Advertisement
E-Paper

যা-ই লিখুন, আমার কিছু যায়-আসে না

লালবাজার জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইএসডি)-কে পুলিশ নিগ্রহের তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। তিনি তদন্তকারী অফিসারও ঠিক করে দিয়েছেন। কিন্তু তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে ‘নির্দোষ’ বলায় প্রশ্ন উঠেছে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২৬

পুলিশ পেটানোর অভিযোগে লালবাজারের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু তাতেও বিন্দুমাত্র দমেননি কলকাতা পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুন্ডু। মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের পাশে দাঁড়িয়ে একের পর এক পুজোর উদ্বোধনই শুধু করেননি, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে কদর্য ভাষায় গালাগালও করেছেন।

লালবাজার জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইএসডি)-কে পুলিশ নিগ্রহের তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। তিনি তদন্তকারী অফিসারও ঠিক করে দিয়েছেন। কিন্তু তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে ‘নির্দোষ’ বলায় প্রশ্ন উঠেছে।

তাঁর বিরুদ্ধে যখন তদন্ত চলছে, তখন কী ভাবে তিনি পুজো উদ্বোধন করেন, তা জানতে মঙ্গলবার ওই কাউন্সিলরকে ফোন করা হয়। তিনি অত্যন্ত কদর্য ও কুরুচিকর ভাষায় প্রতিবেদককে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘যতই লিখুন, আমার কিছু আসে যায় না।’’ ঘটনার পরে শনিবার ওই কাউন্সিলর জানান, ওই পুলিশ অফিসারের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়েছিল মাত্র। ঘটনাস্থলে হাজির থাকার কথা স্বীকার করলেও মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দেন তিনি।

শনিবারই মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেছিলেন, ‘‘এমন ঘটলে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দলের কাউন্সিলর পুলিশের গায়ে হাত তুলছেন, এটা বরদাস্ত করা যায় না।’’ সেই সাধনবাবুই এ দিন বলেন, ‘‘তদন্ত করে দেখেছি, বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার সময়ে কাউন্সিলর ছিলেনই না।’’

মন্ত্রীর এমন মন্তব্যে জোড়াসাঁকো থানার নিগৃহীত পুলিশ অফিসার রুদ্র শেখরের সহকর্মীরা অবাক। তাঁরা বলছেন, ঘটনাস্থলে তিনি যে ছিলেন, তা তো শান্তিরঞ্জনবাবু নিজেই স্বীকার করেছেন। মন্ত্রী তদন্তের আগেই কাউন্সিলরকে নির্দোষ বলে দিলে তো তদন্তেরই দরকার হয় না। পুলিশি তদন্তের মধ্যেই যে ভাবে অভিযুক্ত কাউন্সিলর পরপর পুজো উদ্বোধন করেছেন, তাতে অবাক তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দারাই। ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘আমি নিজে কাউন্সিলরকে ঘটনার সময়ে দেখেছি। তার পরেও যে ভাবে তিনি পুজো উদ্বোধন করে বেড়াচ্ছেন, তা লজ্জার।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ মানিকতলা মেন রোড দিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে বেলেঘাটায় বাড়িতে ফিরছিলেন রুদ্র শেখর। মানিকতলা রেল ব্রিজ পেরোনোর পরে রুদ্রবাবুর বাইকের পিছনে দ্রুত গতিতে একটি গাড়ি চলে আসে। তাতে ছিলেন শান্তিরঞ্জনবাবু। কেন তাঁর গাড়িকে রাস্তা দেওয়া হল না, তা নিয়ে প্রথমে গাড়ির চালক ওই পুলিশ অফিসারের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ, এর পরে গাড়ি থেকে নেমে পুলিশ অফিসারের সঙ্গে তর্কে জড়ান কাউন্সিলরও।

লালবাজার সূত্রে অভিযোগ, কাউন্সিলরের অনুগামীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই পুলিশ অফিসারকে হেনস্থা করেন। এর পরে জোর করে পাশের একটি ক্লাবে নিয়ে গিয়ে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, পুলিশের এক হোমগার্ডও নিগ্রহকারীদের মধ্যে ছিলেন। নিজের পরিচয়পত্র দেখিয়েও রেহাই পাননি রুদ্রবাবু।

লালবাজার সূত্রে বলা হয়, কেন ওই অফিসারকে নিগৃহীত হতে হল, কারা জড়িত, সব কিছু খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে ডিসি (ইএসডি)-কে। তাঁর রিপোর্ট পেয়েই আইনি প্রক্রিয়া শুরু করবে লালবাজার। মঙ্গলবার ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দত্তের কাছে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি মন্তব্য করেননি। তবে লালবাজার সূত্রে খবর, পুজো মিটলেই তদন্ত গতি পাবে।

TMC Councillor Accused Abuse Journalists শান্তিরঞ্জন কুন্ডু
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy