Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাড়তি পড়ুয়া ভর্তিতে জট, ক্যাম্পাস বদল পরিদর্শকের

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রশাসনিক কাজকর্ম হয় কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসেই। সল্টলেকের ক্যাম্পাসে গুরুত্ব পায় বিজ্ঞান গবেষণা। কলেজসমূহের পরিদর্শক (আইসি) দেবাশিস বিশ্বাসকে হঠাৎ সেখানে পাঠিয়ে দেওয়ায় অনেকেই বিস্মিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৭ ০৩:১৩
Share: Save:

কলেজে কলেজে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তির জন্য তাঁর দিকে প্রকাশ্যেই তর্জনী তুলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শেষ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহের সেই পরিদর্শককে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাস থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো সল্টলেক ক্যাম্পাসে। পদ রইল। তবে তাঁকে এ বার বসতে হবে সল্টলেকে। কাল, শুক্রবার থেকে এই নির্দেশ বলবৎ হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানান।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রশাসনিক কাজকর্ম হয় কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসেই। সল্টলেকের ক্যাম্পাসে গুরুত্ব পায় বিজ্ঞান গবেষণা। কলেজসমূহের পরিদর্শক (আইসি) দেবাশিস বিশ্বাসকে হঠাৎ সেখানে পাঠিয়ে দেওয়ায় অনেকেই বিস্মিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রামপ্রহ্লাদ চৌধুরী বুধবার বলেন, ‘‘প্রশাসনিক কাজের জায়গা থেকে দেবাশিসবাবুকে যে-ভাবে সরিয়ে দেওয়া হলো, তার নিন্দা করছি। বোঝাই যাচ্ছে, পদে রেখেও তাঁর গুরুত্ব খর্ব করা হলো।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা অবশ্য জানান, আইসি আপাতত দু’টি ক্যাম্পাসেই বসতে পারবেন। যদিও সল্টলেকই তাঁর প্রধান অফিস। এখন কর্মীরা কলেজ স্ট্রিটেই থাকবেন। পরে পুরো বিভাগই যাবে সল্টলেকে। উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ মুখ খুলতে চাননি। দেবাশিসবাবু জানান, তিনি নির্দেশ হাতে পাননি। তাই মন্তব্য নয়।

কলেজে বাড়তি পড়ুয়া চলবে না বলে শিক্ষামন্ত্রী বারবার জানানো সত্ত্বেও ভর্তি-সমস্যার সুরাহা হয়নি। গত সপ্তাহে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে বাস উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে পার্থবাবু বলেন, দু’হাজার আসনে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে ছ’হাজার পড়ুয়া। শ্রেণিকক্ষে সকলকে বসতে দেওয়া যাচ্ছে না। তিনি মঞ্চ থেকেই আইসি-কে খুঁজতে থাকেন। দেবাশিসবাবু দর্শকাসন থেকে উঠে দাঁড়ালে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘এর জন্য উনিই দায়ী। পর্যাপ্ত ক্লাসরুম না-থাকায় ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি তলানিতে ঠেকছে।’’

তার পরেই আইসি-কে সল্টলেকে পাঠানোর সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ ক্ষুব্ধ। বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, বাড়তি ছাত্র ভর্তির প্রধান কারিগর তৃণমূল এবং টিএমসিপি। তাদের দাপটের কথা তো মন্ত্রীর অজানা নয়। অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তিতে যে ছাত্র সংসদগুলিরও হাত আছে, সে-কথা বারবার বলে আসছেন তিনি। তা ছাড়া পার্থবাবুই তো কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ছাত্র ভর্তির সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছেন।

শিক্ষাজগতের বক্তব্য, কলেজগুলি যে-ভাবে নিজেদের মতো অনলাইনে ছাত্র ভর্তি নেয়, তাতে স্বচ্ছতা থাকতে পারে না। অধিকাংশ কলেজে টিএমসিপি-র দাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউই দাঁড়াতে পারছেন না। দেবাশিসবাবুও তার ব্যতিক্রম নন। অভিযোগ উঠছে, বাড়তি ছাত্র ভর্তি হয়েছে, এমন দু’টি কলেজের অধ্যক্ষেরা সরকারের খুবই ঘনিষ্ঠ। নিজেদের কলেজে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি হচ্ছে দেখেও তাঁরা কেন চুপ করে ছিলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE