E-Paper

স্কুল ও পড়ুয়াদের ত্রাতা হয়েই ‘শিক্ষারত্ন’ পাচ্ছেন ত্রয়ী শিক্ষক

স্কুলে গতানুগতিক পড়ানোর বাইরে গিয়ে এমন কিছু বিশেষ কাজ করেছেন যে, এ বারের শিক্ষারত্ন সম্মান দেওয়া হচ্ছে খাস কলকাতার সেই তিন শিক্ষককে।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৩
An image of Students

—প্রতীকী চিত্র।

ইংরেজি নিয়ে পড়ুয়াদের ভয় কাটিয়ে পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেতে তাদের সহায় হয়েছেন কোনও শিক্ষক। কেউ আবার পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকতে থাকা স্কুলকে চাঙ্গা করে তুলেছেন। স্কুলে গতানুগতিক পড়ানোর বাইরে গিয়ে তাঁরা এমন কিছু বিশেষ কাজ করেছেন যে, এ বারের শিক্ষারত্ন সম্মান দেওয়া হচ্ছে খাস কলকাতার সেই তিন শিক্ষককে। এ বছর রাজ্য জুড়ে যে ২৫ জন শিক্ষকের ওই সম্মান পাওয়ার কথা, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ওঁরা— মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে, কুমার আশুতোষ ইনস্টিটিউশন (মেন) বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কড়েয়া
গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক। আগামী কাল, মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসে ওই সম্মান গ্রহণ করবেন তাঁরা।

ধুঁকতে থাকা স্কুলকে ফের চাঙ্গা করে তার পড়ুয়া-সংখ্যা বৃদ্ধি করার কাজটা ‌সহজ ছিল না বর্তমানে মিত্র ইনস্টিটিউশন ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে-র কাছে। ২০১৪ সালে হাওড়ার বেলেপোল বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মাধ্যমিক পর্যন্ত ওই স্কুলে পড়ুয়া ছিল ৬০-৬৫ জন। সে সময়ে বেলেপোল থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পেরিয়ে অনেক পড়ুয়াই কলকাতার স্কুলে পড়তে চলে আসছিল। দ্বিতীয় হুগলি সেতু পেরোলেই কাছাকাছি একাধিক ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। শিক্ষক মহলের একাংশ জানাচ্ছেন, সে সময়ে স্কুলছুট পড়ুয়ারা কেন স্কুলে যাচ্ছে না, তা দেখতে টোটো করে রীতিমতো তাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরেছিলেন রাজা। পরিকাঠামোর উন্নতি করতে স্কুলে কম্পিউটার বসিয়ে তা শেখানোর ব্যবস্থাও করেন। শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘স্কুলের পঠনপাঠনে ইনফর্মেশন ও কমিউনিকেশন টুলস ব্যবহার করে উনি স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নতি করেছেন।’’ শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বেলেপোলের ওই স্কুলে রাজা প্রধান শিক্ষক থাকার সময়ে পড়ুয়া-সংখ্যা ৬০ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৬০-এ। মাধ্যমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয় স্কুলটি। এর পরে অবশ্য মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখায় বদলি হন রাজা। সেখানেও করোনা-কালে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন তিনি।

দমদম স্টেশন সংলগ্ন কুমার আশুতোষ ইনস্টিটিউশন (মেন) বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা এর আগে ছিলেন বনহুগলির আনন্দ আশ্রম স্কুলে। সেখানে সহকারী শিক্ষিকা পদে থাকাকালীন পড়ুয়াদের ইংরেজি-ভীতি কাটানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি। অর্পিতা জানান, বাংলা মাধ্যমের ওই পড়ুয়াদের মন থেকে ইংরেজির ভয় কাটাতে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া শুরু করেন। যত দিন ওই স্কুলে ছিলেন অর্পিতা, তত দিন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে সেখান থেকে কেউ ইংরেজিতে ফেল করেনি। এমনকি, অধিকাংশই ইংরেজিতে ৮০ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেতে শুরু করে। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন অর্পিতা যে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, সেখানে প্লাস্টিক বর্জন, সৌর প্যানেল ব্যবহার, বৃষ্টির জল জমিয়ে নানা কাজ করা, গ্রিন স্কুল তৈরি করার পিছনেও তাঁর অবদান অনেক।’’

কড়েয়া গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল উর্দু মাধ্যমে শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বলে জানাচ্ছেন শিক্ষা দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানান, উর্দু মাধ্যমে পড়ুয়ার সংখ্যা-বৃদ্ধির পিছনে অনেক অবদান রয়েছে তাঁর।
করোনা-কালে মিড ডে মিল বণ্টনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন আব্দুল। তৈরি করেছেন স্মার্ট ক্লাসরুমও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

School Teachers Students

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy