Advertisement
E-Paper

টালিগঞ্জের দুর্ঘটনায় চালক আসলে ‘খুনি’ই

নিছক অমানবিকতা নয়, এ হল খুন। ঠান্ডা মাথায়, পরিকল্পনা করে। সোমবার টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে দুর্ঘটনায় জখম যুবক শেখ সালিমকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নামে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনায় অভিযোগের আঙুল গাড়ির চালকের দিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০২:১৫

নিছক অমানবিকতা নয়, এ হল খুন। ঠান্ডা মাথায়, পরিকল্পনা করে।

সোমবার টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে দুর্ঘটনায় জখম যুবক শেখ সালিমকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নামে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনায় অভিযোগের আঙুল গাড়ির চালকের দিকে। মনোবিদ থেকে শুরু করে সমাজতত্ত্ববিদ, সমাজকর্মী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক— সকলের মতে কোনও রকম মনোরোগের তত্ত্ব এ ক্ষেত্রে খাড়া না করাই ভাল।

সমাজতত্ত্ববিদ প্রশান্ত রায় জানান, গাড়িচালকের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও অপরাধপ্রবণতা বিস্মিত করার মতো। যে হেতু ভোরে দেহটি রাস্তায় ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, তাই ধরা যায় চালক সারা রাত দেহটি ফেলার সুযোগ খুঁজেছেন। অর্থাৎ, এক জন অর্ধমৃত বা মৃত মানুষকে নিয়ে ঘুরেছেন। তিনি বলেন, ‘‘খুব ধারালো মস্তিষ্কের অপরাধীর কাণ্ড এটা।’’

সমাজবিদদের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি দেখিয়ে দিচ্ছে আপাত-নিরীহ মানুষই অপরাধে দড় হয়ে উঠছে। কোথাও গলার নলি কেটে খুন, কোথাও বা প্রেমিকাকে খুন করে বাক্সে ভরে কঙ্কাল করে ফেলা। প্রশান্তবাবুর পর্যবেক্ষণ, ‘‘শাস্তি পাওয়ার ভয় কমছে। ফলে চার পাশের আবহটাই অপরাধের উপযোগী হয়ে উঠছে।’’

মনোবিদ জয়রঞ্জন রামও মনে করেন, মানসিক জটিলতা নয়, এটি অপরাধ। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এ ধরনের ঘটনার আকস্মিকতায় সাধারণত ভয় পেয়ে পালাতে চেষ্টা করেন চালক। কিন্তু ঘটনার পরে জনরোষ থেকে বাঁচতে এত বড় নাটক, তার পরে দেহ ফেলে দেওয়া— এ মানসিক বিকৃতি নয়। ঠান্ডা মাথায় খুন।’’ তবে পরিস্থিতির চাপেও যে চালক এমনটা করতে পারেন, তা উড়িয়ে দিচ্ছেন না মনস্তত্ত্ববিদ অনিরুদ্ধ দেব। বললেন, ‘‘এমনও হতে পারে, গাড়িতে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। হাসপাতালে গিয়ে ঝামেলায় জড়াতে পারেন, আশঙ্কাতেই হয়তো চালক ওই কাজ করেন।’’

সমাজকর্মী দোলন গঙ্গোপাধ্যায়। বলেন, ‘‘চালকের অপরাধ মারাত্মক। তবে বোঝা যায়, সমাজের অবক্ষয় কোথায় পৌঁছলে এমনটা ঘটে।’’ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া, ‘‘আতঙ্কিত বোধ করছি। এমন ঘটনা প্রথম শুনলাম। এটা কলকাতার চরিত্র নয়।’’ তবে অন্য একটি সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘যদি ভাবি যে গাড়িতে তোলার কিছু পরেই যুবক মারা যান, তা হলে হয়তো ওই চালক ভয়ে এমনটা করেছেন। তবু এ কাজ মনুষ্যোচিত নয়।’’

Tollygunge accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy