রাস্তায় পড়ে ‘সুন্দরম’-এর জিনিসপত্র।—নিজস্ব চিত্র।
বর্যীয়ান অভিনেতা, নাট্যকার মনোজ মিত্রর নাট্যগোষ্ঠি ‘সুন্দরমে’র নাটকের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সেট ভেঙেচুরে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে নাটকের প্রযোজনা সংক্রান্ত বেশ কিছু নথিপত্র ও স্ক্রিপ্ট নষ্ট করে ফেলা হয়েছে বলে এই নাট্যগোষ্ঠীর তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
আর এই প্রসঙ্গেই সামনে এসেছে, যে বাড়িতে সুন্দরমের মহলাকক্ষ ও গুদাম, সেই বাড়ির মালিকের সঙ্গে এই নাট্যগোষ্ঠীর দীর্ঘদিন ধরে চলা বিবাদ এবং তা নিয়ে চলা মামলার প্রসঙ্গ।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার যতীন দাস রোডের একটি তিনতলা বাড়ির একতলায় বিগত কয়েক দশক ধরে ভাড়া নিয়ে রয়েছে সুন্দরম নাট্যগোষ্ঠী। একটা সময় ‘সুন্দরম’-এর সমস্ত নাটকের রিহার্সাল হত এই বাড়িতেই।
সুন্দরম নাট্যগোষ্ঠীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে কয়েকজন এই বাড়ির একতলার ওই ঘর থেকে তাঁদের নাটকের সরঞ্জাম, গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সেট ভেঙেচুরে রাস্তায় ফেলে দেয়। এই ঘটনায় শিল্পী খালেদ চৌধুরির তৈরি বেশ কয়েকটি সেটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নাট্যগোষ্ঠীর সদস্যরা জানতে পারেন, আদালতের নির্দেশেই নাকি এমনটা করা হয়েছে বাড়াওয়াল পক্ষ থেকে। সুন্দরম-এর অভিযোগ গোটা বিষয়টি জানানোই হয়নি স্থানীয় রবীন্দ্র সরোবর থানায়। যদিও ওই বাড়ির মালিক পক্ষের দাবি, যা হয়েছে তা আদালতের নির্দেশেই করা হয়েছে। আদালত থেকে পাঠানো লোকজনেই সুন্দরম-এর জিনিসপত্র বাইরে বের করে দেয়।
আরও পড়ুন: হেডস্যরকে ঘেরাও, হুমকি ছাত্রছাত্রীদের
যতীন দাস রোডের এই এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা এই বসু পরিবার। বাড়ির মালিক পক্ষের তরফে গোপা বসু জানান, প্রায় ষাট বছর আগে সুন্দরম নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের রিহার্সালের জায়গা হিসেবে বাড়িভাড়ার চুক্তি হয় তাঁর শাশুড়ি গৌরি বসুর। তিনিই সুন্দরম-কে এ বাড়িতে ঘরভাড়া দেন। গোপাদেবী আরও জানান, একটা সময় এই পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল সুন্দরম সদস্যদের। কিন্তু বছর খানেক আগে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ান দলের এক সদস্য।
গোপাদেবীর কথায়, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে এই বাড়িতে কোনও রিহার্সাল করতেন না এই নাট্যগোষ্ঠীর সদস্যরা। বাড়ির একতলাটা মালপত্রের গুদাম বানিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। সাম্প্রতিক অতীতে পরিবারের সদস্যদের জায়গার অভাবে সুন্দরম-কে ঘর ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন তাঁরা। কিন্তু সে অনুরোধে কোনও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়েই আদালতের দাবরস্থ হতে হয় তাঁদের।
‘সুন্দরম’-এর জিনিসপত্রের উপর সাঁটানো আদালতের নোটিশ।
এ দিকে সুন্দরম-এর এক সদস্য শঙ্কর সরকারের অভিযোগ, বাড়ির একলতাতেই আরেকটি নাট্যগোষ্ঠীর রিহার্সাল চলে। জায়গার অভাবের অজুহাত দেখিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে তোলার চেষ্টা চলছে। এই উচ্ছেদের নির্দেশ সম্পর্কে তাঁরাও খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান শঙ্করবাবু।
এ ব্যপারে ‘সুন্দরম’-এর কর্ণধার মনোজ মিত্র বলেন, “গোটা বিষয়টি লিখিতভাবে থানায় জানানো হয়েছে। বাড়িওয়ালা ভাড়া নিতেন না বলে আমরা ‘রেন্ট কন্ট্রোল’-এ ভাড়া জমা দিতাম। আদালতের রায় সবিস্তারে না জেনে এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy