প্রতীকী ছবি।
বছরখানেক আগে যে পানশালায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল পুলিশ, সেখানেই মদ্যপান করতে গিয়ে বচসা এবং পরে অন্যত্র গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে বড়দিনের প্রাক্কালে। সার্ভে পার্ক থানা এলাকায় গুলি-কাণ্ডের পুলিশি তদন্তে এই তথ্য সামনে এসেছে।
এই ঘটনায় আগেই হালিম মণ্ডল-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। রাকেশ সর্দার নামে আরও এক জনকে গ্রেফতারের পরে জেরায় পুলিশ জেনেছে, পানশালায় সোফায় বসা নিয়েই শুধু নয়, বিবাদের মূলে ছিল ৫০০ টাকার ঋণ মেটাতে না পারা নিয়ে টিটকিরিও।
২৫ ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পিন্টু বাগ নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন বলে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশের কাছে খবর যায়। পুলিশ গিয়ে পিন্টুর বয়ান লিপিবদ্ধ করে। তিনি জানান, এক বন্ধুকে নিয়ে হাইল্যান্ড পার্কের কাছে একটি পানশালায় গেলে সেখানে হালিমের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। পিন্টুর দাবি, পানশালার সোফায় বসা নিয়ে বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। বিষয়টি তখনকার মতো মিটে যায়। পরে পানশালার বাইরে বেরিয়ে ফের দু’পক্ষের বচসা হয়। অভিযোগ, সেই সময়ে পিন্টুকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয় হালিম ও তার দলবল। কামালগাজির কুমড়োখালি এলাকায় নিয়ে গিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁকে আটকে রাখা হয়। ওই এলাকাতেই হালিমের বাড়ি। অভিযোগ, বাড়ি থেকে একটি দেশি পিস্তল নিয়ে এসে পিন্টুকে লক্ষ্য করে দু’রাউন্ড গুলি চালায় হালিম। একটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও অন্যটি তাঁর হাতে লাগে। কোনও মতে সেখান থেকে পালিয়ে পরের দিন হাসপাতালে ভর্তি হন পিন্টু।
তদন্তে নেমে সাবির মণ্ডল, হালিম ও মহম্মদ তনবিরকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা। তাদের জেরা করে ধরা হয় রাকেশকে। তাকে জেরা করে মেলে ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি। আগ্নেয়াস্ত্রটিও পুলিশ উদ্ধার করেছে বলে খবর। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, পিন্টু এবং হালিম পূর্ব-পরিচিত। পিন্টুর বিরুদ্ধে অতীতে খুনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি আপাতত জামিনে রয়েছেন।
পুলিশের অনুমান, পানশালায় কে আগে বসার জায়গা পাবেন, তা নিয়ে বিবাদ শুরু হয়েছিল। ৫০০ টাকার ঋণ পিন্টু মেটাচ্ছেন না বলেও পরে কথা ওঠে। সেই সময়েই শুরু হয় হাতাহাতি। ঘটনার একটি ভিডিয়ো ফুটেজও ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও সেই ফুটেজের সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। যেখানে ৫০০ টাকার জন্য গুলি করার অভিযোগ তুলছেন আহত পিন্টু। পিন্টুর দিদি দেবিকা ঘোষের যদিও দাবি, ‘‘যে ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে, সেটি ঘটনার পরে ভোরবেলার। আহত ভাই যখন ফিরছিল, তখন কয়েক জন জিজ্ঞাসা করলে বাঁচতে মিথ্যে বলেছিল ভাই।’’ পুলিশ অবশ্য আহতের পরিবারের এই দাবির পক্ষে তেমন প্রমাণ পায়নি।
বৃহস্পতিবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। সার্ভে পার্ক থানার পাশাপাশি লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগও কামালগাজি ও হাইল্যান্ড পার্কের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তাতেই জানা যায়, পর্যাপ্ত নথি না থাকায় বছরখানেক আগে পানশালাটি পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছিল। তার পরেও এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করার ভাবনাচিন্তা করছে লালবাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy