তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়াল জোড়াবাগান এলাকায়।
শহর জুড়ে আজ স্বামী বিবেকানন্দের জন্মোৎসব পালিত হচ্ছে। অনুষ্ঠান চলছে বিবেকানন্দের সিমলার বাড়িতে। আনন্দোৎসবের মাঝে স্বামীজির ভিটে থেকে কয়েকশো মিটারের মধ্যেই শুক্রবার রক্তাক্ত হল কলকাতা। তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল জোড়াবাগান, পাথুরিঘাটা।
তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে সকাল থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে জোড়াবাগান। বিজেপির মিছিলে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি, এলাকায় বিজেপি কর্মীরা তাণ্ডব চালিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূল। জোড়াবাগান থেকে ক্রমশ অশান্তি ছড়িয়েছে পাথুরিঘাটা স্ট্রিট, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতেও। অশান্তির জেরে বেশ কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ ছিল সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
হাইকোর্টের অনুমতি পেয়ে কাঁথি থেকে কোচবিহার পর্যন্ত বাইক মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছিল রাজ্য বিজেপি-র যুব মোর্চা। ‘প্রতিরোধ সঙ্কল্প অভিযান’ নামে ওই কর্মসূচি উপলক্ষে গতকাল রাত থেকে জোড়াবাগানের বিনানি ভবনে জমায়েত হয়েছিল কয়েক জন বিজেপি কর্মী সমর্থক। শুক্রবার সকালে সেখান থেকেই মিছিল করার কথা ছিল তাদের।
বিজেপি কর্মীকে মারধর (বাঁ দিকে)। আদালত নিযুক্ত পর্যবেক্ষকের গাড়িতে ভাঙচুর (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির দাবি, এ দিন সকালে তাদের কর্মী সমর্থকেরা যখন মিছিলের জন্য জোড়াবাগান এলাকায় জমায়েত হচ্ছিল, তখন তাদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। গেস্টহাউসের ভিতর কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে আটকে রাখার অভিযোগও ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কিন্তু, সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে তৃণমূল। পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা মত্ত অবস্থায় পথচলতি মহিলাদের কটূক্তি করছিল। তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তৃণমূল।
আরও পড়ুন:
স্কুলগাড়িতে বাসের ধাক্কা নিউ টাউনে
এরপরই বাঁশ, লাঠি নিয়ে পাথুরিঘাটা স্ট্রিটে তাণ্ডব চালায় বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। একাধিক গাড়ির কাঁচ ভাঙা হয়। ভাঙচুর চালানো হয়েছে এলাকার দোকানগুলিতেও। স্থানীয় বাসিন্দাদের উপরেও বিজেপি কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। এক স্থানীয়ের কথায়, ‘‘হামলার পরিকল্পনা করে এলাকায় ঢুকেছিল বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। গত কাল রাত থেকেই মত্ত অবস্থায় কয়েজন বিজেপি কর্মী এলাকায় অশান্তি করছিল।’’ বাইরে থেকে দলবল নিয়ে এসে বিজেপি হামলা চালিয়েছে এলাকায়, দাবি অপর এক স্থানীয়ের। জোড়াবাগান থেকে অশান্তি ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতেও। রাজপথে নেমে ফের সংঘর্ষে জড়ায় দু’পক্ষ। পরস্পরকে লক্ষ করে চলে ইটবৃষ্টি। হামলা চালানো হয় আদালতের নিযুক্ত পর্যবেক্ষকের গাড়িতেও। তিনি বলেছেন, ‘‘সকাল সাড়ে ১১টা শুরু হয় মিছিল। দু’টি পুলিশের গাড়ির মাঝে আমার গাড়ি ছিল। মহম্মদ আলি পার্কের কলাবাগানের কাছে আমার গাড়িতে হামলা হয়। ২০-২৫ জন মারমুখী লোক এসে আমার গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেয়। মিছিল বন্ধ করে, পুলিশের সাহায্যে ফিরি।’’ আদালতে এই বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করেছেন তিনি।
এ দিনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিধায়ক শশী পাঁজা বলেছেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়েছে বিজেপি। শান্তিপূর্ণ ভাবে স্বামীজির জন্মদিন পালন করছিলাম আমরা। তার মাঝেই, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করল বিজেপি।’’ অন্যদিকে, তৃণমূলের সব অভিযোগই অস্বীকার করে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘আমরা মিছিলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। তখন হামলা চালায় তৃণমূল। আমাদের কয়েকজন কর্মীকে আটকে রাখা হয়েছিল। স্থানীয় ছেলেরা শুধু তাদের ছাড়াতে গিয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy