Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

খুনই হন ইঞ্জিনিয়ার, বলছে রিপোর্ট

গত ৩১ ডিসেম্বর রাত থেকে দক্ষিণেশ্বর মে দিবস পল্লির বাসিন্দা দেবকুমার বারিকের ছেলে দীপ নিখোঁজ হন। সন্ধ্যায় ডানলপের পুলিশ আবাসনে পিকনিক করতে গিয়ে আর ফেরেননি বি-টেক পাশ দীপ।

দীপ বারিক

দীপ বারিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৭
Share: Save:

প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছিল ডুবে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ময়না তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে আসতেই বদলে গেল ধারণা। রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, ডানলপের পুলিশ আবাসনের জলাশয় থেকে উদ্ধার হওয়া ইঞ্জিনিয়ার যুবককে শ্বাসরোধ করে খুন করে পরে জলে ফেলে দেওয়া হয়। খুনি কে বা কারা তা পুলিশের কাছে স্পষ্ট না হলেও ঘটনার নেপথ্যে এক মহিলার জড়িত থাকার তথ্য উঠে এসেছে তদন্তে।

গত ৩১ ডিসেম্বর রাত থেকে দক্ষিণেশ্বর মে দিবস পল্লির বাসিন্দা দেবকুমার বারিকের ছেলে দীপ নিখোঁজ হন। সন্ধ্যায় ডানলপের পুলিশ আবাসনে পিকনিক করতে গিয়ে আর ফেরেননি বি-টেক পাশ দীপ। পরিবার খুনের অভিযোগ তোলে দীপের বাল্য বন্ধু ওই আবাসনের বাসিন্দা সঞ্জয় বর্মণের দিকে।

পুলিশ জানায়, ৬ জানুয়ারি দুপুরে আবাসনের কচুরিপানা ভর্তি জলাশয়ে মেলে দীপের দেহ। মুখে ছিল আঘাতের চিহ্ন। প্রথমে মনে করা হয়েছিল হয়েছিল, জলের মধ্যে ওই যুবকের মুখে পোকা কামড়েছে। কিন্তু ময়না তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রথমে মারধর করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে দীপের গলায় ফাঁস দিয়ে জলে ফেলা হয়েছিল।

দেহ উদ্ধারের পরে সঞ্জয়কে গ্রেফতার করা হয়। সঞ্জয় পুলিশকে জানান, পিকনিকে আরও ৩০-৩৫ জন ছিলেন। কিন্তু সঞ্জয় ছাড়া কাউকে দীপ চিনতেন না। দীপ বেশি নেশা করে কয়েক বার বমি করায় তাঁকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাইক আনতে বাড়ি যান সঞ্জয়। দীপকে ফাঁকা জায়গায় বসিয়ে গেলেও ফিরে বন্ধুকে খুঁজে পাননি বলেই দাবি সঞ্জয়ের। তদন্তকারীদের মতে, যদি সঞ্জয় সত্যি বলেন, তা হলে দীপ একা বসে থাকার সময়ে কে তাঁকে মারধর, খুন করল, তা-ও দেখা হচ্ছে। খুন করতেই দীপকে জোর করে নেশা করানো হয়েছিল কি না তা দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীদের হাতে আরও একটি তথ্য উঠে এসেছে। বর্ষবরণের বিকেলে চন্দননগরের একটি পার্কে এক বিবাহিতা মহিলাকে নিয়ে বেড়াতে যান দীপ। তখন ওই মহিলার স্বামী ফোন করে স্ত্রীকে তৎক্ষণাৎ বাড়ি পৌঁছে দিতে বলেছিলেন। বাড়ি ফিরে সন্ধ্যায় পিকনিকে যান দীপ। তাঁর মা সোমাদেবী পুলিশকে জানান, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ছেলে ফোন করে বলে ‘ওঁরা জোর করে নেশা করিয়েছে। শরীর ভাল লাগছে না।’ এর পরে আর দীপের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

পুলিশের অনুমান, ওই মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই কারও সঙ্গে শত্রুতা তৈরি হয়েছিল দীপের। ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হয়ত তা ‘আগুনে ঘি’ ঢালার মতো হয়। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ওই মহিলাকে শনাক্ত করে তাঁর খোঁজ চলছে। আর কারা সে দিন পিকনিকে ছিলেন তাঁদেরও খোঁজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE