— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছে ছিল, মৃত্যুর পরে তাঁর শেষকৃত্য যেন নিমতলা শ্মশানে করা হয়। কিন্তু নিয়মের ফাঁসে আটকে তা আর পূরণ করতে পারলেন না পরিজনেরা। কারণ, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ায় কলকাতা পুরসভার ধাপাতেই শেষকৃত্য করা হল ওই বৃদ্ধের। পুরসভার দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে অন্য শ্মশানে দাহকাজের অনুমতি মেলেনি। আর স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ধাপাতেই করোনায় মৃতদের শেষকৃত্য করতে দেয় কলকাতা পুরসভা। অন্য শ্মশানে তা চালুর জন্য কোনও আবেদনও করেননি কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ।
জানা যাচ্ছে, উত্তর কলকাতার বাসিন্দা, ৯০ বছরের জগন্নাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। তা না কমায় এবং অন্যান্য সমস্যা থাকায় গত ৯ জানুয়ারি তাঁকে মিন্টো পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পরে জানা যায়, ওই বৃদ্ধ কোভিডে আক্রান্ত। রবিবার সকালে সেখানেই জগন্নাথ মারা যান। এর পরেই টানাপড়েন শুরু হয় বলে অভিযোগ তাঁর পরিজনদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের হাতে দেহ দিতে রাজি হননি। উল্টে জানিয়ে দেওয়া হয়, করোনায় মৃতের ক্ষেত্রে নিয়মের কোনও বদল হয়নি। তাই পুরসভার হাতেই দেহ তুলে দেওয়া হবে।
ওই বৃদ্ধের ছেলে ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতাল স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পুরসভার নিয়মানুযায়ী দেহ আমাদের দেওয়া যাবে না। কিন্তু এখন তো কেউই করোনা-বিধি মানছেন না। হাসপাতাল-নার্সিংহোমে গেলেও কেউ মাস্ক পরছেন না। বাবার কাছে যখন গিয়েছি, আমারও মাস্ক পরা ছিল না। তা হলে মৃতদেহ দেওয়ার ক্ষেত্রে এমন নিয়ম কেন?’’
ইন্দ্রনীল জানান, পুরসভার তত্ত্বাবধানেই ধাপায় গিয়ে শেষকৃত্য করা হয় তাঁর বাবার। তবে অস্থি নিয়ে এসে নিমতলার গঙ্গায় ভাসাতে পেরেছেন পরিজনেরা। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুর এলাকার বাসিন্দা কারও করোনায় মৃত্যু হলে ধাপাতেই শেষকৃত্য করার নিয়ম চালু রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির লোক গিয়ে ওই শেষকৃত্য করতে পারবেন, দিনের যে কোনও সময়ে।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘‘পুরসভার গাড়ি এসে দেহ নিয়ে গিয়ে তাদের মতো করে শেষকৃত্য করবে, এমন নিয়ম এখন আর চালু নেই। তবে, করোনায় মৃতদের জন্য কলকাতা পুরসভার তরফে এখনও ওই জায়গাই চিহ্নিত করা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy