শীতের ভোরে কুয়াশা হবে, সেটাই স্বাভাবিক। তার কারণে প্রতি বছরই বিমানের সময়সূচিতে কিছু অদলবদল হয়। কিন্তু রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে যা হল, তা সম্ভবত আগে দেখা যায়নি। একটি-দু’টি নয়, কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা ভীষণ ভাবে কমে যাওয়ায় কলকাতায় নামতে না পেরে অন্যত্র ঘুরে গেল ৯টি বিমান।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৭টা থেকে আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। আটটা নাগাদ দৃশ্যমানতা এক ধাক্কায় নেমে আসে ৫০ মিটারে। সকালে ওই সময়ে পুণে, হায়দরাবাদ, আমদাবাদ, দিল্লি, মুম্বই থেকে উড়ে বিমানগুলি কলকাতায় নামতে আসে। কিন্তু, কলকাতার আবহাওয়া এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে ৯টি বিমানের মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দিতে হয়।
কলকাতায় এসে নামতে না পারা বিমানগুলির বেশিরভাগই ছিল ইন্ডিগো-র। এর ফলে সকাল থেকে ওই সংস্থার উড়ানসূচি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। বিমানবন্দরের এক অফিসার জানিয়েছেন, কলকাতায় নামতে না পেরে অধিকাংশ বিমানই চলে যায় ভুবনেশ্বর, নাগপুর। সকাল সাতটার পরে কলকাতা থেকে ছাড়ার বিমানগুলিও খারাপ আবহাওয়ার জন্য দেরিতে ছাড়ে। ফলে সকাল থেকে কলকাতায় আসা যাত্রীরা যেমন সমস্যায় পড়ে যান, তেমনই কলকাতা থেকে অন্য শহরের উড়ান ধরতে চাওয়া যাত্রীদেরও বিমানবন্দরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। যে বিমানগুলি কলকাতায় নামতে না পেরে অন্যত্র উড়ে গিয়েছিল, সকাল ন’টার পরে আবহাওয়া একটু ভালো হতেই তারা ফিরতে শুরু করে।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এখন প্রতি দিন সকাল দশটা পর্যন্ত প্রধান রানওয়েতে বিমান ওঠানামা করছে। তার পরে সেই রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হচ্ছে এবং দ্বিতীয় রানওয়ে চালু হচ্ছে। প্রধান রানওয়ে আবার চালু হচ্ছে রাত ৮টার পরে।
কুয়াশা থাকলেও যাতে বিমান সহজে ওঠা-নামা করতে পারে, তার জন্য প্রধান রানওয়েতে ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) রয়েছে। উন্নত এই ব্যবস্থা থাকার জন্য ৩০০ মিটার দৃশ্যমানতাতেও বিমান সহজে নামতে পারে।
কিন্তু প্রধান রানওয়েতে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলায় আইএসএল ব্যবস্থা এ দিন কার্যকর করা যায়নি। তাই দৃশ্যমানতা ৫৫০ মিটারের নীচে নামতেই কলকাতায় নামতে আসা বিমানগুলিকে অন্যত্র ঘুরিয়ে দিতে হয় বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে।