স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে ফ্ল্যাটে একাই ছিলেন সঞ্চিতাদেবী। সায়ন বাড়ি ফিরে মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে। দেড়টা নাগাদ আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই কাউন্সিলরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। সঞ্চিতাদেবীর বাবা আর এন গিরি জানিয়েছেন, তাঁরা দুপুরে মেয়ের অসুস্থতার খবর পান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ডানকুনির বাড়ি থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন। মাঝপথে সঞ্চিতাদেবীর মৃত্যুর খবর আসে। কাউন্সিলরের বাবা বলেন, ‘‘কী হল, কিছুই বুঝতে পারছি না। সবই তো ঠিক ছিল।’’
কাউন্সিলরের মৃত্যুর খবর পেয়ে আরজিকর হাসপাতালে জড়ো হন কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। আসেন বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু, দক্ষিণ দমদম, দমদম ও বিধাননগর পুর এলাকার অন্য কাউন্সিলর-নেতারা।
বিকেলেই ময়না-তদন্ত শেষ হয়।
যদিও তা নিয়ে হাসপাতালে ময়না-তদন্তের অপেক্ষায় থাকা অন্য মৃতদের পরিজনদের একাংশ অভিযোগ, প্রশাসনের কারও মৃত্যু হলে দ্রুত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কিন্তু সাধারণের ক্ষেত্রে ময়না-তদন্ত করে দেহ পেতেই দিন কাবার হয়ে যায়।
কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃত সঞ্চিতা দত্তের মা ইন্দিরা গিরি। রবিবার, আরজিকর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
কাউন্সিলরের মৃত্যু নিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মুখে কুলুপ আঁটলেও কয়েকটি প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নিজের ওয়ার্ডেই পুরসভার কাজে ব্যস্ত ছিলেন সঞ্চিতাদেবী। ১২টার কিছু আগে ফ্ল্যাটে ফেরেন তিনি। তার পরেই এই ঘটনা বলে অনুমান। প্রশ্ন উঠেছে, কাউন্সিলরের ফ্ল্যাটের দরজা কি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল, না খোলা ছিল? সায়নই বা কী ভাবে ঘরে ঢুকল? তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। যদিও সায়ন জানিয়েছে, ঘরে ঢুকে সে মায়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়। তবে বিধাননগর পুলিশের তরফে এখনও এ নিয়ে কোনও বক্তব্য মেলেনি।
এ দিন হাসপাতালে বিধায়ক সুজিতবাবু বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। খুব ভাল কাজ করছিলেন সঞ্চিতা। এ দিনও সকালে পুরসভার কাজে বেরিয়েছিলেন।’’ দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ক’দিন আগে কাউন্সিলরদের বৈঠকেই কথা হল। এমনটা ভাবতেই পারছি না।’’
কাউন্সিলরের এই অস্বাভাবিক মৃত্যু আত্মহত্যা বলে জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা দমদমে। যদিও দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (নিকাশি) দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাবতেই পারছি না। সঞ্চিতা এমন কাজ করতেই পারেন না। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন।’’