শাহিনা। অভিযোগ অস্বীকার করে ইকবালের বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। এমন কিছুই দেখিনি।’’

কলকাতা পুরসভার ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী শুক্লা মজুমদারের হয়ে প্রচার করায় বিশ্বজিৎ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগও উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। বিশ্বজিৎবাবুর বাড়ির উল্টো দিকেই ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের বাড়ি। বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীদের হাতে বিশ্বজিৎবাবুকে মার খেতে দেখলেও মালাদেবী বা তাঁর স্বামী নির্বেদ রায় তাঁকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেননি। এ ব্যাপারে তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটা গোলমাল হয়েছে শুনেছি। তবে বিজেপির কারও উপরে তৃণমূল কর্মীরা চড়াও হননি।’’

এ দিন পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থ়ী জিতেন্দ্রনাথ সাউ এর বাড়িতেও হামলার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবে তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

সিপিএম প্রার্থীর বাড়ি গিয়ে হামলা ও খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী সন্দীপ সরকারের বাড়িতে গিয়ে তাঁর বৃদ্ধা মাকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে নিমতা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান সিপিএম নেতা-কর্মীরা। অভিযোগ, উত্তর দমদম পুর-এলাকার ৩১টি ওয়ার্ডেই তৃণমূল কর্মীরা সিপিএমের প্রার্থী ও কর্মীদের ভয় দেখাচ্ছে। সিপিএমের বিদায়ী পুর-প্রধান সুনীল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল সন্ত্রাস তৈরি করে এলাকা জুড়ে ভয় দেখাচ্ছে। আমাদের কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’’ তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এটা সাজানো অভিযোগ।’’ পুলিশ অবশ্য ঘটনার তদন্ত ও নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে।

দমদম পুরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘ দিন তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন অনিন্দিতা হালদার। পুরভোটে দল টিকিট না দেওয়ায় তিনি সেখানে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। এ দিন তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন, তাঁর পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। অনিন্দিতার বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল সমর্থকেরা আমার পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে নর্দমায় ফেলে দিয়েছে।’’ যদিও ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আগে অন্য ওয়ার্ড থেকে জিতেছি। জেতার জন্য আমায় কারও ব্যানার ছিঁড়তে হয় না।’’

কলকাতা পুর-এলাকায় সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে লালবাজারের কর্তাদের বক্তব্য, অভিযোগ আসলেই তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

Trinamool BJP CPM minicipal election Dumdum Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy