Advertisement
E-Paper

কুমোরটুলির খরা কাটাতেও সহায় বিদ্যাসাগর

মূর্তি ভাঙা নিয়ে যখন উত্তপ্ত রাজ্য তথা দেশের রাজনীতি, তখনই কুমোরটুলিতে নীরবে শুরু হয়েছে মূর্তি গড়ার যুদ্ধ। তা-ও শুধুই মনীষীদের। এর মধ্যে বিদ্যাসাগরের মূর্তি তৈরি করতে চেয়েই একাধিক বায়না আসছে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০২:১২
শুভ্র: কুমোরটুলিতে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে রঙের পোঁচ। নিজস্ব চিত্র

শুভ্র: কুমোরটুলিতে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে রঙের পোঁচ। নিজস্ব চিত্র

এক মূর্তির মাথা কাটা যাওয়ার পরে খরা কাটছে কুমোরটুলিতে। অসময়ে এ ভাবে মন্দা কাটায় খুশিই কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা।

মূর্তি ভাঙা নিয়ে যখন উত্তপ্ত রাজ্য তথা দেশের রাজনীতি, তখনই কুমোরটুলিতে নীরবে শুরু হয়েছে মূর্তি গড়ার যুদ্ধ। তা-ও শুধুই মনীষীদের। এর মধ্যে বিদ্যাসাগরের মূর্তি তৈরি করতে চেয়েই একাধিক বায়না আসছে। কিছু দিন আগেই শ্যামপুকুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা নিজে কুমোরটুলি পাড়ায় গিয়ে বিদ্যাসাগর-সহ তিন বাঙালি মনীষীর মূর্তি কিনে নিয়ে গিয়েছেন।

শুধু মন্ত্রীই নন, বিদ্যাসাগরের মূর্তি তৈরির বায়না নিয়ে অসময়ে কুমোরটুলিতে আসছে হাওড়ার দুর্গাপুজো কমিটি-সহ শহরের বিভিন্ন ক্লাব। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আয়োজন করে বেলুড়ের পশ্চিম সাঁপুইপাড়া পল্লি উন্নয়ন সমিতি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা পোদ্দার বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর বাঙালির গর্ব। তাঁর মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে আমরা ক্লাব প্রাঙ্গণে বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি বসাব। এ জন্য কুমোরটুলির শিল্পীকে বায়না দিয়ে এসেছি।’’ গড়িয়ার একটি পুজো কমিটির সহ-সভাপতি তরুণ কুমার দাসের কথায়, ‘‘বাঙালিয়ানা মুছে ফেলতে কেউ কেউ উঠেপড়ে লেগেছেন। এই আস্ফালনের জবাব হিসাবে একাধিক মূর্তি বসানোর পণ করেছি।’’ তিনি জানান, রুবি মোড়ে বিদ্যাসাগর ছাড়াও নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দের মূর্তি বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কথা চলছে কুমোরটুলির শিল্পীদের সঙ্গে। উত্তর কলকাতার শিকদার বাগানের আরও এক পুজোকর্তা বিশ্বনাথ সাহার কথায়, ‘‘আমরা ক্লাবে বিদ্যাসাগরের মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শোলাশিল্পী রঞ্জিত সরকার বলেন, ‘‘শিল্পীদের কাছে এই সময়টা খরার মরসুম। বেশ কিছু দিন ধরে বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বিবেকানন্দ-সহ একাধিক বাঙালি মনীষীর মূর্তি তৈরির বায়না আসছে। অসময়ে কাজ পাওয়াটা কুমোরটুলির শিল্পীদের কাছে অবশ্যই বড় খুশির খবর।’’ কুমোরটুলিতে ফাইবারের মূর্তি গড়েন মন্টি পাল। মূর্তি ভাঙার পরে তিনি বিদ্যাসাগরের একটি মূর্তি বানিয়ে ফেলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মূলত ফাইবারের মূর্তিই বানাই। যে দিন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হল, সেই দিন থেকে ফাইবারের মূর্তি বানানোর বায়না আসছে।’’ কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বাবু পালের কথায়, ‘‘বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পরে মূর্তি গড়ার বায়না দিতে একের পর এক ফোন আসছে।’’

রঞ্জিতবাবুর কথায়, ‘‘বিদ্যাসাগর নিয়ে বাঙালির আবেগ যে কতটা, তা এই সময়ে বোঝা যাচ্ছে। ঘরের দেওয়ালে রাখতে এখনও পর্যন্ত আমার কাছেই দশটি শোলার বিদ্যাসাগর গড়ার বায়না এসেছে। এমন বায়না শিল্পী হিসেবে প্রথম অভিজ্ঞতা!’’

Kumortuli Vidyasagar Vidyasagar Statue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy