কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল ছবি।
ভোটের লড়াইয়ের পর এ বার কোর্টের লড়াই! কলকাতা পুরসভার ভোট মিটতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরসভা সংক্রান্ত হাই কোর্টের মামলাগুলি। আর এর ফলে রাতের ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড় কমিশনের কর্তাদের। বৃহস্পতিবার তাঁরা আদালতে কী জবাব দেবেন তা নিয়ে দু’দিন ধরে চলেছে জোরকদমে প্রস্তুতি।
রবিবার কলকাতা পুরসভার ভোটগ্রহণ হয়। ওই ভোটে বোমাবাজি, অশান্তি, মারধর ও ভোট লুঠের অভিযোগ তুলে একাধিক মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। ভোটে গন্ডগোলের অভিযোগে বিশেষ তদন্তকারী দল বা নিরপেক্ষ কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবিতে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন বাম প্রার্থী দেবলীনা সরকার ও ফৈয়াজ আহমেদ। আবার ওই একই বেঞ্চে ভোট বাতিলের আবেদন করে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, গোলমালের পাশাপাশি অবাধে ছাপ্পা ভোট হয়েছে কলকাতার প্রতিটি বুথে। আদালতের নির্দেশের পরও অনেক বুথে সিসিটিভি কাজ করেনি বলেও অভিযোগ বিজেপি-র। এ ছাড়া ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী রবি সাহাও কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। ভোটের দিন তাঁকে নগ্ন করে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
ওই মামলাগুলি ছাড়াও রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলিতে কবে, কোথায়, কত দফায় ভোট করাতে পারবে রাজ্য, তা নিয়ে আগেই একটি মামলা হাই কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। বৃহস্পতিবার সেটিরও শুনানি রয়েছে উচ্চ আদালতে। ফলে সব মিলিয়ে পুরসভা ভোটকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া মামলাগুলি এখন সামলাতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। আর তা নিয়েই নাজেহাল অবস্থা কমিশনের কর্তাদের। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শুধু ভোটে নয়, কোর্টেও আমাদের লড়তে হচ্ছে। অনেক মামলা দায়ের হয়েছে। ফলে আলাদা আলাদা করে আইনজীবী নিয়োগ করতে হয়েছে। আবার তাঁরা আদলতে কী বলবেন আমাদের তার যুক্তি দিতে হচ্ছে।’’ অন্য এক আধিকারিক আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘‘আমার তো ঘুমই উড়ে গিয়েছে। সারা দিন ভোটের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার পর আইনজীবীদের সঙ্গে রাত ১২টার পর থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে মিটিং করতে হয়। আর তা শেষ হতে হতে প্রায় ভোর হয়ে যায়। গত কয়েক দিন ধরে এটাই আমার জীবন হয়ে গিয়েছে।’’
তবে কমিশন কিছুটা চাপেই রয়েছে বলেই মনে করছেন নির্বাচন নিয়ে জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবীদের কয়েক জন। এক আইনজীবীর মতে, "আদালত অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে বলেছিল। রাজ্য ও কমিশন তা নিয়ে আশ্বস্ত করে আদালতকে। আর তার জন্যই হয়তো কেন্দ্রীয় বাহিনী আসেনি। কিন্তু আমরা ওই দিন দেখেছি কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি হয়েছে। অর্থাৎ কমিশন তাদের প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।" তবে এখন দেখার আদালতে পুরসভার মামলাগুলির কী অবস্থা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy