Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Trafficking

Trafficking: নিখোঁজ দুই কিশোর ফিরলেও আশঙ্কা পাচার-যোগের

বাঁকুড়ার গ্রামের বাড়ি থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়া দুই স্কুলপড়ুয়ার খোঁজ মিলল বুধবার, কলকাতার শ্যামবাজারে। বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২২ ০৬:২৬
Share: Save:

বাঁকুড়ার গ্রামের বাড়ি থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়া দুই স্কুলপড়ুয়ার খোঁজ মিলল বুধবার, কলকাতার শ্যামবাজারে। দুই কিশোরের বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। ঘটনায় পাচার-চক্রের যোগের আশঙ্কাও ঘুরপাক খাচ্ছে।

দুই কিশোর জানিয়েছিল, পড়াশোনা করতে ভাল লাগে না। কলকাতা ঘুরে দেখতে এবং কোনও কাজ নিয়ে বাড়ি থেকে দূরে থাকার ইচ্ছেতেই ঘর ছেড়েছিল তারা। তদন্তে জানা গিয়েছে, এই কাজে তাদের সাহায্যের আশ্বাস দেয় দুই ব্যক্তি। রহস্য ঘনিয়েছে একটি ফোন নম্বর নিয়েও।

পুলিশ সূত্রের খবর, দুই কিশোরের বাড়ি বাঁকুড়ার জয়পুর থানার একটি গ্রামে। স্থানীয় স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ওই দু’জন গত সোমবার ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। খোঁজ শুরু করে জয়পুর থানা, লালবাজার এবং ভবানী ভবনের মিসিং পার্সনস বুরো। উদ্ধারের পরে তাদের দাবি, বাড়িতে ট্রাক্টরের দামের কিস্তি বাবদ ১০ হাজার টাকা তুলে রাখা ছিল। সেই টাকা নিয়েই পালিয়ে আসে তারা। ময়নাপুর থেকে আরামবাগের বাসে ওঠে। সেখান থেকে ট্রেনে হাওড়া পৌঁছয়। দুপুরে হাওড়ার একটি ঘাটে স্নান করতে নামে।দুই কিশোরের দাবি, সেখানেই তাদের সঙ্গে পরিচয় হয় দুই ব্যক্তির। তাদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় তারা। সে জন্য একটি ফোন নম্বর দিয়ে পরদিন ট্রেন ধরে ধানবাদে যেতে বলে ওই দুই পড়ুয়াকে।

দুই কিশোরের দাবি, রাতে তাদের পরিচয় হয় কয়েক জন যুবকের সঙ্গে। তারা দুই কিশোরকে তাদের ডেরায় নিয়ে যায়। অভিযোগ, সেখানে ওই দুই পড়ুয়াকে মারধর করে মোবাইল ফোন এবং সঙ্গে থাকা চার হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় যুবকেরা। কোনও রকমে পালায় দুই কিশোর। পরদিন শিয়ালদহ থেকে ট্রেন ধরে ধানবাদে আসে তারা।

জিজ্ঞাসাবাদে দুই কিশোর জানিয়েছে, যে ১০ হাজার টাকা নিয়ে তারা বেরিয়েছিল, তার পুরোটা শেষ হলেও অন্য জনের কাছে তখনও কয়েকশো টাকা ছিল। তা দিয়েই কোনও রকমে ধানবাদের একটি টিকিট হয়। তাদের দাবি, ধানবাদে পৌঁছে বার বার ফোন করলেও কাজের আশ্বাস দেওয়া দুই ব্যক্তি আসেনি। ধানবাদের এক মহিলাই তাদের খাওয়ান এবং কলকাতা ফেরার ট্রেনে তুলে দেন। কলকাতা স্টেশনে নেমে ওই দুই কিশোর নিজেরাই জিআরপি-তে গিয়ে জানায়, খন্নায় তাদের এক আত্মীয়ের দোকান রয়েছে। জিআরপি তখন ট্র্যাফিক পুলিশের মাধ্যমে তাদের সেখানে পৌঁছে দেয়। ট্র্যাফিক পুলিশ লালবাজারে দুই কিশোর নিখোঁজের ঘটনা নথিভুক্ত করলে বিষয়টি নজরে আসে।

যদিও ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন রয়েছে। ১) নিখোঁজ দুই কিশোরের এক জনের মোবাইলের ‘কল রেকর্ড’ ঘেঁটে পুলিশ জেনেছিল, দু’মাস ধরে তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল এক জনের। এমনকি, বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে শেষ ফোনটিও তাকেই করেছিল কিশোর। নম্বরটি কার? ২) তারা ১০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিবলে জানিয়েছে। হাওড়া স্টেশনের ওই যুবকের দল তাদের থেকে চার হাজার টাকা আর মোবাইল ছিনিয়ে নেয় বলা হচ্ছে। তা হলে বাকি টাকা গেল কোথায়? তদন্তকারীদের সন্দেহ বাড়াচ্ছে অন্য কিশোরের নীরবতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trafficking boy missing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE