Advertisement
১৮ মে ২০২৪

যান-দুর্ভোগ মহিষবাথান এলাকায়

২১ বছর আগে সামগ্রিক উন্নতি ঘটাতে রাজারহাট ও ভাঙড়ের তিনটি এলাকাকে বিধাননগর পুরসভার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু আজও সেই সব এলাকায় পরিবহণ ব্যবস্থা বলতে কিছুই গড়ে ওঠেনি। দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

কাজল গুপ্ত
শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৬ ০০:২৮
Share: Save:

২১ বছর আগে সামগ্রিক উন্নতি ঘটাতে রাজারহাট ও ভাঙড়ের তিনটি এলাকাকে বিধাননগর পুরসভার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু আজও সেই সব এলাকায় পরিবহণ ব্যবস্থা বলতে কিছুই গড়ে ওঠেনি। দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

বাম আমল থেকে শুরু করে তৃণমূল জমানা— বিধাননগর পুর-নিগমের চিত্রটা বদলায়নি। পুরকর্তাদের দাবি, পরিবহণের বিষয় পুর-পরিষেবার মধ্যে না পড়লেও রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে আগে আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনেও কথা বলা হবে। তবে নির্বাচনী বিধির কারণে দফতরের কর্তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এলে বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন এক কর্তা।

পুর-নিগমের ২৮, ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকাগুলিতে হাঁটা, সাইকেল ও বাইকের উপরেই নির্ভরশীল স্থানীয়েরা। হালে শুধু বাইপাসের কাছে শান্তিনগর থেকে ছয়নাবি পর্যন্ত অটো চালু হয়েছে। এ দিকে, বসতি বাড়ায় এলাকায় জনসংখ্যাও বেড়েছে। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকাতেও ক্রমশ বহুতলের সংখ্যা বাড়ছে। শুরু হয়েছে মধ্যবিত্তদের বসবাসও। কিন্তু অভিযোগ, পরিবহণ নিয়ে প্রশাসনের কোনও মাথা ব্যথা নেই। বাসিন্দাদের একাংশের কথায়, এলাকায় সর্বত্র বাস চলাচলের রাস্তা নেই। কিছুটা অংশে অটো চলাচল করে বটে, কিন্তু কুলিপাড়া, বারোকপাট, সর্দারপাড়া, পোলেনাইটের মতো এলাকা থেকে রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে বা ইএম বাইপাসের দূরত্ব কোথাও সাড়ে তিন, আবার কোথাও সাড় সাত কিলোমিটার। ওই দূরত্ব পার হওয়ার মতো কোনও পরিবহণ ব্যবস্থাই নেই এলাকায়।

৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শোভা মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকার অনেক ছেলে-মেয়ে বেলেঘাটা ও সল্টলেকের স্কুলে পড়ে। পায়ে হাঁটা ছাড়া গতি নেই। কবে যে এলাকায় বাসের মুখ দেখব কে জানে?’’ এমন প্রতীক্ষা সকলেরই। কিন্তু প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের কথায়, ভেড়ি অধ্যুষিত এলাকাতে সর্বত্র বাস চলবে এমন অবস্থা নেই। ইচ্ছা থাকলেও রাস্তা সম্প্রসারণে জায়গা নেই। বিশেষত কুলিপাড়ার মতো প্রান্তিক এলাকায় রাস্তা বাড়ানো খুবই মুশকিলের।

ফলে ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে এক দিকে খাসমহল, অন্য দিকে কুলিপাড়া, আবার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে মহিষবাথান, পোলেনাইট, বুনোপাড়া, সর্দারপাড়া, বারোকপাট এলাকাতে সব মিলিয়ে প্রায় ২০-২২ কিলোমিটার রাস্তায় পরিবহণের কার্যত কোনও ব্যবস্থাই গড়ে ওঠেনি। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনী বিধির কারণে কিছু বলা যাবে না।’’ বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত অবশ্য জানান, পরিবহণের বিষয়টি পুরসভার এক্তিয়ারভুক্ত নয়। তবে রাজ্য প্রশাসনের কাছে পুরসভার তরফে আলোচনা হতে পারে।

যদিও বিধাননগর পুর-নিগম সূত্রে খবর, বছর তিনেক আগে তৃণমূল পরিচালিত বিধাননগর পুরসভার তরফে সল্টলেকের পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্য পরিবহণ দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। কিছু প্রস্তাবও রাখা হয়। তার প্রেক্ষিতে সল্টলেকে কিছু পুরনো বাস রুটের পাশাপাশি নতুন রুটও চালু করা হয়েছে। একাধিক বাস-রুট চালু হয়েছে রাজারহাট-নিউ টাউন থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টর হয়ে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসে। অথচ এই সব রাস্তার পাশেই থাকা বিধাননগরের ২৮, ৩৫ ও ৩৬—এই তিনটি ওয়ার্ড পরিবহণ ব্যবস্থা থেকে কার্যত বঞ্চিত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, ওই এলাকায় সর্বত্র বাস চলাচলের মতো রাস্তা নেই। তবে কিছু দূরত্ব পর্যন্ত বাস চালু করা নিয়ে প্রস্তাব এলেও নিশ্চিত ভাবেই বিবেচনা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mahishbathan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE